একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়। আমি দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে এসেছি, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য এসেছি। দেশের অর্থ অন্যকে দিয়ে সেখান থেকে দুর্নীতি করব, এই মানসিকতা আমাদের নেই। এই শিক্ষা বাবা-মা আমাদের দেয়নি।

আজ রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালশী বালুর মাঠে মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের সুবিধার দিকে লক্ষ্য করেই পরিকল্পনা করি। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে বিভক্ত করে দেই। বিভক্তির পর দুই সিটিতে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা খরচ করে নানা উন্নয়ন প্রকল্প করা হয়েছে। দক্ষিণে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিয়েছি। উত্তরেও করে দেবো। উর্দুভাষীদের জন্যও হবে। একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না।

জায়গা পেলেই অনেকে ভবন নির্মাণ করেন। এর সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের কিছু লোক আছে, একটু জায়গা খালি পেলেই ভবন নির্মাণ করতে আসে। এই যে কালশী বালুর মাঠ, এটা বিনোদন পার্ক হবে। এখানে ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার ব্যবস্থা হবে। শিশুদের জন্য হবে পার্ক। যুবদের জন্য ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার ব্যবস্থা এবং প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা থাকবে। প্রবীণদের জন্য হাটার ব্যবস্থাও রাখা হবে। তবে এই মাঠ যেন মাঠ থাকে।

এসময় পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। দুর্নীতির মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিল। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার প্রতিজ্ঞা করি। আমি ধন্যবাদ জানাই আমার দেশের মানুষকে। তারা আমার পক্ষে ছিল। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, আমরা ইচ্ছা করলে পারি।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন বাঙালিকে কেউ দাবাইয়া রাখতে পারবা না। কেউ পারেনি, পারবেও না, ইনশাআল্লাহ।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সে সময় জার্মানিতে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। জনগণের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি।’

তিনি বলেন, ‘খুনিদের পুরস্কার করা হয়। যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় ছিল, তা সত্ত্বেও আমি একটি লক্ষ্য নিয়ে এই দেশে ফিরে আসি। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। সেটাই ছিল আমার লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘৯৬ সালে আমরা প্রথম সরকার গঠন করি। তখন ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হত। ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাই।’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, শহীদ দিবস। মাতৃভাষায় কথার অধিকার অর্জনের জন্য আমার দেশের ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রক্তের অক্ষরে লিখে দিয়েছিল, মাকে মা বলে ডাকতে চাই। আমি আজকে সেই সকল ভাষা শহীদদের আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //