মানবদেহের প্রতিটি কোষের কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত রক্তসঞ্চালন প্রয়োজন। আমাদের দেহে প্রায় ৬০ হাজার মাইল রক্তনালি রয়েছে। যেগুলো আমাদের হৃদপিণ্ডসহ শরীরের সব অঙ্গপ্রতঙ্গে রক্ত সরবরাহ করে। যদি কোনো কারণে শরীরের রক্ত সঞ্চালন কমে যায় বা কোনো রক্তনালী ব্লক হয়ে যায়; তাহলে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রক্তসঞ্চালন বাড়ে বা ঠিকঠাক মতো হয়, এ জন্য কিছু চর্চা প্রয়োজন।
ধূমপান বর্জন করুন: সিগারেটের প্রধান উপাদান নিকোটিন। এই নিকোটিন রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পাশাপাশি রক্তকে গাঢ় ও ভারী করে দেয়। এ কারণে নালি দিয়ে রক্ত স্বভাবিক প্রক্রিয়ায় চলাচল করতে পারে না। তাই যতো দ্রুত সম্ভব ধূমপান ত্যাগ করুন।
রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: অতিরিক্ত রক্তচাপ বেড়ে গেলে আর্টেরিওকোলেসিস রোগ হয়। যা রক্ত চলাচলের জন্য ধমনীর রাস্তাগুলো বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। তাই রক্তচাপের পরিমাণ ৮০-১২০ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। তবে বয়স ও ওজন অনুযায়ী মাত্রা ভিন্ন হতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করুন: রক্তের প্রধান উপাদান পানি। পানির ঘাটতি হলে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকবে না। তাই আবহাওয়া ও পরিবেশের তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
কাজের মধ্যে বিরতি নিন: একটানা বসে থাকলে অনেক সময় রক্ত চলাচলের বিঘ্ন ঘটে। এক্ষেত্রে হাত ও পায়ের পেশীগুলো অসাঢ় হয়ে থাকে। এ কারণে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে এবং রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাই কাজের মধ্যেও নির্দিষ্ট সময় পরপর বিরত নিন, উঠে দাঁড়ান। হাঁটাহাঁটি করুন।
শরীরচর্চা করুন: শরীরচর্চায় বাড়ে রক্তসঞ্চালন। দৌড়ানো, হাঁটা, দড়িলাফ, সাঁতার, সাইকেল চালানোসহ নানা ব্যায়াম করতে পারেন।
স্কোয়াট করুন: দাঁড়ানো অবস্থায় কোমড়ে দুই হাত রেখে সোজা হয়ে অর্ধেক বসার চেষ্টা করবেন। চেয়ারের বসার মতো করে অদৃশ্যভাবে বসে থাকার মতো করে এই অনুশীলনটি করতে হবে। এতে করে শরীরের রক্তে সুগারের মাত্রা কমে ও পিঠ ব্যথা সেরে যায়।
সঠিক মোজা নির্বাচন: আঁটসাঁট মোজা পরুন। পায়ের পেশি সচল রাখুন। দাঁড়ানো অবস্থায় পায়ের পেশি ‘পাম্প’ করুন। বসা অবস্থায়ও পায়ের পেশি বিভিন্ন দিকে নাড়ান।
প্রাণীজ খাবার কম খান: মাংস, পনির ও অন্যান্য প্রাণীজ উৎস থেকে ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ পাওয়া যায়। ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ হলো এমন ধরনের স্নেহ পদার্থ, যা কক্ষ তাপমাত্রায় জমাট বেঁধে থাকে। এসব খাবার গ্রহণ করলে রক্তে খারাপ চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এসব খাবারের পরিবর্তে ফলমূল ও শাকসবজি বেশি খান। অতিরিক্ত লবণও এড়িয়ে চলুন।
ওটস: ওটসের মধ্য রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহরোধী উপাদান। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে কাজ করে। দুধ ও ফলের সঙ্গে ওটস মিশিয়ে খেতে পারেন।
উষ্ণতার পরশ নিন: উষ্ণতায় রক্তনালি প্রসারিত হয়। তাই হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন। আবার হালকা পানীয়ও গ্রহণ করতে পারেন।
গ্রিন টি: গ্রির টি দেহের কার্যক্রমকে উদ্দীপিত করে। এটি রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে প্রশস্ত করে যার ফলে রক্ত প্রবাহের গতিও বাড়ে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : স্বাস্থ্য শরীর ধূমপান রক্ত সঞ্চালন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh