শখের কুর্তি বানিয়ে উদ্যোক্তা লায়লা

উদ্যোক্তা হয়ে জীবনে এক নতুন পথের সন্ধান খুঁজে পেয়েছেন লায়লা নূর মুক্তি। ‘নীলাম্বরী’ নামে একটি ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ক্রেতাদের সব সময় ভালো পণ্য দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ব্যবসায় করে যাচ্ছে উদ্যোক্তা লায়লা। লক্ষ্য তার একটাই, আধুনিকতা, নান্দনিক ডিজাইন আর আরামদায়কভাবে পোশাক তৈরি যা সাধারণের সাধ্য ও সাদের মধ্যে থাকবে। সেই ধারাবাহিকতায় দক্ষ কারিগরের মাধ্যমে বাজারে আনছেন মোলায়েম কাপড়ের কুর্তি কামিজ। বিশেষ করে রোদ-গরম আর বর্ষা-বাদলের দিনে কুর্তি কামিজের আবেদন ভিন্ন। 

উদ্যোক্তা লায়লা ইউনিভার্স ট‍্যুর ও ম‍েডিক‍্যাল ট‍্যুরিজমের উদ্দেশ্যে প্রায়ই কলকাতা ও ইন্ডিয়ার বিভিন্ন অংগরাজ‍্যে ঘুরেছেন রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য। সেই সুবাদেই তার নজর কাড়ে স্কুল, কলেজ বা অফিসগামী মেয়েদের সহজলভ্য পোষক কুর্তি। আর এই বিদেশি ডিজাইনের আরামদায়ক কুর্তি যেন দেশেও পাওয়া যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন এই উদ্যোক্তা।  


লায়লা নূর মুক্তি গল্পের শুরুতে সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে আমি চাকরিতে জড়িত হই। কাজের জন্য আমাকে দেশের বাহিরে থাকতে হতো। আমি একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কান্ট্রি ম্যানেজার পদে ছিলাম। ২০১৫ সালে আমার একটি অপারেশন হয়। এর পর মায়ের কথায় চাকরি ছেড়ে ট‍্যুরিজম ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু করোনার সময় ট‍্যুরিজম ব্যবসায় বেশ ধস নামে। আমি প্রায় ঘর বন্দি হয়ে পরি যা একটা সময় আমাকে বেশ হতাশাগ্রস্ত করে তোলে। এই সময় আমার এক বন্ধু যিনি পেশায় একজন ইনকামটেক্স কনসালটেন্ট এবং কোলকাতার ভবানীপুর নিবাসী তাপস মিত্র আমাকে উৎসাহিত করেন বুটিক নিয়ে কাজ করতে। তার উপদেশে আমার কাজিন নুরুদ্দীন বাবুল ভাই আমার বোন আসমা নূর ও আফিয়া নূরের সহযোগিতায় মায়ের দেয়া ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু ৭ জানুয়ারি ২০২১ সালে উইম্যান্স ভলেন্টারি এসোসিয়েশনে বেঙ্গল সিস্টারহুড কনসোর্টিয়াম আয়োজিত উদ্যোক্তা হাট বাসন্তী মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। মেলায় মূল পণ্য ছিলো মেয়েদের ওয়ানপিস ও কুর্তি। এর আগে আমি অনলাইনে উদ্যোগ শুরু করি। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এগিয়ে চলেছি উদ্যোক্তা জীবনের পথ।’


লায়লা বলেন, ‘অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় কর্মজীবন আমার। যেহেতু আমি ভিন্ন ডিজাইনের মেয়েদের কুর্তি ও ননস্টিচ ওয়ানপিস খুব পছন্দ করি এবং তরুণীরাও সিঙ্গেল কামিজ বা কুর্তিতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং এই পোশাকটিকে একেবারে বিদেশি বলা চলে না। তাই সেই পণ্য নিয়ে কাজ করে চলেছি। যদিও কর্মী বলতে আমি নিজে, সাথে আমার ছোট বোন ও পাড়ার একজন দর্জি নিয়ে আপাতত ঢাকার মধ্যেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।’ 

তিনি অরো জানান, কুর্তি নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য হলো এই পোশাকগুলো খুব সহজলভ্য। নীলাম্বরী তৈরী কুর্তি ও অন্যান্য পোশাক নিয়ে নিজস্ব একটা ব্র্যান্ড করার লক্ষ্য আছে যার সিংহভাগ কর্মী হবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। 

তরুণ-তরুণীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘হতাশ হবেন না। যদি পঞ্চাশের কোটায় দাঁড়িয়ে আমি এমন একটা ভাবনা ভাবতে পারি তবে আপনারা কেন পারবেন না। আমার দেশকে বেকারত্বের বোঝা থেকে মুক্তি দিতে আসুন সবাই চাকরির প্রত্যাশা না করে উদ্যোক্তা হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করি ও অন্যদের কর্মসংস্থান তৈরী করি।’  

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //