আফসার হোসেন
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পিএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ পিএম
ফুটবলে বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ প্রতিপক্ষ কে? প্রশ্নের জবাবে অনেকেই নেবেন ভুটানের নাম। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভুটানের বিপক্ষে ১৪ বারের দেখায় ১১টি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। ড্র দুটি আর পরাজয় একটি ম্যাচে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ১-৩ গোলে হেরেছিল ভুটানের কাছে। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই প্লে-অফের সেই ম্যাচে হার বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য দগদগে ঘা। ম্যাচটি হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশ পরবর্তী দুই বছর পায়নি ফিফা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ।
২০১৬ সালের ট্র্যাজেডিকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ পরবর্তী টানা চার দেখায় ভুটানকে হারিয়েছে। তাই আত্মবিশ্বাস নিয়েই সম্প্রতি বাংলাদেশ গেছে ভুটান সফরে। দুই ম্যাচে প্রীতি সিরিজের শুরুটাও ছিল প্রত্যাশিত। ৫ সেপ্টেম্বর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে কষ্টে হলেও বাংলাদেশ ১-০ গোলের জয় পায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে।
প্রথম ম্যাচে হ্যাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যদের পারফর্ম্যান্স আশাব্যঞ্জক ছিল না, এটা ঠিক। প্রথমত পাহাড়ি দেশের রাজধানী থিম্পুর উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ না। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভুটানের উচ্চতা নিয়ে চিন্তিত থাকেন সফরকারী ফুটবলাররা। ভুটানের মাটিতে ছয় দিন অনুশীলন করেও উচ্চতার জন্য শ্বাসকষ্টের কথা জানিয়েছিলেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াসহ একাধিক খেলোয়াড়। এ ছাড়া ভুটানে খেলা হয়েছে টার্ফের মাঠে।
বাংলাদেশ দল টার্ফে খেলতে অভ্যস্ত নয়। আবার জুনে লিগ শেষ হওয়ার পর থেকে প্রায় তিন মাস বাংলাদেশের ফুটবলাররা প্রতিযোগিতামূলক খেলার বাইরে। তাতে বাংলাদেশের ফুটবলারদের ফিটনেস আপ টু দ্য মার্ক ছিল না। আর নিজেদের ঘরোয়া মৌসুম চলায় ভুটানের ফুটবলাররা রয়েছে খেলার মধ্যে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশকে বেশ বাগেই পেয়েছিল ভুটান।
নিজেদের পরিচিত পরিবেশ আর ঘরের মাঠের সমর্থন কাজে লাগিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় ০-১ গোলে। তাতে দুই ম্যাচের প্রীতি সিরিজ শেষ হয়েছে সমতায়।
সন্দেহ নেই, বাংলাদেশকে ভুটানের প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় রাকিব হোসেনের অনুপস্থিতিও ভুগিয়েছে। ছিলেন না পরীক্ষিত ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। দলে জায়গা পাওয়া শাহরিয়ার ইমন আর ঈসা ফয়সাল নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভুটানি গোলকিপারকে প্রায় একা পেয়েও গোল করতে পারেননি ইমন। সম্প্রতি যুব সাফের সেরা গোলদাতা মিরাজুল ইসলামের অভিষেক হয়েছে ভুটানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে। কিন্তু আলো ছড়াতে পারেননি। আর স্ট্রাইকার পজিশনে বরাবরের মতো সুযোগ পেয়ে হতাশ করেছেন ১৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাত্র এক গোলের মালিক ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। সত্যি কথা হচ্ছে, সিরিজে বাংলাদেশের খেলা ছিল যাচ্ছেতাই। ভুল পাসের ছড়াছড়ির সঙ্গে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবটাও ছিল প্রকট।
ভুটান এক সময় বাংলাদেশের পেছনে ছিল। সেই ভুটান এখন বাংলাদেশের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে র্যাংকিংয়ে। সিরিজে দ্রুতগতির খেলায় ভুটান প্রমাণ করেছে, তারা ফুটবলে এগোচ্ছে। আর বাংলাদেশ? মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন!
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh