মরক্কোর সাফল্যে আশাবাদী হতে পারে বাংলাদেশও!

সেই ২০১২ সালে কাতার বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু সেটা পূরণ হয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ এগিয়ে গেলেও বাংলাদেশ সেই তিমিরেই পড়ে রয়েছে। উল্টো নিজেরা প্রতিনিয়তই পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু গতকাল শেষ হওয়া কাতার বিশ্বকাপে কিন্তু ঠিকই চমক নিয়ে হাজির হয়েছিল মরক্কো নামক দেশটি।

নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে পৌছে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে পারে বাংলাদেশও। কারণ সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাই পারে অন্ধকার থেকে ফুটবলকে তুলে আনতে।

এখন সবাই মরক্কো ফুটবলের জয়যাত্রার গল্প শুনতে চায়। মরক্কো এবারের বিশ্বকাপসহ ষষ্ঠ বারের মতো বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্ধিতা করছে। তবে বিশ্বকাপে ক্যামেরুন আফ্রিকা থেকে সর্বোচ্চ ৮ বার অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে সর্বোচ্চ কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল। দ্বিতীয় স্থানে আছে নাইজেরিয়া যারা ৬ বারের অংশগ্রহণে ৩ বারই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত গিয়েছিল। মরক্কো ১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। পূর্বের ৫টি আসরে তারা কেবলমাত্র ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত যেতে পেরেছিল আর সেটা ছিল আরব দেশ হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রথমবারের মতো উত্তরণ। তারা পোল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের সঙ্গে ০-০ গোলের ড্র করার পাশাপাশি পর্তুগালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে সেবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম জার্মানির কাছে ০-১ ব্যাবধানে পরাজিত হতে হয় লোথার ম্যাথাউসের করা ৮৮ মিনিটের গোলে।

১৯৭০ সালের বিশ্বকাপেও তারা পশ্চিম জার্মানির কাছে পরাজিত হয়েছিল ১-২ গোলে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপ একমাত্র ব্যতিক্রম যে টুর্নামেন্টে তারা কোনো পয়েন্ট পায়নি, যদিও তিনটি দলের কাছেই তারা ন্যূনতম এক গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে তারা ৪ পয়েন্ট পেলেও পরবর্তী রাউন্ডে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করে ৩-০ গোলে, তবে নরওয়ের সঙ্গে ম্যাচটিতে আত্মঘাতী গোল এবং গোলরক্ষকের বেশ কয়েকবার ভুলের কারণে ২-২ গোলে ড্র করতে বাধ্য হয়ে‌ দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে ব্যর্থ হয়। ১৯৯৮ সালে তারা ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০তম স্থানে ছিল আর বর্তমানে আছে ২২তম স্থানে। আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস টুর্নামেন্টে মরক্কো মাত্র ১ বার ১৯৭৬ সালে শিরোপা জিতেছিল আর রানার্সআপ হয়েছিল ২০০৪ সালে। এই টুর্নামেন্টটিতে সর্বোচ্চ ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মিশর, কিন্তু বিশ্বকাপে তারা ৩ বারের বেশি কোয়লিফাই করতে পারেনি। ক্যামেরুন আফ্রিকা কাপ অফ নেশনসের শিরোপা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ বার জিতেছে আর ঘানা জিতেছে ৪ বার।

সিএএফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নস লীগে মিশরের ক্লাবের জয় জয়কার। এই টুর্নামেন্টে মিশরের ক্লাবগুলো সর্বোচ্চ ১৬ বার শিরোপা জয় করেছে, যেখানে মরক্কোর ক্লাবগুলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ বার শিরোপা লাভ করেছে। তবে সর্বশেষ ২০২১-২২ মৌসুমে সিএএফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নস লীগ জিতেছে মরক্কোর ওয়াইদাদ অ্যাথলেটিক ক্লাব, যারা ফাইনালে মিশরের আল-আহলি ক্লাবকে পরাজিত করেছিল। সেই সাথে ২০২১-২২ মৌসুমে আফ্রিকার দ্বিতীয় সেরা সিএএফ কনফেডারেশন কাপও জিতে নিয়েছে মরক্কোর আর.এস বারকানে ক্লাব যারা দক্ষিণ আফ্রিকার অরলান্ডো পাইরেটসকে ফাইনালে টাইব্রেকারে‌ হারিয়ে একই বছরে আফ্রিকা অঞ্চলের দুইটি বড় ক্লাব শিরোপা জিতে নিয়েছে। অন্যদিকে মরক্কোর 'এ' দল ২০১৮ এবং ২০২০ সালে আফ্রিকান নেশনস চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিয়েছিল। অর্থাৎ মরক্কো আগামী দিনের জন্য যে যথেষ্ট প্রস্তুত তা এই ফলাফলের মাধ্যমে আমরা অবগত হলাম। মরক্কোর এগিয়ে যাওয়া থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশও ভাল করতে পারে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //