রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছে চীন: প্রধানমন্ত্রী

চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা এবং তাদের সমস্যার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে এর সমাধানে আমি চীনের সহযোগিতা কামনা করি। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ ও চীনের পারস্পরিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে উভয় পক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করি।’

আজ রবিবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণভবনে চীনে তিন দিনের সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০ জুলাই বিকেলে বেইজিং-এ গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর সঙ্গে আমি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। ২০১৬ সালে চীনের মহামান্য রাষ্ট্রপতির শি জিনপিং-এর বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের সম্পর্ক ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ পর্যায়ে উন্নীত হয়, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করে। ১০ জুলাই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শি জিনপিং অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণ-এ ৪টি ক্ষেত্রে সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। এই ৪টি প্যাকেজের আওতায় চীন বাংলাদেশকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বৃহদাকার অবকাঠামো বিনির্মাণে চীনা সহায়তার জন্য আমি তার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমিতে শিল্প বিনিয়োগ করার জন্য প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মাধ্যমে আমি চীনা উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানাই। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইসিটির বিশেষায়িত অঞ্চলে চীনকে বিনিয়োগের অনুরোধ করি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি চীনের অব্যাহত সমর্থনের কথা উল্লেখ করে চীনের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এখানে অধিকতর বিনিয়োগের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন। আমাদের এ ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার সম্পর্ক সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব পর্যায়ে উন্নীত হয়।’

তিনি বলেন, ‘আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতি সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়, এটিকে মূলনীতি হিসেবে ধরে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফলভাবে তার কূটনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে চলছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা, ফিলিস্তিন সংকট, মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন, জাতিসংঘ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও চীন পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রই নয়, ঐতিহ্যগত দিক থেকেও এশীয় দেশ হিসেবে আমাদের মধ্যে দীর্ঘ সময়ের সংযোগ রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গবেষণা, শিক্ষা, আইসিটি, প্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //