বিশ্বে মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ার প্রথম টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপের ভালনেভা কোম্পানি টিকাটি তৈরি করেছে। ইক্সচিক নামে এই টিকা বাজারজাত হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এই টিকা অনুমোদনের ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলেছে, ১৮ এবং তার বেশি বয়সী মানুষদের মধ্যে যারা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন, তাঁদের জন্য এ টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
চিকুনগুনিয়া একটি ভাইরাস, যা মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের উপসর্গ হলো জ্বর ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আমেরিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বেশি। চিকুনগুনিয়াকে ‘উদীয়মান বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে এফডিএ।
এফডিএ বলেছে, নতুন নতুন অঞ্চলে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস ছড়াচ্ছে। এতে বিশ্বব্যাপী এ রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। গত ১৫ বছরে ৫০ লাখের বেশি মানুষ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
এফডিএর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পিটার মার্কস এক বিবৃতিতে বলেন, চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে মারাত্মক রোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক কিংবা আগে থেকে শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন-এমন মানুষের সমস্যা হতে পারে।
জীবন্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়া চিকুনগুনিয়া ভাইরাস ব্যবহার করে ইক্সচিক টিকাটি তৈরি করা হয়েছে। এ টিকার একক ডোজ দেওয়া হয়।
উত্তর আমেরিকায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের শরীরে চিকুনগুনিয়ার টিকার পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মাথাব্যথা, অবসাদ, পেশি ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, জ্বর ও বমি বমি ভাব হতে দেখা গেছে।
যাদের শরীরে ইক্সচিক টিকাটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, তার মধ্যে ১ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের মধ্যে তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।
বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া প্রথম শনাক্ত হয় ২০০৮ সালে, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ২০১১ সালে ঢাকার দোহার উপজেলাতেও এই রোগ শনাক্ত হয়েছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh