‘আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশে ফিরেছি’

অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। দর্শকপ্রিয় এ অভিনেত্রী ঘুরে এলেন ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে। একক প্রচেষ্টায় উৎসবে গিয়ে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি। সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে সে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিলেন তিনি। আলাপচারিতায় ছিলেন মোহাম্মদ তারেক।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে যাওয়ার ভাবনা কী করে এলো?

সব সময় কান চলচ্চিত্র উৎসবে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। আমি বাংলাদেশের একজন অভিনেত্রী হিসেবে উৎসবে অংশগ্রহণ করতে চাই জানিয়ে মেইল করেছিলাম। সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হয়েছিল। তারপর যাচাই-বাছাই করে তারা আমাকে আমন্ত্রণপত্র পাঠায়। বলতে গেলে নিজের যোগ্যতায় গিয়েছি। কান উৎসবে যাওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করে। সবাইকে তারা ইনভাইটেশন কার্ড পাঠায় না। অভিনয়শিল্পী হিসেবে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি। 

বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ এ আসরে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা শুনতে চাই...

অপূর্ব অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় যতটুকু সম্ভব শেয়ার করেছি। কারও বুঝতে বাকি নেই কতটা চমৎকার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। নেটওয়ার্কিং করেছি বিভিন্ন মানুষজনের সঙ্গে মিটিং করে। সম্পূর্ণ একা অংশগ্রহণ করেছি। এর আগে এভাবে একা কোথাও যাইনি। শো-তে গেলে সহশিল্পীরা থাকে। আয়োজকরা সব ব্যবস্থা করে। আর কান উৎসবে এমন কেউ ছিল না। সব নিজেকেই করতে হয়েছে। কোন পোশাক পরে বের হব তা নিজে ঠিক করতে হয়েছে। মেকআপ নিজে নিয়েছি। দেশে অনেক সাহায্যকারী থাকে। ওখানে ছিল না। ইন্টারনেট ঘেঁটে কী মুভি দেখব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশে এসেছি। 

আপনি লালগালিচায় হেঁটেছেন কাকের থিমের পোশাক পরে। এরপর মায়ের জামদানি শাড়িতেও ছিলেন মনোমুগ্ধকর। কেমন ছিল সে অভিজ্ঞতা?

আমি লন্ডনে গ্র্যাজুয়েশন করার সময় জামদানি শাড়ি পরেছিলাম। দেশের বাইরে গেলে সব সময় চেষ্টা করি প্রিয় শাড়ি, প্রিয় পাখি অর্থাৎ দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে। কানেও তা করেছি। কাকের প্রতি সব সময় ভালোবাসা কাজ করে। এ পাখির সঙ্গে আমার নিবিড় সম্পর্ক। ডিজাইনার তানভীর সৌরভ বলেছিল এ থিমে কিছু পরতে। তার ভাবনার সঙ্গে আমার চিন্তা মিলে যায়। সে কিছু স্কেচ পাঠায়। ওখান থেকে একটি পছন্দ হয় যেটি পরেছি। আমি যেখানে থাকতাম ওখান থেকে মাত্র তিন মিনিটের দূরত্ব ভেন্যুর। আমি যা-ই পরে উৎসবে ঢুকেছি সবাই প্রশংসা করেছে। বেনারসি দিয়ে যে গাউন বানানো যায় তা হয়তো অনেকে ভাবতে পারেননি। প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষ বলেছে আমার মুখের আদল সুন্দর। আনন্দবাজার পত্রিকা ও টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের নজর কাড়তে পেরেছি। আমি ওখানে কাজ নিয়ে যাইনি। কিন্তু কাজ নিয়ে এসেছি। পজিটিভ ভাইব নিয়ে দেশে ফিরেছি। 

নতুন একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ‘কান’-এ গিয়ে। সে প্রসঙ্গে জানতে চাচ্ছি...

আমি ছবির কোনো পরিকল্পনা নিয়ে উৎসবে যাইনি। জাফর ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় ছিল। ওখানে গিয়ে দেখা। তিনি মালয়েশিয়াতে কাজ করেন। আমার জন্য ‘জেনুবিয়া’ অন্যরকম অভিজ্ঞতা হবে। 

চাইনিজ-জাপানিজ ক্রু থাকবে। চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ হতে যাচ্ছে। বাংলায় কথা বলার মানুষজন তেমন থাকবে না।

অন্যান্য কাজের কী খবর?

এ বছর আব্বুর (হাবিবুল ইসলাম হাবিব) ছবি ‘যাপিত জীবন’ মুক্তি পাবে। ‘চারুলতা’ ছবির শুটিং শেষ হবে। ‘পায়েল’ ছবির ডাবিং বাকি আছে। ‘দামপাড়া’ শিগগির মুক্তি পাবে। দেশে ফেরার পর অনেকেই কাজের কথা বলছে। আমার মাঝে তাড়াহুড়ো নেই। আমি একদম প্রথম দিন থেকে ভালো অভিনেত্রী হতে চেয়েছি। এ জন্য অনেক ছাড় দিয়েছি। আমার স্ট্রাগল অন্যদের মতো না। চাইলেই অনেক টাকা নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতে পারি। আমি সে রেসে নেই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //