আইনি প্যাঁচে পরীমনি

আবারও আইনি প্যাঁচে পড়ছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। তার বিরুদ্ধে ঢাকার ভাটারা থানায় অভিযোগ করেছেন গৃহকর্মী পিংকি আক্তার। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) এই অভিযোগ করেন তিনি।

ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “পরীমনির বাসার এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ওই গৃহকর্মী থানায় একটি অভিযোগ করেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের একজন কর্মকর্তা এরইমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে লিখিত অভিযোগটি জিডি অথবা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জানা যায়, পরীমণির এক বছরের মেয়ে সন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গৃহকর্মীকে মারধর করেন নায়িকা।

নির্যাতনের কথা তুলে ধরে গৃহকর্মী পিংকি আক্তার বলেন, ‘‘আমার দায়িত্ব ছিল পরীমনির এক বছর বয়সী মেয়ের দেখাশোনা করা এবং তাকে খাবার খাওয়ানো। ওনার বাচ্চাকে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর খাওয়ানোর নিয়ম। আমি সেটা মেনে প্রতিদিন বাচ্চাকে দুই ঘণ্টা পরপর খাবার খাওয়াই। তবে আমাকে বাচ্চার দেখাশোনার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও, বাসার অন্যান্য কাজও করানো হতো।”

গত ২ এপ্রিল আমি বাসায় তার বাচ্চাটিকে বসিয়ে বাজারের লিস্ট করছিলাম—কী কী লাগবে। এ সময় বাচ্চাটা কান্না শুরু করে। এরমধ্যে কান্না শুনে সৌরভ নামে এক ব্যক্তি, যিনি পরীমনির পরিচিত এবং মাঝেমধ্যেই তার বাসায় আসেন, আমাকে বললেন, “বাচ্চাটাকে একটু সলিড খাবার দাও।” 

তখন আমি সৌরভ ভাইকে বললাম, “ভাই, বাচ্চাটা কিছুক্ষণ আগে সলিড খাবার খেয়েছে; দুই ঘণ্টা হয়নি এখনো। আমি একটু কাজ করি, তারপর তাকে দুধ খাওয়াই।”

এরই মধ্যে পরীমনি মেকআপ রুম থেকে বের হয়ে আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন—আমি কেন বাচ্চার জন্য দুধ নিয়েছি। আমি তখন তাকে বললাম, “যেহেতু সলিড খাবার দেওয়ার সময় এখনো হয়নি, তাই আমি দুধ নিয়েছি।”


তখন পরীমনি আমাকে গালি দিয়ে বলেন, “বাচ্চাটা কি তোর না আমার?” এরপরই তিনি আমাকে ক্রমাগত থাপ্পড় দিতে থাকেন এবং মাথায় জোরে জোরে আঘাত করতে থাকেন। তার মারধরে আমি তিনবার ফ্লোরে পড়ে যাই। এরপর তিনি আমার বাম চোখে অনেক জোরে একটি থাপ্পড় মারেন। এই থাপ্পড়ের কারণে আমি এখনো বাম চোখে কিছু দেখতে পাই না।

ভয়ংকর এই মারধরের পর আমি জোরে জোরে কান্না করতে থাকি এবং তাকে বলি, আমি আর পারছি না, আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, “তুই এখান থেকে কোথাও যেতে পারবি না। তোকে এখানেই মারবো এবং এখানেই চিকিৎসা করবো।”

পিংকি আক্তার অভিযোগ করে আরও বলেন, “প্রায় এক ঘণ্টা পর আমার জ্ঞান ফেরে। তখন বাসার আরেকজন গৃহকর্মী, বৃষ্টিকে আমি বলি, আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। তখন বৃষ্টি আমাকে বলেন, পরীমনি ঘুমিয়েছেন, তাকে এখন ডিস্টার্ব করা যাবে না।”

গৃহকর্মীর ভাষ্য, “পরে কোনো উপায় না দেখে আমি বাধ্য হয়ে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করি এবং পুলিশকে জানাই যেন তারা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ আমাকে ডেকেছে। আমি এখন থানায় যাচ্ছি।”

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh