পাচার অর্থ ফেরাতে বিদেশি ল ফার্ম নিয়োগের সিদ্ধান্ত

দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক ‘ল ফার্ম’ নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল রবিবার (১০ নভেম্বর) ব্যাংকের পর্ষদ সভায় এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।

সিদ্ধান্ত হয়েছে, যোগ্য ল ফার্ম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংক ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা নেবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি দেশে বেশি টাকা পাচার হয়েছে। সেসব অর্থ উদ্ধারে এরইমধ্যে সেসব দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

‘বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও কোম্পানির নাম উল্লেখ করে তাদের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখন সার্বিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হবে। সেই সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আলাদা একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।’

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থ পাচারের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। সেজন্য বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করা হয়।

গত ২৮ অগাস্ট প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পুনরুদ্ধার কাজে সরকার ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা পর্ষদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ, পুলিশের সিআইডি ও দুদকের যৌথ সহায়তা নিচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, দেশে-বিদেশে পাচার ও আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ লক্ষ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃত পরিমাণ কত তা নিরূপণে সরকার কাজ করছে।

‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তাদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাত করেছেন এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন, যার সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান রয়েছে।’

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

কেবল ব্যক্তি নয়, অর্থ পাচার প্রক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছে দেশের একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) হিসাব বলছে, গত প্রায় দেড় যুগে দেশীয় ১৯টি ব্যাংকের মাত্র ২৪টি ঋণ কেলেঙ্কারির মাধ্যমেই প্রায় একশ হাজার কোটি টাকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh