বন্যায় সুস্থ থাকতে করণীয়

প্রকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে বন্যা অন্যতম। বর্তমানে সুনামগঞ্জ, সিলেট এবং উত্তরবঙ্গেরও অনেক জেলাসহ দেশের আরও কিছু অঞ্চল বন্যাকবলিত।  যে কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। বন্যা মোকাবেলায় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে সবার আগে। এ জন্য নিতে হবে সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ। যেমন-

বিশুদ্ধ পানি

বন্যার সময় পানি ভালোমতো ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করাসহ গৃহস্থালির অন্যান্য কাজেও ব্যবহার করতে হবে। বন্যার পানিতে টিউবওয়েল তলিয়ে গেলে এক কলস পানিতে তিন-চার চা চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে টিউবওয়েলের ভেতর এই পানি ঢেলে দিন। এবার আধা ঘণ্টা রেখে এরপর একটানা আধা ঘণ্টা চেপে পানি বের করে ফেলে দিলে সেই পানি খাওয়ার উপযোগী হয়। 

ডায়রিয়া প্রতিরোধে

বন্যা উত্তর প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হলো ডায়রিয়া। এ জন্য খাওয়ার আগে এবং পায়খানা করার পর হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ডায়রিয়া শুরু হলে পরিমাণ মতো খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে। খাওয়ার স্যালাইন না থাকলে বিকল্প হিসেবে লবণ-গুড়ের শরবত খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি ভাতের মাড়, চিঁড়ার পানি, ডাবের পানি, কিছু পাওয়া না গেলে শুধু নিরাপদ পানি খাওয়ানো যেতে পারে। 

খাবার গ্রহণে সতর্কতা

বন্যার সময় পচা-বাসি খাবার খেতে বাধ্য হয় অসংখ্য মানুষ। খিচুড়ি খাওয়া এ সময় স্বাস্থ্যোপযোগী। খাবার প্লেট সাবান ও নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। পানি বেশি খরচ হয় বলে অনেকে প্রথমে একবার স্বাভাবিক পানিতে থালাবাসন ধুয়ে তারপর ফুটানো পানিতে ধুয়ে নেন; কিন্তু এটা ঠিক নয়। এতে থালাবাসনে অনেক ধরনের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।

মলত্যাগে সতর্কতা

বন্যার সময় যেখানে-সেখানে মলত্যাগ করা উচিত নয়। এতে পেটের পীড়া ও কৃমির সংক্রমণ বেড়ে যায়। সম্ভব হলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করতে হবে এবং মলত্যাগের পরে সাবান বা ছাই দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। মলত্যাগের সময় কখনো খালি পায়ে থাকলে বক্রকৃমির জীবাণু শরীরে সংক্রমিত হয়। 

দুর্ঘটনা থেকে সাবধান

সাধারণত বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে যাওয়া, সাপ ও পোকামাকড়ের কামড়ের ঘটনাগুলো বেশি ঘটে। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেলে বা পানিতে পড়ে থাকতে দেখলে তা স্পর্শ না করে বিদ্যুৎকর্মীদের জরুরিভাবে খবর দিতে হবে। সাপ ও ইঁদুর তাদের আবাস হারিয়ে শুকনো স্থানে মানুষ ও গবাদি পশুপাখির সঙ্গে অবস্থান নেয়। এ জন্য সাপ ও ইঁদুরে কাটার পরিমাণ বেড়ে যায়। হাসপাতালে জরুরিভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম এবং টিটেনাস প্রতিষেধক দিতে হবে। ইঁদুরে কাটলেও অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //