চাঁদপুরে রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জসীমউদ্দীন

চাঁদপুরে সাহিত্যচর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। মধ্যযুগ থেকে এ জনপদের মানুষ শিল্প-সাহিত্যে ভূমিকা রাখছে। ষোড়শ শতাব্দীর কবি দোনাগাজী থেকে এ যাত্রা শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন, শান্তিদেব ঘোষ, চিত্রনিভা চৌধুরী, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, হাশেম খান, মনিরুল ইসলাম, শান্তনু কায়সার প্রমুখ এ যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। নানাভাবে নানা কারণে এ জনপদে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ বসু, কাজী নজরুল ইসলাম, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষ। তাঁদের পদস্পর্শে গর্বিত জেলাবাসী। বাঙালির বাতিঘর রবীন্দ্রনাথ। ১৯২৬ সালে কবি পূর্ববঙ্গ ভ্রমণ করেন। এ সময় তিনি রাজশাহী, পাবনা, সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জে আসেন। রবীন্দ্রনাথ কুমিল্লা এসে পৌঁছেন ১৯২৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেখানে চারদিন থাকার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি কবি আগরতলা ত্যাগ করেন। রবীন্দ্রনাথ এদিনই ট্রেনযোগে চাঁদপুর এসে পৌঁছেন। দিনটি ছিল শুক্রবার। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথ, প্রতিমা দেবী, কন্যা নন্দিনী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কালীমোহন ঘোষ ও মি. মরিস।

রবীন্দ্রনাথ চাঁদপুরে দীর্ঘক্ষণ ছিলেন না। রবীন্দ্র-জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, ‘আগরতলা হইতে ফিরিবার পথে রবীন্দ্রনাথকে কিয়ৎকালের জন্য চাঁদপুরে থাকিতে হয়।’ অল্প সময় হলেও চাঁদপুরবাসী তাঁকে সম্মান জানাতে কোনোরূপ ত্রুটি করেনি। চাঁদপুরের বিশিষ্টজন ও সাধারণ মানুষ কবিকে দেখতে ও তাঁর কথা শুনতে ভিড় জমান। রবীন্দ্রনাথ প্রথমে শহরের কালীবাড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছেন। এ সময় শহরের বিশিষ্টজন তাঁকে বরণ করেন। গবেষক গোপালচন্দ্র রায় ‘ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘চাঁদপুরের আগে কালীবাড়ি স্টেশনে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি ট্রেনে কবিকে অভ্যর্থনা জানান। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ও একই কথা জানিয়েছেন। 

তিনি লিখেছেন, ‘শহরের বহু গণ্যমান্য লোক রবীন্দ্রনাথের সাদর অভ্যর্থনার জন্য স্টেশনে উপস্থিত হন।’ স্টেশনে অভ্যর্থনা জানানোর পর চাঁদপুরবাসীর পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনা জানানো হয়। শহরের নীরদ পার্কে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল। 

প্রভাতকুমার জানান, ‘নীরদ-পার্কে তাঁহার সংবর্ধনা হয়; জাতিনির্বিশেষ বহু নরনারী রবীন্দ্রনাথের দর্শনমানসে উপস্থিত হইয়াছিল।’ রবীন্দ্রনাথ এ সময় বক্তব্য রাখেন। তিনি বাংলার পল্লীগুলোকে রক্ষা করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আজ এই গুরুতর সমস্যা’। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চাঁদপুর-আগমনের সংবাদটি ১৯২৬ সালের ২ মার্চ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এ সংবাদে বলা হয়, চাঁদপুরবাসীর অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ কিছুক্ষণের জন্যে চাঁদপুর অবস্থান করেছিলেন। তিনি ট্রেন থেকে নেমে খ্যাতনামা উকিল ভগবান চন্দ্র মজুমদারের অট্টালিকায় বিশ্রাম ও জলযোগ করেন। পরে পত্র-পুষ্পে শোভিত নিরোদপার্কে নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা করেন। তিনি বক্তব্যে ‘বুভুক্ষিত ভিখারীকে মুষ্টিমেয় অন্নদান, মৃত্যুমুখ রোগীর পরিচর্যা, অভাবগ্রস্ত ব্যক্তির সহায়তা প্রভৃতি দেশহিতকর কার্যে ব্রতী হইয়া ধ্বংস-উন্মুখ পল্লীগ্রামগুলোকে রক্ষা করাই প্রকৃত দেশের সেবা করা’ বলে বিবৃত করেছেন। সংবাদে বলা হয়, রবীন্দ্রনাথ শনিবার ভোরে স্টিমারে করে চাঁদপুর ত্যাগ করেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ যেসকল বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার সবকটি সংরক্ষিত হলেও চাঁদপুরের বক্তব্যটি কোথাও অনুলিখন বা রক্ষিত হয়নি। রবীন্দ্রনাথ ২৭ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর থেকে স্টিমারযোগে নারায়ণগঞ্জ যান।

দুই.

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম চাঁদপুরে এসেছেন একাধিকবার। যদিও চাঁদপুর তাঁর গন্তব্য ছিল না। তিনি কলকাতা, কুমিল্লা কিংবা তেওতা যাওয়ার পথে চাঁদপুরে এসেছিলেন। একবার অর্থাভাবে পড়ে রাত্রিযাপন করেছেন চাঁদপুরের ডাকবাংলোয়। কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২১ সালের ১৭ জুন কুমিল্লায় নার্গিস আসার খানমকে বিয়ে করেন; কিন্তু বিয়ের পর এ সংক্রান্ত জটিলতায় তাঁর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ততদিনে নজরুল নিজের ভুল ধরতে পেরেছিলেন; কিন্তু জাল ছিন্ন করতে পারেননি। মুজফ্ফর আহমদ জানিয়েছেন, নজরুল ইসলাম নার্গিসদের বাড়িতে বন্দির মতো ছিলেন। আর এ সবকিছুর পেছনে দায়ী ছিলেন আলী আকবর খান। তিনি নজরুলকে কেবল প্রতারিতই করেননি, অপমানিতও করেছেন। পরবর্তীতে মুজফ্ফর আহমদ নজরুলের চিঠি পেয়ে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যেতে কুমিল্লা আসেন। তাঁরা ১৯২১ সালের ৮ জুলাই কুমিল্লা থেকে ট্রেনে করে চাঁদপুর এসে পৌঁছেন; কিন্তু কলকাতায় যাবার জন্য তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। ‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা’ গ্রন্থে মুজফ্ফর আহমদ লিখেছেন : ‘কুমিল্লা স্টেশনেও থার্ড কিংবা ইন্টার ক্লাসে চড়া কিছুতেই সম্ভব হলো না। চাঁদপুর পর্যন্ত আমাদের ফাস্ট ক্লাসে যেতে হলো। চাঁদপুর পৌঁছে দেখলাম স্টীমার চলে গেছে। হিসাব করে দেখলাম আমাদের টাকাও কম পড়ে যাবে। সেই রাত্রে আমরা চাঁদপুর ডাক বাংলোয় চলে গেলাম।’

নজরুল পরিক্রমা গ্রন্থে গবেষক আবদুল আজীজ আল্-আমান এ ঘটনাটির উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন : ‘কবিকে (নজরুলকে) নিয়ে কুমিল্লা থেকে ফেরার পথে চাঁদপুরে এসে আহমদ (মুজফ্ফর আহমদ) সাহেব দেখলেন যে টাকার অঙ্ক কমে এসেছে। ওঁরা চাঁদপুরের ডাক বাংলায় আশ্রয় নিয়ে টাকা পাঠাবার জন্যে কলকাতায় জনাব আফজালুল হক সাহেবকে টেলিগ্রাম করেন।’

অর্থসংস্থানের জন্যে মুজফ্ফর আহমদ ৮ জুলাই রাত্রে বা পরেরদিন ৯ জুলাই ভোরে কলকাতায় আফ্জালুল হককে টেলিগ্রাম করেন। আফজালুল হক যখন টেলিগ্রাম পেলেন তখন সেখানে কুমিল্লার আশরাফ উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। মুজফ্ফর আহমদ লিখেছেন :

‘ভাগ্য ভালো যে তখন কুমিল্লার আর্শাফ উদ্দীন আহমদ চৌধুরী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ চাঁদপুরের শ্রীযুক্ত হরদয়াল নাগকে টেলিগ্রাম করলেন যে ডাক বাংলোয় নজরুল ইসলাম ও মুজফ্ফর আহমদ রয়েছেন। তাদের দয়া করে বারোটি টাকা পৌঁছিয়ে দিন। নাগ মহাশয়ের তরফ হতে শ্রীকুলচন্দ্র সিংহ রায় এসে আমাদের বারোটি টাকা দিয়ে গেলেন।’

টাকা পেয়ে নজরুল ইসলাম ও মুজফ্ফর আহমদের সমস্যার সমাধান হলো। তাঁরা স্টিমারে করে কলকাতা রওনা দিলেন।

মিয়াজান কবীরের লেখা ‘মানিকগঞ্জে নজরুল’ গ্রন্থসূত্রে জানা যায়, নজরুল ১৯২২ সালেও চাঁদপুর এসেছিলেন। তিনি বীরেন্দ্র সেনগুপ্তের সঙ্গে প্রমীলার গ্রামের বাড়ি তেওতা যাচ্ছিলেন। তিনি কুমিল্লা থেকে ট্রেনে প্রথমে চাঁদপুর আসেন। এরপর চাঁদপুর থেকে স্টিমারে করে গোয়ালন্দ হয়ে তেওতা গ্রামে পৌঁছেন। 

কাজী নজরুল ইসলামের রচনাতেও চাঁদপুরের প্রসঙ্গ রয়েছে। তাঁর ছোটগল্প ‘হারা ছেলের চিঠি’তে তিনি লিখেছেন : ‘চাঁদপুরে যখন রেলে চড়লাম, তখন সন্ধ্যা বেশ ঘনিয়ে এসেছে। ট্রেন চলতে লাগল। আমি কেমন যেন উন্মনা হয়ে পড়লাম। অলস উদাস চোখে আমার শুধু এইটুকু ধরা পড়ছিল যে, ভীষণ বেগে উল্টোদিকে ছুটে যাচ্ছে-আঁধার রাতের আঁধারতর গাছপালাগুলো। চলন্ত ট্রেনের ছায়াটা দেখে মনে হচ্ছিল, যেন একটা বিরাট বিপুল কেন্নো ছুটে যাচ্ছে।’

কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে চাঁদপুরের সন্তান সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের গভীর ছিল সম্পর্ক। নজরুল সওগাতে কাজ করেছেন। অন্যদিকে নাসিরউদ্দীন ছিলেন তাঁর অভিভাবকস্বরূপ। কবির প্রতিষ্ঠার পেছনে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। নজরুল ইসলাম নাসিরউদ্দীন-কন্যা বেগম সম্পাদক নূরজাহান বেগমকে স্নেহ করতেন। বেগমের জন্য তিনি বেনামে লেখা লিখতেন। 

তিন.

বাঙালির শেকড়-সংলগ্ন কবি জসিমউদ্দীন জীবতাবস্থাতেই বিপুল খ্যাতিমান ছিলেন। বরেণ্য এ কবি চাঁদপুরে এসেছিলেন ১৯৫৩/১৯৫৪ সালে; কিন্তু কোনো সাহিত্যানুষ্ঠানে নয়। এসেছেন সমাজ-সংস্কারমূলক একটি আয়োজনে। এ আয়োজনের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন লেখক আবদুস সাত্তার। তিনি লিখেছেন : 

“১৯৫৩ বা ১৯৫৪ সালের ঘটনা। বেদে সমাজ ‘জাতে ওঠার’ জন্য আন্দোলন শুরু করেছে। জাতে ওঠা বলছি এই কারণে যে, সমাজে তারা অবজ্ঞেয়। মুসলমান হলেও এবং হাজার শিক্ষিত হলেও উচ্চতর মুসলমানদের সঙ্গে বিয়ে সাদী এমনকি সমাজ জামাতের বিভেদের জন্য ওঠা-বসা হয় না। এই বৈষম্য দূর করার জন্য হাজীগঞ্জের আলেম সমাজ এক মহতী সভার আয়োজন করেছেন এবং সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে চাঁদপুরে।’

এ সভার প্রধান অতিথি করা হয় পল্লী-দরদি মানুষ জসীমউদ্দীনকে। চাঁদপুরে তাঁর আগমনের বর্ণনা আবদুস সাত্তার দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন :

“কবিকে রিসিভ করার জন্য স্টীমার ঘাটে অজস্র লোকের সমাগম এবং অধিকাংশই টুপিধারী আলেম সমাজ। বেদে নেতৃবর্গ এবং অন্যান্য সবার হাতে নিশান এবং মুহুর্মুহু ধ্বনি উঠছে : ‘পল্লী কবি জসীমউদ্দীন জিন্দাবাদ’, ‘বেদে সাপুড়ের কবি জিন্দাবাদ’।...স্টিমার থেকে কবিকে নামিয়ে আনা হলো ডাক বাংলোয়।”

বেদেদের নিয়ে সভার আয়োজন শহরজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। মাইকে ঘোষণা করা হয় : ‘বেদে সমাজ চিরদিন অবজ্ঞেয়। মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই, এ কথা যদি সত্য হয় তবে বেদে সমাজ সকল মুসলমানের ভাই হতে পারবে না কেন?’ কবির বক্তৃতা শুনে উপস্থিত সবাই মুগ্ধ হয়েছিলেন। সভাশেষে কবি বেদেদের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জসীমউদ্দীনের আগমন চাঁদপুরের মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে গৌরবের ঘটনা। বর্তমান প্রজন্মও এ গৌরবকে ধারণ করে।

তথ্যসূত্র : 

১. রবীন্দ্রজীবনী (২য় খণ্ড), প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ

২. রবীন্দ্র-অভিভাষণ, পূর্ববঙ্গ ও অন্যত্র, প্রকাশক বাংলা একাডেমি

৩. সাময়িকপত্রে রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ, মোহাম্মদ আবদুল কাইউম

৪. রবীন্দ্রনাথ : সমকাল পত্রিকায়, মূর্ধণ্য প্রকাশনী

৫. বিস্মৃতির চাঁদপুর, কাদের পলাশ ও মুহাম্মদ ফরিদ হাসান সম্পাদিত, চৈতন্য প্রকাশন ২০২০

৬. কৃতজ্ঞতা : ভূঁইয়া ইকবাল, বিশিষ্ট রবীন্দ্রগবেষক

৭. কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা, মুজফ্ফর আহ্মদ; প্রথম প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ১৯৬৫, পৃষ্ঠা ১৩৫

৮. নজরুল পরিক্রমা, আবদুল আজীজ আল্-আমান, হরফ প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ ২৫ মে ১৯৫৩

৯. মানিকগঞ্জে নজরুল, মিয়াজান কবীর, ধ্রুবপদ প্রকাশনী, প্রথম প্রকাশ ২০১৮

১০. নজরুলসমগ্র, পৃষ্ঠা ২২৪

১১. সুরভি অন্যতর, আবদুস সাত্তার, আহমদ পাবলিশিং হাউজ, প্রথম প্রকাশ ১৯৮৬

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //