সাজসজ্জায় বাঙালির জুড়ি নেই। নিজেকে পরিপাটি রাখতে তারা যেমন পছন্দ করে, তেমনই আন্তরিক গৃহসজ্জায়। উঠানে হাতে আঁকা আল্পনা থেকে শুরু করে গৃহের প্রতিটি কোণ পরিপাটি করে তুলতে পটু এ দেশের মানুষজন। এ ছাড়া অতিথি বা উৎসব মৌসুমে তো কথাই নেই।
ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে প্রথম প্রাধান্য পাবে ঘরের দেওয়াল ও মেঝে। শুরুতেই ঘরের প্রতিটি দেওয়াল রং করার পাশাপাশি ফ্লোরে টাইলসে নকশার বিন্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে কক্ষগুলো দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠবে। মেঝে ও দেওয়াল আরো আকর্ষণীয় করে মেলে ধরতে চাইলে উজ্জ্বল রঙের এলইডি লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি দেওয়ালে বিভিন্ন ছবি, পেইন্টিং ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি রুচির প্রকাশ ঘটবে।
ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির আরেক উপাদান দরজা-জানালার পর্দা, বিছানার চাদর, কুশন ও কাভার। শোবার ঘরে ঢুকে প্রথমে চোখে পড়ে বিছানার চাদর। তাই এগুলো রুচিসম্মত হওয়া বাঞ্ছনীয়। পর্দা ও বিছানার চাদর কেমন হবে তা নির্ভর করে ঘরের আয়তন ও আসবাবের ওপর। ঘর প্রশস্ত হলে হালকা রঙের চাদর ব্যবহার করতে পারেন। এতে ছিমছাম দেখাবে। ছোট ঘরে হালকা ব্লক কিংবা প্রিন্টের চাদর বেশি মানানসই। চাদরের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। তাতে সামঞ্জস্য সৌন্দর্য ঘরজুড়ে বিরাজ করবে।
ঘরসজ্জায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আসবাবপত্র। কক্ষের ওপর ভিত্তি করে ব্যবহার করতে হবে। বড় ঘরের জন্য বড় ও জমকালো ফার্নিচার এবং ছোট ঘরের জন্য ছিমছাম ও মাল্টিপারপাস ফার্নিচার বেছে নেওয়া উচিত। বসার ঘর আসবাবে ঠেসে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। বরং অল্পের ওপর দিয়ে যাওয়া ভালো। টিভি কেবিনেট রাখুন। এর দুই পাশে বইয়ের তাক রাখতে পারেন। বাকি জায়গায় সোফা, ডিভান ও অন্যান্য বসার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। চেষ্টা করবেন সোফার সামনে দুই থেকে আড়াই ফুট জায়গা খালি রাখতে।
খাবার ঘরের জন্য প্রয়োজন বড়সড় একটি আয়তকার টেবিল। তবে কক্ষ ছোট হলে গোল বা চার কোনার টেবিল ব্যবহার করুন। খেয়াল রাখতে হবে টেবিলের চারপাশে যেন তিন-চার ফুট খালি জায়গা থাকে। খাবার টেবিলে রাখতে পারেন চিনামাটি ও মাটির বাসনকোসন, যা আপনার শৈল্পিক সত্তাকে তুলে ধরবে। এ ছাড়া খাওয়ার টেবিলে ফুলদানি রাখতে পারেন। এতে করে সৌন্দর্য বাড়বে।
দিন শেষে ঘুম সকল ক্লান্তি দূর করে এনে দেয় রাজ্যের প্রশান্তি। সে কারণে গৃহসজ্জায় বেশি গুরুত্ব পায় শোবার ঘর। এ ঘরের আসবাব সাজানো হয় খাটকে কেন্দ্র করে। শোবার ঘরের দেওয়াল ঘেঁষে রাখতে পারেন আলমারি ও কেবিনেট ড্রেসিং টেবিল। খেয়াল রাখতে হবে ড্রেসিং টেবিল যেন আলোর বিপরীতে না থাকে।
পাশাপাশি বাড়িতে ফাঁকা জায়গা থাকলে ফুল চাষ করতে পারেন। রান্নাঘরকে হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। তবে রান্নাঘরে কাউন্টারের নিচে ও ওপরে কেবিনেট করে নেওয়া ভালো। এতে দেখতে যেমন ভালো লাগবে, তেমনই জায়গাও বেশি থাকবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh