জিদানকে অসম্মান, হেরে গেলেন গ্রায়েত

বিশ্ব ফুটবলে সর্বশেষ দুই যুগে ফ্রান্সের চেয়ে সফল দল আর দ্বিতীয়টি নেই। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত ‘লা ব্লুজ’রা জিতেছে দুটি বিশ্বকাপ। ফাইনাল খেলেছে আরও দুবার। সব মিলিয়ে ফিফা বিশ্বকাপের সর্বশেষ সাতটি আসরে চারবার ফাইনাল খেলেছে ফরাসিরা।

অথচ সেই ফ্রান্সের ফুটবল নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্টি হয়েছে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক। যার কেন্দ্রে রয়েছেন খোদ ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) সভাপতি নোয়েল লে গ্রায়েত। 

ফ্রান্সের ফুটবলে জিনেদিন জিদান মহানায়ক। যার হাত ধরে ফ্রান্স ১৯৯৮ সালে জিতেছিল প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি। জ্যা ফন্টেইন, রেমন্ড কেপা, মিশেল প্লাতিনি, জ্যা টিগানা, জ্যা পিয়েরে পাপিনরা যা পারেননি, একজন জিদান তা করে দেখিয়েছেন। বিশ্বকাপ জিতিয়ে ফ্রান্সের ফুটবলকে তুলেছেন অনন্য উচ্চতায়। তিনি শুধু ফ্রান্সের নন, ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। অথচ সেই জিদানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দ্বিধা করেননি গ্রায়েত।

কাতার বিশ্বকাপের পর ফ্রান্সের কোচ হিসেবে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন দিদিয়ের দেশম। ধারণা করা হচ্ছিল, রিয়াল মাদ্রিদকে টানা তিনটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়ে ইতিহাস গড়া জিদান হবেন ফ্রান্সের পরবর্তী কোচ। যদিও তা হয়নি। ফ্রান্স ফেডারেশন ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি বাড়িয়েছে দেশমের সঙ্গে। এদিকে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর ব্রাজিলের কোচের পদ ছেড়েছেন তিতে।

ব্রাজিলের ফেডারেশন পরবর্তী কোচ হিসেবে জিদানের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল। এই বিষয়টি নিয়েই বেফাঁস মন্তব্য করেন গ্রায়েত। দেশমের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের পর তার মন্তব্য, ‘জিদান ব্রাজিলে যাবে? আমার কিছু যায় আসে না। দেশের হোক কিংবা ক্লাবের কোচিং, তিনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারেন। জিদান কি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন? একেবারেই না। আর এমনিতেও আমি তার ফোন ধরতাম না।’

গ্রায়েতের অসৌজন্যমূলক মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পেসহ অনেকে, এমনকি রিয়াল মাদ্রিদও। এমবাপ্পে বলেছেন, ‘জিদান মানেই ফ্রান্স। তার মতো কিংবদন্তিকে এভাবে অসম্মান করা মোটেও কাম্য নয়।’ শুধু জিদান নয় করিম বেঞ্জেমাকে নিয়েও তির্যক মন্তব্য ছিল গ্রায়েতের। ইনজুরির কারণে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন বেঞ্জেমা। মাঝপথে সুস্থ হলেও তাকে আর নেয়া হয়নি দলে। 

অনেকেই মনে করছেন, ফ্রান্স ফুটবলের সদ্য সাবেক সভাপতি গ্রায়েতের মন্তব্য কিছুটা হলেও বর্ণ বৈষম্যমূলক। আসলে জিদান কিংবা বেঞ্জেমা কেউই খাঁটি ফরাসি নন। দুজনই আলজেরিয়ান বাবার সন্তান। নাক-উঁচু ফরাসি হিসেবে গ্রায়েত হয়তো অবজ্ঞাই করতে চেয়েছেন তাদের। কিন্তু জিদানের ঘটনায় বিপদ বুঝে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিনি হেরে গেছেন জিদানের ব্যক্তিত্বের কাছে। বিতর্ক এড়াতে গ্রায়েতকে বরখাস্ত করেছে ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //