সোমবার জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে ‘আমরা তিনজন’

গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে আগামীকাল সোমবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে আমরা তিনজন। বুদ্ধদেব বসুর গল্প অবলম্বনে নির্মিত নাটকটি নির্দেশনায় আছেন লিয়াকত আলী লাকী।

নাটকের কাহিনী সম্পর্কে জানা যায়, ১৯২৭ সালের ঢাকার পুরানা পল্টন। বিকাশ, অসিত এবং হিতাংশু তিন বন্ধু। দিনের বেশিরভাগ সময় তিন বন্ধু একসঙ্গে থাকে, যতটা এবং যতক্ষণ থাকা সম্ভব। তিন বন্ধু একে অপরের প্রেমে পড়ে আবার তিনজনই একসঙ্গে অন্য একজনের প্রেমে পড়ে, নাম তার- অন্তরা, বাড়ির সবাই ডাকে তরু বলে, তবে তিন বন্ধুর কাছে মেয়েটির নাম হয়ে যায় ‘মোনালিসা’।

একদিন কাকতালীয়ভাবে রাস্তায় তাদের সাথে দেখা হয় মোনালিসা ও তার বাবা-মার। মোনালিসার বাবা দে সাহেব তাদেরকে বাসায় আমন্ত্রণ জানায়। বৃষ্টিমুখর একটিদিনে তারা মোনালিসার বাড়ি যায় কিন্তু মোনালিসার সাথে তেমন কোন কথা হয় না। এরমধ্যেই মোনালিসা টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়, তিনবন্ধুর ভীষণ মন খারাপ। মোনালিসার বাবা-মা তাদের সহায়তা চাইলে দিনরাত প্রায় এক মাস পরিশ্রম করে তারা মোনালিসাকে সুস্থ করে তোলে। মেয়েটির সাথে তাদের একটি আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হয়।

তারপর একদিন মোনালিসা ভালো হলো এবং চলে যায় রাঁচি। ঠিকানা রাখেনি বলে তিন বন্ধুর খুবই মন খারাপ হয়। তবে যেদিন ওরা ফিরল, সেদিন স্টেশনে কচি কলাপাতা রঙের শাড়ি আর লালচে মুখাবয়বের মোনালিসাকে দেখে তিন বন্ধু মুগ্ধ হয়। ট্রেনের মধ্যে মোনালিসার সেকি গল্প, দেখতে দেখতে তিন বন্ধু চারজন হয়ে উঠলো।

হঠাৎ একদিন মোনালিসার মা তাদেরকে ডেকে জানায় মোনালিসার বিয়ের সংবাদ। খবরটি শুনে তিন বন্ধু হতভম্ব হয়ে যায়। বিয়ের পর মোনালিসা চলে যায় কলকাতা। একদিন হঠাৎ জানা গেলো মোনালিসা ঢাকায় আসছে এবং সে অন্তসত্ত্বা। তিন বন্ধু মোনালিসাকে ঘিরে থাকে সবসময়। ও যাতে ভালো থাকে, কখনো মন খারাপ না করে, সেই চেষ্টাতেই দিন কাটে তিন বন্ধুর।

এক অমাবশ্যার রাতে প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকে মোনালিসা। মোনালিসার চাপা কান্না তিন বন্ধুর বুক বিদীর্ণ করে দেয়। শীতের রাতে, মাঠের মধ্যে, না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, অদৃষ্টের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তিন বন্ধু রুদ্ধশ্বাসে প্রতীক্ষা করতে থাকে।

ভোরের প্রথম ছাইরঙা আলোয় ওরা দেখতে পায় দে সাহেবের বেদনার্ত নির্বাক মুখ। রাশি রাশি ফুল আরও কত কিছু দিয়ে সাজানো হলো মোনালিসার শবদেহ। তারপর মোনালিসার অন্তিমযাত্রা।

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন বিকাশ (প্রবীণ)-লিয়াকত আলী লাকী, বিকাশ-মাস্উদ সুমন, অসিত-ফজলুল হক, হিতাংশু-অঙ্কিত বিপুল, অন্তরা-অনন্যা নীশি, দে সাহেব-স্বদেশ রঞ্জন দাসগুপ্ত, সুমি-সোনিয়া আক্তার, হীরেনবাবু-জুলফিকার আলী বাবু, ভৃত্য-শিশির কুমার রায়, গাড়োয়ান-আলী আজম, ডাক্তার-অঙ্কিত বিপুল।

নাটকের নেপথ্যে যারা কাজ করেছেন তারা হলেন-

মঞ্চ ব্যবস্থাপনা : অঙ্কিত বিপুল

সহকারী : শিশির কুমার রায়

আলোক পরিকল্পনা : নাসিরুল হক খোকন

সহযোগী : সুজন মাহাবুব, বজলুর রহমান

সেট : সুজন মাহাবুব

পোষাক পরিকল্পনা : মেহেজাবীন মুমু

প্রপ্স : অঙ্কিত বিপুল

আবহ সঙ্গীত : ইমামুর রশীদ

পোস্টার ডিজাইন : আনিসুজ্জামান সোহেল

মেকাপ : শুভাশিষ দত্ত তন্ময়

মঞ্চ ও সঙ্গীত পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা : লিয়াকত আলী লাকী

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //