রোজার হেঁশেল ঘর

রোজা মানেই হেঁশেল ঘরে গৃহিণীর ব্যস্ততা। এ সময়ে হেঁশেল ঘরেরও একটু-আধটু গোছগাছের প্রয়োজন রয়েছে। রোজা শুরুর আগে একদিনেই যদি হেঁশেল গোছগাছ করে নেওয়া যায় তাহলে পরবর্তী সময় কাজের চাপও কম থাকবে। এজন্য সারা মাসের প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর তালিকা তৈরি ও দীর্ঘমেয়াদি উপকরণগুলো বাজার করে মজুদ রাখার কাজটা সবার আগে সেরে ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

কেমন হবে রোজার হেঁশেল ঘর-

ছিমছাম : সারাদিন রোজা রেখে সবাই বেশ ক্লান্ত থাকে। তাই এ সময়ে হেঁশেলঘর পরিষ্কারের মতো বড় কোনো পরিশ্রম করতে প্রচুর সময় ও শক্তি ব্যয় করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেকে। এজন্য রোজা শুরুর আগেই পরিষ্কারের কাজ শেষ করে ফেলা ভালো। রান্নাঘরের আকার ও অবস্থার ওপর নির্ভর করে দু-একদিন ঠিক করে নিন। তারপর অবাঞ্ছিত ও অপ্রয়োজনীয় উপকরণগুলো সরিয়ে ফেলুন। চুলা, মাইক্রোওয়েভ (ভেতর ও বাইরে), কেবিনেট, ফ্রিজ, জানালা, রান্নাঘরের কাউন্টার, ও স্টোভের ওপর ও মেঝে পরিষ্কার করে নিন। এছাড়া রমজান মাসের জন্য রান্নাঘরের আলাদা একটি নকশা করে নিতে পারেন। সেই নকশা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সাজালে গোটা মাসটি নিশ্চিন্তে গুছিয়ে কাজ করতে পারবেন।

আগেই ঠিক করুন মেন্যু : রোজায় ইফতার ও সেহরির মেন্যু ঠিক করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাই এটি আগেই ঠিক করে ফেলুন। মেন্যু আগেভাগেই ঠিক করে ফেলতে পারলে বাজার করা সহজ হবে। প্রয়োজনে একবেলা বসে কাগজে লিস্ট করুন সারা মাসের ইফতারে কী কী থাকবে, কী কী মজুদ রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো কী পরিমাণে কেনাকাটা করতে হবে। শুকনো উপকরণ যেমন- ছোলা, ডাল, ময়দা, বাদাম, গুঁড়ো দুধ এগুলো দুভাগে বা পুরো মাসের জন্য একবারে কিনে মজুদ করতে পারেন। ক্যাচআপ, শরবত তৈরির উপকরণ, পনির এসবও প্রয়োজন হিসেবে তালিকা করুন।

কিচেন শেলফ : রমজানে কিচেন শেলফে জায়গা করে নেয় নতুন কিছু উপকরণ। বিশেষত এ মাসেই যা ব্যবহার হয়। সবচেয়ে ভালো হয় এসব উপকরণের জন্য যদি আলাদা জায়গা বের করা যায়, যেখানে সবগুলো একসঙ্গে সাজিয়ে রাখা যাবে। এতে করে ইফতার তৈরির সময় চট করেই দরকারি বয়াম বা কৌটা বের করে নেয়া যাবে।

খাবার সংরক্ষণ : রোজার মাসে ঘরের কাজ ছাড়াও থাকে ঈদের শপিংয়ের ঝামেলা। দেখা গেল শপিং শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতেই ইফতারের সময় হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে ঘরে এমন কিছু খাবার মজুদ রাখা প্রয়োজন, যাতে শেষ মুহূর্তেও চট করে খাবার তৈরি করে নেয়া যায়। রুটি, ফল, দুধ, ডিম, ওটমিল, মিষ্টি আলু, মাছ (কেটে ধুয়ে রাখা), বার্লি, সিরিয়াল, সবজি (কেটে বরফ করে রাখা), মটরশুঁটি (সিদ্ধ) রাখা যেতে পারে। তাছাড়া খাবার সহজে প্রস্তুতকরণ ও অতিরিক্ত খাবার সংরক্ষণের জন্য ফয়েল পেপার, পেপার টাওয়েল, প্লাস্টিক ব্যাগ, কয়েক আকারের ফুড কন্টেইনার (কাচ ও ওভেন প্রুভ, যাতে সহজেই গরম করা যায়) হেঁশেলে রাখতে হবে।

সময় বাঁচান : রমজানে রান্নাঘরে কাজ বেশি থাকে বিধায় সহজে সেসব করার উপায় বের করে ফেললে সময় বাঁচানো যাবে।  যেমন- বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ কুচি করে ফ্রিজে রেখে দিন, বাটা মসলাগুলো একবারে বেশি করে তৈরি করে ডিপফ্রিজে রাখুন। ইফতারের আগে ফল কেটে লবণজলে ভিজিয়ে রাখুন। এতে তা বাদামি রং ধারণ করবে না। এরকম কাজ সহজ করে নেওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। রান্নার বই ও ইন্টারনেট থেকে সহজতম রান্নার উপায়গুলো রপ্ত করলে কম সময়ে অনেক কাজ শেষ করে ফেলা যাবে। 

অতিথি আপ্যায়ন : রোজার সময় ইফতারে অতিথি নিমন্ত্রণের রীতি রয়েছে। নিমন্ত্রণের কাজটিও সারুন গুছিয়ে। কজন অতিথি আসবেন, তার একটি হিসাব করুন। ইফতারে কয়টি আইটেম পরিবেশন করতে চান, তার একটি তালিকা একদিন আগেই তৈরি করুন এবং বাজার করে রাখুন। বেশি অতিথি হলে প্রয়োজনে ভালো কোনো খাবার দোকান থেকে আনিয়ে নিন, ঘরে কিছু আইটেম তৈরি করে ফেলুন। অতিরিক্ত প্লেট, গ্লাস ধোয়ার ঝামেলা এড়াতে ব্যবস্থা রাখুন ডিসপোজেবল প্লেট, গ্লাসের।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //