নকআউটে এসে প্রথম হ্যাটট্রিক, শেষ নয়তো?

কাতার বিশ্বকাপে গোলের জন্য হাহাকার নেই। তবুও গ্রুপ পর্বে কোন হ্যাটট্রিক হয়নি। এক ম্যাচে দেড় হালি গোল হলেও দেখা যায়নি একজনের তিন গোলের। এবার সেটি হলো, করলেন গনসালো রামোস। অনেকের ধারনা কোয়াটার ফাইনালে আর হ্যাটট্রিক দেখা নাও যেতে পারে। আর যিনি হ্যাটট্রিক করলেন তিনিও পর্তুগালের একাদশে নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবেও ছিলেন না। কারণ বয়স মাত্র ২১। 

কাতার বিশ্বকাপে পর্তুগালে প্রথম দুই ম্যাচে খেলেছেন মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বদলি হিসেবে। তাও আবার ম্যাচের একেবারে শেষের দিকে তিনি মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন। এর মাঝেই ঝামেলা লাগে পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস আর রোনালদোর মাঝে। শেষ ষোলোর ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এক বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেন সান্তোস।

মুপারস্টার রোনালদোকে বেঞ্চে বসিয়ে প্রথম একাদশে নামিয়ে দেন গনসালো রামোসকে। বাকিটা ইতিহাস! ১৮ বছর পর প্রথমবার পর্তুগালের প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়লেন রোনালদো। তার মতো মহাতারকার জায়গায় প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়াটাই ছিল রামোসের জন্য বিরাট ব্যাপার। সেইসাথে সুযোগটা তিনি এমনভাবে কাজে লাগালেন, যা তার ক্যারিয়ারের ভিত গড়ে দিল। রামোসের পায়েই ফুটবল কাতার বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের ফুল। সেই ফুল ফোটার দৃশ্য বেঞ্চে বসে দেখলেন রোনালদো। প্রথমে প্রতিক্রিয়া না দেখালেও পরে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। বেনফিকোর হয়ে খেলা এই ফরোয়ার্ড ম্যাচের ১৭, ৫১ ও ৬৭ মিনিটে ৩টি গোল করে শুধু পর্তুগালকে দুর্দান্ত জয় এনে দেননি।

এই ম্যাচে বিশ্বকাপের নকআউটে পর্তুগালের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোলের রেকর্ডও গড়েছেন। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে গোল করে রেকর্ডটি (২৪ বছর ১৭৯ দিন) এতদিন দখলে রেখেছিলেন ইউসেবিও। এবার তাকে ছাড়িয়ে গেলেন ২১ বছর ১৬৯ দিন বয়সী রামোস। পর্তুগালের এই ভয়ংকর পারফরম্যান্স দেখে দুশ্চিন্তায় পড়তে পারে কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ মরক্কো। মাঠের লড়াইয়ে সুইজারল‌্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে ১৬ বছর পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল পর্তুগাল। ২১ বছর বয়সী অভিষিক্ত রামোসের হ‌্যাটট্রিকে অতি সহজেই শেষ আটে পা রেখেছে পর্তুগাল। রামোসোর হ‌্যাটট্রিক বাদে একটি করে গোল করেছেন পেপে, রাফায়েল জুরেরিও ও রাফায়েল লিও।

শুরুর পর থেকে কাতার বিশ্বকাপের কোন হ্যাটট্রিকের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ ম্যাচে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পেল সবাই পর্তুগিজের গনসালো রামোসের কল্যাণে। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে রোনালদোর পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেয়েই কীভাবে জ্বলে উঠতে হয় তা দেখালেন রামোস। এই বেনফিকা ফুটবলারকে ইতোমধ্যেই বড় ক্লাবগুলো নজরে রেখেছে। প্রথমার্ধের ১৭ মিনিট ও দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ ও ৬৭ মিনিটে গোল করে জাতীয় দলের হয়ে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তিনি। শুরুর একাদশে রোনালদো না থাকলেও তাকে ছাড়া পর্তুগালের জিততে একটুও বেগ পেতে হয়নি। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ স্পেনকে বিদায় করে দেয়া মরক্কো।