জন্মনিয়ন্ত্রণের কোন পদ্ধতি সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর

জন্মনিয়ন্ত্রণের নানা রকমের পদ্ধতি আছে। তবে একেক দম্পতির জন্য একেক রকম পদ্ধতি ভালো। সবার চাহিদার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ পরামর্শ বা কাউন্সেলিং, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা এবং সঠিক পরিবার পরিকল্পনাসেবার দরকার হয়। সবার জন্য একই পদ্ধতি কখনো প্রযোজ্য হতে পারে না। বিষয়ে কয়েকটি পদ্ধতি জেনে নিন...

পুরুষদের জন্য ভেসেকটমি আর নারীদের ক্ষেত্রে টিউবাল লাইগেশন বা টিউবেকটমি সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এ পদ্ধতি কার্যকর তাদের ক্ষেত্রে করা হয়, যাদের পরিবার সম্পূর্ণ আছে অর্থাৎ তাদের আর ভবিষ্যতে সন্তানের প্রয়োজন নেই।

যারা ২ বছর বা পাঁচ বছরের মধ্যে বাচ্চা নিতে চান না, বিয়ের পর একটু সময় নিয়ে বাচ্চা নিতে চান, তাদের ক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার বড়ি নিরাপদ। বিভিন্ন ধরনের মুখে খাওয়ার বড়ি বা পিল আছে, সেটা অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শমতো গ্রহণ করতে হবে। কারণ অনেকের উচ্চরক্তচাপ থাকতে পারে, তীব্র মাথাব্যথার সমস্যা থাকতে পারে বা মাইগ্রেন, কোনো ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে, সেই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শমতো সেবন করতে হবে।

আইইউডি (intrauterine contraceptive device), ইমপ্ল্যান্ট ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে নারীদের জন্য, যা একজন চিকিৎসক নারীর স্বাস্থ্য চেকআপ করে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি দেখভাল করে।

স্বল্পমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে মুখে খাওয়ার পিল, ইনজেকশন ইত্যাদি।

পেশাজীবী-কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চিন্তা-ভাবনা করে শুরুতেই পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ অবাঞ্ছিত গর্ভপাত স্বাস্থ্যের জন্য কুফল বয়ে আনে।

যখন সন্তান নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে, চিকিৎসকের পরামর্শমতো চেকআপ করে সন্তান নিতে হবে। কারণ একটি সুস্থ সন্তান উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়।

কেউ নতুন বিয়ে করেছেন, এখনই সন্তান নিতে যাচ্ছেন না। অথবা বিয়ের কয়েক বছর পার হয়ে গেছে তবু আরও একটু দেরিতে বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন; হয়তো জীবনটা আরেকটু সাজিয়ে কর্মক্ষেত্রে আরও কিছু সময় কাজ করে সময় নিয়ে বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন। তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

 

যাদের উচ্চরক্তচাপ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার পিল স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।

যাদের বয়স ৩৫-এর বেশি, এক-দুটি সন্তান রয়েছে, তারা এখন বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন না। তাদের ক্ষেত্রে কপার-টি বা স্থায়ী পদ্ধতি কার্যকর।

একটা তিন বছর, একটা পাঁচ বছর মেয়াদি। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শমতো পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করতে হবে। নারীদের জন্য কাউন্সেলিং করে সব বিবেচনা এনে কোনটি তার শরীরের জন্য উপযোগী তা পর্যালোচনা করে উপদেশ দেওয়া হয়।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার নির্ভর করে স্বাচ্ছন্দ্য, দৈনন্দিন জীবন এবং শারীরিক অবস্থার ওপর।

মিক্সড বড়ি ইস্ট্রোজেন প্রজেস্টেরন দুটি থাকে বা প্রজেস্টোরন বড়ি বা মিনি পিল। 

স্থায়ী পদ্ধতি ভ্যাসেকটমি বা লাইগেশন; সুবিধামতো যে কোনো একটি নেওয়া যায়। তবে সেটা নির্ভর করবে তার শারীরিক অবস্থার ওপর।

কর্মজীবী নারীরা একটু সময় নিয়ে বাচ্চা নিতে চান অথবা একটি বাচ্চা নেওয়ার পর ৩ থেকে ৪ বছরের সময় নিয়ে নিতে চান।

তাদের ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে জটিলতা কমানোর জন্য আবশ্যিকভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে, যেন অবাঞ্চিত গর্ভপাত না ঘটাতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি শহর থেকে গ্রামে প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের  কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসকের পরামর্শমতো নারীদের শরীরের উপযোগী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে সুস্থতা প্রয়োজন।