আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডসের যে লড়াই প্রতিশোধেরও

আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে শুরু হচ্ছে কাতার বিশ্বকাপের কোয়াটার ফাইনালে লড়াই। নক আউট পর্ব থেকে আটটি দল অংশ নিচ্ছে, যেখান থেকেই সেমিফাইনালের জন্য চারটি দল খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। দুটি শেষ আটের লড়াইয়ের সন্দেহাতীতভাবেই সবার নজরে থাকবে আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডের ম্যাচটি।

লড়াইয়ের ভেতর যে কতশত লড়াই থাকে সেটা অনেকেরই অজানা। কোয়ার্টার ফাইনালে জয়োৎসবের রঙ কমলা হবে নাকি আকাশি-সাদা আগে থেকে বলার উপায় নেই। কারণ ফুটবল ঐহিত্য, শক্তি-সামর্থ্যরে বিচারে এলিট দলগুলোর শুরুর তালিকায় থাকবে নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনার নাম।

বিশ্বকাপে পূর্বেও তারা পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে। যার চার ম্যাচই নকআউট পর্বে। ওই চার ম্যাচ নিয়ে দু’দলের কান্না কিংবা উত্তাপ ছড়ানোর গল্প কম নয়। তাদের লড়াই পূর্বেও উত্তাপ ছড়িয়েছে, শোধ-প্রতিশোধের দামামা বেজেছে।

আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ম্যাচ নিয়েও ছড়াচ্ছে উত্তাপ। ডাচ ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা যেমন বলেছেন, তাদের দলে মেসি, আলভারেজ, ডি পল আছে। ভালো সুযোগ আছে তাদের।

আবার ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নকআউটে দুর্দান্ত এক গোলে দলকে জয় এনে দেন ডেনিস বার্কক্যাম্প। তার ওই গোলের কারিগর ফ্রাঙ্ক ডি বয়ের বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, ১৯৯৮ বিশ্বকাপের মতো ডাচদের আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে। ফ্রেঙ্কি ডি জংকে এখনও সেভাবে জ্বলে উঠতে দেখিনি। সে আমাদের সেরা খেলোয়াড়। কৌশলগত কারণে আর্জেন্টিনার ম্যাচে তার ভালো করার সুযোগ আছে।’

আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস বিশ্বকাপে প্রথম মুখোমুখি হয় ১৯৭৪ আসরে। তখন ইয়োহান ক্রুইফের যুগ। দলটি আর্জেন্টিনাকে তাদের টোটাল ফুটবল খেলে দ্বিতীয় গ্রুপ পর্বে  ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল। ওই হারের শোধ পরের বিশ্বকাপেই নিয়েছিল আর্জেন্টিনা।

ঘরের মাঠে ফাইনালে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ক্রুইফের কমলা জার্সির দলকে। স্বেচ্ছাচারি ম্যাচ খেলার কারণে বিশ্বকাপ ইতিহাসে কালো তালিকাভুক্ত হয়ে আছে ওই ম্যাচ। ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ১৯৯৮ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস ওই হারের শোধ তোলে। আকাশি-সাদা জার্সির দলকে হারায় ২-১ গোলে। ম্যাচের ১২ মিনিটে লিড নিয়েছিল ডাচরা।

ম্যাচের ১৭ মিনিটে গোল শোধ করেছিল আলবিসেলেস্তেরা। ৯০ মিনিটে ডেনিস বার্কক্যাম্প গোল করে দলকে সেমিফাইনালে তোলেন। ওই গোল নিয়ে বাতিস্তুতা বলেছেন, ‘কত কষ্ট পেয়েছিলাম তার চেয়ে বড় কথা হলো গোলটি ছিল অসাধারণ। যেভাবে ডি বয়ের বল নিয়ে উঠে এসেছিলেন, বার্কক্যাম্পকে পাস দিয়েছিলেন, এরপর তিনি রিসিভ করে যে দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন তা অসাধারণ। খুবই কষ্টের, হতাশার সন্ধ্যা ছিল আমাদের জন্য।’

ডাচদের বিপক্ষে মেসিদের ম্যাচ নিয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যা হলো, আসর শুরুর আগেই আর্জেন্টিনার লোকজন দলকে চ্যাম্পিয়ন ভাবতে শুরু করে। প্রথম হওয়া ভিন্ন কিছুকে সাফল্য মনে করে না। এটা দলের ওপর খুব চাপ তৈরি করে।’ হৃদয় ভাঙা ১৯৯৮ বিশ্বকাপের পরে ২০০৬ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হয়েছিলো আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস। গোল শূন্য সমতা হয়েছিল ম্যাচটি।

এরপর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ২০১৪ বিশ্বকাপে কমলা ও আকাশি-সাদার দেখায় উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচ হয়েছিল। আগুনে যে লড়াই সেমিফাইনালে শেষ হয়েছিল টাইব্রেকারে এবং ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। এবারের ম্যাচটি তাই দু’দলের এগিয়ে যাওয়ার। পুরনো জয়-পরাজয়ের হিসাব মেলাবার। অনেক প্রতিদ্ধন্ধিতারও।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //