নির্বাচনে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিলে ৭ বছরের জেল

নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের পেশাগত কাজে বাধা দিলে দুই থেকে সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রেখে ‘প্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত এ আইনটির চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার সময় আরও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস বাকি। চলমান নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপিসহ সমমনা একাধিক দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে আরপিও সংশোধন হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না। অন্তত ১৫ থেকে ১৭টি ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই করণিক সংশোধনী।

নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা জানিয়েছেন, গেজেট প্রকাশের পরও ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে দিতে শুরুতে আপত্তি জানালেও পরে একমত হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তৎকালীন নূরুল হুদা কমিশন বলেছিল, নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর ইসির হাতে কোনো ক্ষমতা নেই। গেজেট প্রকাশের পর আদালতে মামলা দায়ের করা ছাড়া প্রতিকার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ওই নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সাবেক সিইসি।

প্রস্তাবে ইভিএমে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার আঙুলের ছাপে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেওয়ার জন্য ব্যালট ইস্যুর বিধান আরপিওতে যুক্তের প্রস্তাব করেছিল ইসি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে তা সংশোধনী প্রস্তাবে থাকছে না। বিষয়টি সার্কুলার জারি করার বিদ্যমান যে প্রথা রয়েছে, তাই বহাল থাকছে। 

এ ছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিলখেলাপিরা তাদের খেলাপি টাকা পরিশোধ করলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। বিদ্যমান আইনে সাত দিন আগে এসব পরিশোধের বিধান রয়েছে।

ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির প্রভাব বিস্তার করলে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তা কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন বন্ধ করবেন, তার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে সংশোধনীতে। 

পাশাপাশি ব্যালট পেপারের পেছনে অফিসিয়াল সিল ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর না থাকলে তা গণনায় আনা যাবে না– এমন বিধান স্পষ্ট করা হয়েছে। ভোটগণনার বিবরণী ও ব্যালট পেপারের হিসাব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার এজেন্টকে দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ভোট গ্রহণ শুরুর আগের ৪৮ ঘণ্টা ও পরের ৪৮ ঘণ্টায় কেউ বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ, অস্ত্র ও পেশিশক্তি প্রদর্শন এবং ভোট গ্রহণ কাজে নিয়োজিতদের ভয় দেখালে সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনিম্ন দুই বছর জেল-জরিমানার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //