শুধু এক রাত নয়। রাতের পর রাত। ঘুমালেই ডাকতে থাকে নাক। পাশে কেউ শুতেও চায় না। অস্বাভাবিক নাক ডাকার কারণে কখনো ভেঙে যায় ঘুম। মনে হয় যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে। তারপর সারা দিন ঝিমুনি ভাব।
ঘরোয়া উপায়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। ঘুম স্বাভাবিক করা সম্ভব। নাক ডাকা বন্ধ করারও উপায় রয়েছে।
কেন নাক ডাকে?
১. ঘুমানোর সময় নাক ও গলা দিয়ে ঠিকমতো শ্বাস বের হতে না পারলে গলা ও নাকের আশপাশের টিস্যুগুলো কাঁপতে থাকে। ফলে গর্জন বেরিয়ে আসে ক্ষণে ক্ষণে।
২. শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট টিস্যু জমে গেলে ও পেশি দুর্বল হলে নাক ডাকা শুরু হতে পারে।
৩. বয়সের সাথেও নাক ডাকার সম্পর্ক আছে। যত বয়স বাড়ে, কণ্ঠনালি সরু হতে থাকে। ফলে নাক ডাকা শুরু হয়।
৪. নাকে পলিপ থাকলে বা সাইনাসের সমস্যা থাকলেও নাক ডাকা শুরু হয়।
৫. অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান ও নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেলে নাক ডাকা শুরু হয়।
৬. লম্বা টান টান হয়ে শুলেও নাক ডাকেন অনেকে। গলার কাছের পেশিগুলো আলগা হয়ে যায়। ফলে গলা থেকে নিঃশ্বাস বের হতে অসুবিধা হয়।
৭. জন্মগত কারণে শ্বাসযন্ত্র সরু হলে, চোয়ালে কোনো সমস্যা থাকলে, থাইরয়েডের সমস্যা বা গ্রোথ হরমোনের আধিক্যজনিত রোগেও নাক ডাকতে পারে।
৮. শারীরিক গঠনের কারণে মহিলাদের থেকে পুরুষরা বেশি নাক ডাকে। সাধারণত মহিলাদের তুলনায় পুরুষের শ্বাসনালি সরু হয়।
৯. গর্ভবতী নারীরা ঘুমের মধ্যে নাক ডাকলে বিপদ হতে পারে গর্ভস্থ সন্তানেরও। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে, গর্ভবতী নারীরা সপ্তাহে অন্তত তিনরাত নাক ডাকলে তাদের সন্তানের ওজন তুলনায় কম হয়।
পরিত্রাণের উপায় কী?
১. যাদের নাক বন্ধ থাকে বা সর্দি লেগে থাকে, তারা নাক পরিষ্কার করে ঘুমাতে যান। ঘরের তাপমাত্রা আর্দ্র রাখুন।
২. ঘুমের দু’ঘণ্টা আগে থেকে চা, কফি, অ্যালকোহল বা মসলা ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
৩. চিৎ হয়ে শোবেন না, তাহলে জিহ্বার পেছন দিক টাগরায় লেগে বেশি নাক ডাকে। সুবিধামতো যে কোনো পাশে কাত হয়ে ঘুমান। একটি অতিরিক্ত বালিশ নিয়ে মাথা একটু তুলে শোবেন। এতে নাক ডাকা থেকে রেহাই মিলবে।
৪. স্থূলকায়দের নাক ডাকার প্রবণতা বেশি থাকে। স্বাস্থ্যকর খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৫. যাদের ভালো ঘুম হয় না, তারা বেশি নাক ডাকেন। দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।
৬. পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এতে নাকও হাইড্রেটেড থাকবে। ফলে নাক কম ডাকে।
৭. নাক ডাকা বন্ধে শরীরের দুটি অঙ্গ- জিহ্বা ও গলার পেশি শক্তিশালী করতে হবে। এ জন্য দরকার ব্যায়াম। চোয়ালের নিচের অংশ ওপরের অংশ থেকে সামনে প্রসারিত করুন। আবার আগের অবস্থানে নিয়ে যান। টানা ১০ বার কাজটি করুন। এভাবে দিনে ৭ থেকে ১০ বার ব্যায়ামটি করতে পারেন। জিহ্বার ব্যায়াম করতে পারেন কথা বলে। কোনো একটা বাক্য ধীরে ধীরে বলে যান।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : নাক ডাকেন? সাবধান হোন এখনই নাক ডাকা ঘুম শ্বাস
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh