করোনা নিয়ে রাজনীতিবিদরা যেসব ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছেন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে নানা রকম উদ্ভট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব অনলাইনে নিয়মিত ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে কিছু এসেছে বড় বড় রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে।

হাসপাতালের ফেস মাস্ক চুরি থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা এবং জীবাণু যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে এই ভাইরাস ব্যবহারের কথা– সব রকম দাবিই শোনা গেছে রাজনীতিবিদদের মুখে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুরুতে করোনাভাইরাসকে তেমন পাত্তা দিতে চান নি, তবে পরে বলেন এটা বিশ্বব্যাপি মহামারিতে পরিণত হয়েছে।

যখন ফেসমাস্কের চাহিদা বেড়ে গেলো, তখন ট্রাম্প দাবি করেছিলেন নিউ ইয়র্কের হাসপাতাল থেকে বিপুল সংখ্যক সার্জিক্যাল মাস্ক চুরি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এরকম বিপুল সংখ্যায় মাস্ক চুরির কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বেশ কিছু চীনা কর্মকর্তা এটা বার বার বলার চেষ্টা করেছেন যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সূচনা চীনে হয়নি। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজান বার বার এ কাজ করেছেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়াও বার বার এসব মিথ্যা দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে যে কভিড-১৯ হয়তো সৃষ্টি করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

আরেকটা দাবি ছিলো যে চীনের অনেক আগেই ইতালিতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিলো। কিন্তু এরকম দাবির সত্যতার পক্ষে কোন প্রমাণই পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞানিরা একমত যে ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম অন্য প্রাণী থেকে করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছিলো।

ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতা মাত্তিও সালভিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন যে চীনই একটি ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছে। এটাও আরেকটা মিথ্যে দাবি। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দাবি ব্যাপক ভাবে শেয়ার হয়। যদিও বিজ্ঞানিরা নিশ্চিত যে কভিড-১৯ মানুষের তৈরি কোন ভাইরাস নয়।

ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোনারোর অনেক উক্তি সেন্সর করেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্র্রাম, টুইটার এবং ইউটিউবের মত সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো।

এসব পোস্টের একটিতে তিনি দাবি করেছিলেন ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সম্পূর্ণরূপে করোনাভাইরাস সারাতে পারে।

আসলে এ নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে, ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগও হচ্ছে কিন্তু সার্বিকভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি।

ভারতের একজন ঊর্ধ্বতন রাজনীতিবিদ সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেন ভারতে যে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে তা এ ভাইরাসের একটি দুর্বল মিউটেশন এবং মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে। তবে গবেষকরা কিন্তু এমন কথা বলছেন না।

সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা পরিবর্তন হয় কিন্তু বিজ্ঞানিরা এমন কোন নমুনা এখনো পাননি যে কভিড-১৯ কত মারাত্মক হতে পারে । আসলে এ ব্যাপারে অনেক কিছুই এখনো মানুষের অজানা।

এই কভিড-১৯ আমাদের সবার জন্যই বিপদের কারণ– কিন্তু তা অনলাইনে ভুয়া দাবির যে ভাইরাস বিশ্বব্যাপি ছড়াচ্ছে তা ঠেকাতে পারেনি।
-বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //