আবাহনীর হতাশার নাম ‘এএফসি কাপ’

অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে এএফসি (এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন) কাপ থেকে বাদ দেওয়া হলো আবাহনী লিমিটেডকে। বাংলাদেশের এই দর্শকনন্দিত ক্লাবটি কোনো ম্যাচ না খেলেই বাদ পড়েছে। 

এএফসি থেকে বলা হয়েছে, স্বাগতিক হিসেবে প্রাক বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করতে না পারায় বাংলাদেশি এই জায়ান্ট ক্লাবটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এশিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটির সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ ছিল তাদের। 

সঙ্গে বাফুফেও (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) দূতিয়ালির ভূমিকায় ছিল; কিন্তু অপেক্ষা করেও এবার আর এশিয়ান ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের সেরা এই আসরে খেলা হচ্ছে না মারিও লেমোসের শিষ্যদের। 

এএফসির বিশেষ কোভিড কমিটি বাংলাদেশের বিষয়টি পর্যালোচনা করে আবাহনীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ প্রতিষ্ঠানটি যখন এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফুটবলের দ্বিতীয় লেগ শুরু হয়েছে। আগে যেখানে দর্শক উন্মুক্ত গ্যালারি প্রায় ফাঁকা থাকত এবার ঘোষণা দিয়েই দর্শক ছাড়া লিগ আয়োজন চলছে। যদিও অনেকটা চাপিয়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন বেশ কয়েকটি ক্লাব সংশ্লিষ্টরা; কিন্তু বাদ দেওয়াটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না আবাহনী।

ক্লাবটিকে সরাসরি কিছু না বলে নিজস্ব ওয়েবসাইটে আবাহনীকে বাদ দিয়ে এএফসি কাপ এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ক্লাবটির ম্যানেজার সত্যজিত দাস রুপু বিস্মিত হয়েছেন এএফসির এমন সিদ্ধান্তে, ‘এএফসি কাপ খেলবো বলেই শুরু থেকেই নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছি। স্বাগতিক হওয়ার আগ্রহটা সর্বশেষ চিঠিতেও প্রকাশ করেছি। এরপরও এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ হয়েছি’। 

ওয়েবসাইটে আবাহনীকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে, লকডাউনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় এএফসি কাপের প্রাক বাছাইয়ের ম্যাচটি স্বাগতিক হিসেবে আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়েছে আবাহনী। এজন্য মালদ্বীপের ক্লাব ঈগলসকে ভারতের বেঙ্গালুরুর এফসির সঙ্গে খেলার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছে। ১১ মে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে দুই দলের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। 

এ ব্যাপারে বাফুফের পক্ষ থেকে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই সিদ্ধান্তে জরাজীর্ণ কূটনীতি প্রমাণিত হয়েছে। কারণ বাফুফে ও আবাহনী বারবার বলে আসলিছ মালদ্বীপ এই ম্যাচ আয়োজনে রাজি নয়, অথচ আগামী ম্যাচটি কিন্তু মালেতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে! বিগত দিনে দেখা গেছে এএফসি কখনোই হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না।

সেখানে অবধারিতভাবে দায়টা বাফুফে ও আবাহনীর ওপর এসে বর্তায়। আবাহনী এখন আপিল করার কিংবা না করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, আপিল করেই কোনো কাজ হবে না। এর আগে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে লকডাউন ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানোর কারণে। এই সময়ে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ইচ্ছে থাকলেও আবাহনী দেশের বাইরে গিয়ে খেলতে পারত না। খেললেও সেক্ষেত্রে অনেক নিয়ম মেনে তারপর খেলতে হতো। 

যদি লকডাউন বাড়ানো না হতো তাহলে ৫ মে ম্যাচটি বাংলাদেশে আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল আবাহনীর। ক্লাবটির পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়েছিল মালদ্বীপ প্রাক বাছাইয়ের স্বাগতিক হতে চায় না। 

সে সময় বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেছিলেন, ‘ম্যাচের দিন এএফসিকে নিশ্চিত করার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করব। এএফসি মালদ্বীপকে ৮ ও ১১ মে প্লে অফের দুটি ম্যাচের স্বাগতিক হতে অনুরোধ করা হলেও সেটি রাখেনি তারা। সে সময় মালদ্বীপ ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছিল, ম্যাচ দুটি আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি’। 

অথচ এই মালদ্বীপই এখন এএফসি কাপের ম্যাচ আয়োজন করছে। তাহলে কে সত্য বলল আর কে মিথ্যা, সেটি বের করাই এখন মুশকিল। এর আগে আবার আবাহনী প্রস্তাব দিয়েছিল ম্যাচটি মালেতে খেলার বিষয়ে; কিন্তু তাতে নাকি ভারতের বেঙ্গালুরু এফসি রাজি হয়নি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //