ভ্যাকসিন কার্যক্রমে ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

কোভিড টিকা কেনা ও টিকাদান কার্যক্রম মিলে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ও বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছে বলেও জানান তিনি।

আজ শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকালে মানিকগঞ্জে কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য, বস্ত্র ও সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলা সদরের গড়পাড়া এলাকায় শুভ্র সেন্টারে জেলা পরিষদের উদ্যোগে এসব সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করা হয়।

এ অনুষ্ঠানে শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) পরীক্ষামূলক ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অথচ আশপাশের দেশে এখনও তা শুরু হয়নি। পর্যায়ক্রমে দেশের আনাচে-কানাচে শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আমেরিকার তৈরি ফাইজারের ভ্যাকসিন এসব শিশুদের দেওয়া হবে। সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ শিশুর ৪ কোটি ৫০ লাখ ডোজ লাগবে। ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ৩০ লাখ ডোজ পাওয়া গেছে। তারা সব শিশুর জন্য ডোজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের সফলতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা ও ইউরোপ করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেও বাংলাদেশ পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে সফলভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। কোভিড নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। দেশের মানুষকে ৩০ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে। দেশে ২৯ হাজার মানুষ মারা গেছে। অথচ আমেরিকায় ১১ লাখ এবং ভারতে ১০ লাখ মানুষ কোভিডে মারা গেছে। ইউরোপের প্রতিটি দেশে দুই থেকে তিন লাখ করে মানুষ মারা গেছে।’

জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ জ্বালানি নির্ভরশীল রাষ্ট্র। আমাদের জ্বালানি আমদানি করতে হয়। জ্বালানির দাম বিশ্বে তিনগুণ বেড়ে গেছে। জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দেশে জ্বালানি নেই। তবে বাংলাদেশে জ্বালানি আছে। যারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেন না, তাদের ভবিষ্যৎ ভালো হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করেছেন।’

সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ সারাবিশ্বে প্রভাব ফেলেছে। সারাবিশ্বে খাদ্য, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে। পাশের দেশ শ্রীলঙ্কায় সবকিছু বন্ধ হয়ে আছে। সেখানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সার ও খাদ্য নেই। আমেরিকা ও ইউরোপেও এর প্রভাব পড়েছে। তারা রেশনিং শুরু করেছে, ব্যাংকে সুদ বাড়িয়েছে। সমস্যা যখন পৃথিবীতে আসে, তখন সবখানেই তার হাওয়া লাগে। বিশ্বের এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। সে কারণে আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের সবকিছুতে মিতব্যয়ী হতে হবে। আমাদের অপ্রয়োজনীয় আমদানি বন্ধ করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে। সমস্যা যখন হবে, তখন সবাইকে নিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। ইউক্রেন সারাবিশ্বে খাদ্য সরবরাহ করে থাকে। সেই দেশে যুদ্ধ হচ্ছে।’

দেশে কৃষকের সারের প্রাপ্ততা নিশ্চিতকরার জন্য গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘এই সরকার জিনিসের দাম, জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে বলে বিরোধী দল অপপ্রচার করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে বলেই দেশে জ্বালানির দাম বেড়েছে। তবে এটা চিরস্থায়ী নয়, অল্পদিনেই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে আসবে এবং বাংলাদেশেও দাম কমে আসবে। বাংলাদেশে কোনও সমস্যা হবে না, দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই। সরকার হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে, তিন-চার ধাক্কা দিলে হিমালয় পর্বত পড়ে যাবে না।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //