সবুজের ছোঁয়া ঘরের মধ্যে

শহরের জীবনে ইটপাথরের সান্নিধ্য খুব বেশি। দিনদিন দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে গাছপালা বা প্রকৃতির ছোঁয়া। আপনি সবুজ প্রেমী হলে নিজের ঘরকে সাজাতে পারেন প্রাকৃতিক সাজে। 

একটু সবুজের ছোঁয়াই ঘরে নিয়ে আসতে পারে প্রশান্তির অনুভূতি। কেননা গাছ একইসাথে যেমন ঘরকে সুন্দর করে তোলে, তেমনি ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে। 

শুধু কি তাই? বিভিন্ন ধরনের গাছ দিয়ে ঘর সাজিয়ে প্রকাশ করতে পারেন নিজের নান্দনিক রুচিশীলতা।

সাধারণত ছায়ায় ভালো জন্মায় এমন গাছই ঘরের জন্য নির্বাচন করা উচিত। তবে কোথায় কেমন গাছ রাখলে ভালো দেখাবে, সেদিকেও দৃষ্টি দেয়া দরকার। যেমন ড্রয়িং রুমের টেবিলে দু-একটি বনসাই প্ল্যান্ট রাখলেও বাইরে জায়গা নেই? তাহলে ঘরের ভেতরেই সাজাতে পারেন। বসার ঘর, শোবার ঘর কিংবা ঘরের বারান্দা সাজিয়ে ফেলেন শোভাবর্ধনকারী গাছের সমারোহে। 


যেসব গাছ দিয়ে ঘর সাজানো হয়, তাদের বলা হয় ‘ইনডোর প্ল্যান্ট’। এরা সাধারণত অল্প আলো ও সামান্য যত্নেই বেঁচে থাকতে পারে। ঘরের শোভাবর্ধনকারী গাছ হিসেবে সাধারণত সিলভার কুইন, বিভিন্ন ধরনের অর্কিড ও ফার্ন, পাতাবাহারের বিভিন্ন প্রজাতি বেশি ব্যবহার হয়। ঘরের বিভিন্ন স্থানের আকার ও উচ্চতা অনুযায়ী সাজিয়ে রাখা যায় এসব গাছ। যেমন, ঘরের দরজা বা লিফটের সামনে রাখা যায় মাঝারি আকৃতির গাছ (মানিপ্ল্যান্ট, ড্রাসিনা), আরেকটু বড় ধরনের গাছ রাখা যায় বসার ঘরের কর্নারে (পাতাবাহার, অর্কিড), অপেক্ষাকৃত ছোট গাছ রাখা যায় শোবার ঘরে (অর্কিড, ফার্ন, ক্যাকটাস), বিভিন্ন প্রজাতির পাম, পাতাবাহার, তুলসি রাখা যায় খাবার ঘরে। ছোট টেবিলের ওপর রাখতে পারেন ক্যাকটাস বা বনসাই। ঘরের কোণায় টবে লাগানো গাছ ও বারান্দা সাজানো যায় যেকোনো ধরনের গাছ দিয়ে। সেক্ষেত্রে পোলিওনিয়া, পুলক্রো, ফিলোডেলপ্রন, সিলোন গোল্ড ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারো। 

ছোট ছোট মাটি, প্লাস্টিক বা বাঁশের তৈরি টবে করে জানালা ও বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। প্লাস্টিক বা টিনের কনটেইনারে পানি ভরে ঘরের কর্নারে রাখতে পারেন কচুরিপানা, শাপলা বা পদ্ম।

ঘরের আসবাব ও অন্যান্য সামগ্রীর সাথে মানানসই উদ্ভিদ ও টব বাছাই করতে হবে। তাছাড়া অবস্থান ও আয়তনের কথাও বিবেচনায় রাখা উচিত। এমন অনেক গাছ আছে, যেগুলো ছায়ায় বা সরাসরি সূর্যের আলো ছাড়াও বেঁচে থাকে। তবু ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকলে ভালো। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সুবিধার্থে ঘরের আসবাবপত্র ও গাছের মাঝখানে যথেষ্ট পরিমাণ ফাঁকা জায়গা রাখতে হবে। বিশৃঙ্খল বা এলোমেলো অবস্থা এড়াতে আগেই পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী ঘর সাজাতে হবে। 


গাছ লাগানোর জন্য মাটির টব পাবেন যে কোনো নার্সারি অথবা মাটির জিনিসের দোকানে। এ ছাড়া বিভিন্ন ঘর সাজানোর দোকান যেমন যাত্রা, আড়ং, আইডিয়াল ক্র্যাফট, হোমটেক্স ইত্যাদিতে বিভিন্ন আকারের দেশি-বিদেশি অনেক রকমের মাটি, প্লাস্টিক বা সিরামিকের আউটার পট পাওয়া যায়।

ব্র্যাক নার্সারি, বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের কাছে, মিরপুর-২ নম্বর স্টেডিয়াম-সংলগ্ন মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে, আগারগাঁও আইডিবির পাশে ও ধানমন্ডির বিভিন্ন নার্সারিতে হাউসপ্ল্যান্ট পাওয়া যাবে। তাছাড়া বিভিন্ন হোম ডেকরের দোকানেও এখন সুন্দর সুন্দর হাউসপ্ল্যান্ট কিনতে পাওয়া যায়।

হাউসপ্ল্যান্ট গাছের কোনো নির্দিষ্ট দাম নেই। ১০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা পর্যন্ত দামের গাছ পাওয়া যাবে। মানিপ্ল্যান্ট, পামজাতীয় গাছ ১০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তবে এলাকাভেদে এই দাম কমবেশি হতে পারে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //