করোনায় আক্রান্ত ১০ হাজার পুলিশ ক্ষতিপূরণ চান

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত ১০ হাজার পুলিশ সদস্যদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ১২ জানুয়ারি জননিরাপত্তা বিভাগের (পুলিশ-২) উপসচিব ফারজানা জেসমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা সরকারি দায়িত্ব পালনকালে করােনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।  

সরকার ঘােষিত পরিপত্রে শর্তানুযায়ী, দায়িত্ব পালনকালে কভিডে আক্রান্ত হলে এককালীন ক্ষতিপূরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকায় আক্রান্ত প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্য কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির লক্ষ্যে পুলিশ অধিদফতরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র দাখিল করেন।

অর্থ বিভাগের জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী কভিডে আক্রান্ত হওয়া বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্য কর্তৃক সরকার ঘােষিত ক্ষতিপূরণের জন্য অর্থ প্রাপ্তির লক্ষ্যে দাখিলকৃত আবেদনসমূহ অর্থ বিভাগে পাঠানো হবে কি না, এ বিষয়ে মতামত দেয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরােধ করা হলাে।

অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত পুলিশের ১০ হাজার পুলিশ সদস্য এককালীন ক্ষতিপূরণ চেয়ে পুলিশ অধিদফতরের মাধ্যমে আবেদন জমা দিয়েছে। জমা পড়া আবেদনগুলো অর্থ বিভাগে পাঠানোর বিষয়ে মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ২৩ এপ্রিল অর্থমন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্রে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে সরাসরি কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ এ সংক্রান্ত সরকার ঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারী দায়িত্ব পালনকালে করোনায় আক্রান্ত হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ সরাসরি আর্থিক সুবিধা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে গ্রেডভেদে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা পাবেন। আর সরকারি কোনো কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এর পাঁচগুণ আর্থিক সহায়তা পাবেন।

পরিপত্রে বলা হয়, ‘২০১৫ এর বেতনস্কেল অনুযায়ী ১৫-৩০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন পাঁচ লাখ টাকা, আর মারা গেলে পাবেন ২৫ লাখ টাকা। ১০-১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে পাবেন সাড়ে সাত লাখ টাকা এবং আর মারা গেলে পাবেন সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া প্রথম-নবম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে পাবেন ১০ লাখ টাকা এবং মারা গেলে পাবেন ৫০ লাখ টাকা।’

পরিপত্রে আরো বলা হয়, ক্ষতিপূরণের আওতায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে সরাসরি কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ও সরকার ঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিয়োজিত মাঠপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।

করোনাভাইরাস পজিটিভের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীসহ মাঠপ্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনা পজিটিভের প্রমাণ বা মেডিক্যাল রিপোর্টসহ স্ব-স্ব নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট ফরমে ক্ষতিপূরণের দাবিনামা পেশ করবেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফরমে মৃত্যুবরণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্ত্রী/স্বামী/সন্তান এবংঅবিবাহিতদের ক্ষেত্রে বাবা/মা ক্ষতিপূরণের দাবি-সংবলিত আবেদন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করবেন। আবেদনকারীর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ আবেদনপত্রসমূহ যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মাধ্যমে অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠাবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কর্মচারীরা কেবলমাত্র এ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য হবেন।

করোনায় আক্রান্ত এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্যয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সৃজনকৃত খাতে করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিপূরণ বরাদ্দকৃত অর্থ হতে নির্বাহ করা হবে। অর্থ বিভাগ ক্ষতিপূরণের আবেদনপ্রাপ্তির পর ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়ার সরকারি আদেশ জারি করবে। এ ক্ষতিপূরণ বর্তমান প্রচলিত অন্য যেকোনো প্রজ্ঞাপন/আদেশে বর্ণিত কর্মকালীন মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আর্থিক সহায়তা বা অনুদানের অতিরিক্ত হিসেবে প্রদেয় হবে। চলতি বছরের ১ এপ্রিল হতে এ পরিপত্রের নির্দেশনা কার্যকর হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //