জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করেছে সরকার। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
গতকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এর আগে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উচ্চ পর্যাযের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছিল সরকার।
কিছুদিন আগে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘আমার 5C হলেই চলবে, স্যার 10C রাখব’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়ে। সেখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং একই মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনে ঘুষের বিষয়টি এসেছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমেও এ নিয়ে আলোচনা হয়।
উপদেষ্টা পরিষদের কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ডিসি নিয়োগসংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে দৈনিক কালবেলাসহ বিভিন্ন দৈনিক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩ অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এছাড়া কমিটি প্রয়োজনে আরও সদস্য যুক্ত করতে পারবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
ক্ষমতার পটপরিবর্তানের পর মাঠ প্রশাসনেও ব্যাপক রদবদল আনে অন্তর্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় ৫৯ জেলায় নতুন কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন আগের সরকারের আমলে ‘বঞ্চিত’ উপসচিবরা; শেষ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যালয় ত্যাগ করেন।
নতুন দায়িত্ব পাওয়া ৫৯ জন জেলা প্রশাসকের মধ্যে আটজনকে পরদিনই প্রত্যাহার করে নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে চার জনের কর্মস্থল বদলে দেওয়া হয়। আর একজন উপসচিবকে করা হয় ওএসডি। হট্টগোলের ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় কমিটি।
এর মধ্যে এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক এবং ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু চিরকুট উদ্ধারের খবর দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। সেই প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড় তৈরি হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন ডেকে জাতীয় দৈনিকের ওই প্রতিবেদনকে ‘গুজব’, ‘সম্পূর্ণ ভুয়া’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যায়িত করেন জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমান। এরপর আরেকটি প্রতিবেদনে মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধেই আর্থিক লেনদেন নিয়ে আলোচনার অভিযোগ তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকটি।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ডিসি নিয়োগ দুর্নীতি উপদেষ্টা পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকার সচিবালয় ডিসি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে উপদেষ্টা কমিটি
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh