যে দক্ষতায় প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন ড. শামসুল আলম

প্রতিমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ড. শামসুল আলম রবিবার এই পদে শপথ নেবেন। তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ছিলেন। এক যুগের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ করে এ মাসের শুরুতেই অবসরে গিয়েছিলেন। কিন্তু দিন পনেরো যেতে না যেতেই মন্ত্রিসভায় যুক্ত হওয়ার সুখবর পেলেন অর্থনীতিতে একুশে পদক পাওয়া এই পরিকল্পনাবিদ।

সরকারের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন ড. শামসুল আলম। নীরবে, নিভৃতে পালন করে গেছেন তার ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব। খুব বেশি আলোচনায় না থাকলেও তিনি সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকের সুনজরে ছিলেন বরাবরই। যে কারণে সদ্য অবসরে যাওয়ার পরও তাকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে রবিবার শপথ নেয়ার আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি ড. শামসুল হক নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর যে বিশ্বাস ও আস্থা রেখে নতুন দায়িত্ব দিচ্ছেন সেটিও যথাযথভাবে পালন করবো ইনশাআল্লাহ।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুদীর্ঘ ৩৫ বছর অধ্যাপনা করেছেন ড. শামসুল আলম। পরে প্রেষণে ছুটি নিয়ে ২০০৯ সালের ১ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন। সেই থেকে এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে একই পদে লম্বা সময় দায়িত্বপালন করেন তিনি।

জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের সদস্য না হয়েও টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার বিধান রয়েছে সংবিধানে। মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীর সংখ্যা কখনই সভার মোট সদস্যের এক -দশমাংশের বেশি হবে না। একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় বর্তমানে দুজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী রয়েছে। একজন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এবং অন্যজন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। এই তালিকায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যুক্ত হচ্ছেন ড. শামসুল আলম।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ড. শামসুল আলমের হাত ধরে তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন পরিকল্পনা। যেগুলো এখন চলমান। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরিতে তার অসামান্য ভূমিকা ছিল। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী দ্বিতীয় দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (২০০৯-১১) সংশোধন ও পুনর্বিন্যাস করে ‘দিনবদলের পদক্ষেপ’ ২০১১ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। রূপকল্প ২০২১-এর আলোকে বাংলাদেশের প্রথম পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১) তৈরি করে জিইডি। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন কৌশলপত্র, সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র তৈরি হয়েছে ড. শামসুল আলমের সময়ে।

বর্তমানে ১০০ বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শেষের পথে। এগুলোর বাইরে তার দায়িত্ব পালনকালে এমডিজি অর্জন বিষয়ক ১৫টি গ্রন্থ, তার তত্ত্বাবধান ও সম্পাদনায় ৬৩টি মূল্যায়ন প্রতিবেদন, অধ্যয়ন ও গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

ড. শামসুল আলম এ বছর সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিং কর্তৃক বাংলাদেশে এ সময়ের ইকোনমিস্ট অব ইনফ্লুয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির ১৬তম বার্ষিক সম্মেলনে এ বছর তাকে স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা পর্যবেক্ষণ সোসাইটি তাকে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি পদক ২০১৮-এ ভূষিত করে। তার গবেষণাগ্রন্থ, পাঠ্যপুস্তকসহ অর্থনীতি বিষয়ক প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ১২টি।



সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //