ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাতে ১৩ জনের মৃত্যু

ইন্দোনেশিয়ায় মাউন্ট সেমেরুর অগ্ন্যুৎপাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকারীরা রাতভর অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করেছে। দেশটির দুর্যোগ কর্মকর্তারা আজ রবিবার (৫ ডিসেম্বর) এ কথা জানান।

জাভা দ্বীপের সবচেয়ে উঁচু এই আগ্নেয়গিরি থেকে গতকাল শনিবার (৪ ডিসেম্বর) উত্তপ্ত ছাই ও ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডুলি উৎক্ষিপ্ত হয়। তাতে পূর্ব জাভা প্রদেশের পার্বত্য গ্রামগুলো ছাইয়ে ঢাকা পড়ে, আতঙ্কিত লোকজন বাড়ি ছেড়ে সরে যায়। শত শত পরিবার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।

ছাই উগরাচ্ছে সেমেরু আগ্নেয়গিরি। ছবি : এএফপি

লুমাজাঙ জেলায় আগ্নেয়গিরি কাছে অন্তত ১১টি গ্রাম ছাইয়ে ঢেকে গেছে, ঘরবাড়ি ছাইয়ে চাপা পড়েছে, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে গবাদি পশু মারা গেছে এবং লোকদের সরিয়ে মসজিদে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

আকস্মিক এই অগ্ন্যুপাতের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সেমেরু থেকে ছাইভষ্ম আকাশে মাসরুমের মতো ছড়িয়ে পড়ছে, আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা প্রাণপণে চিৎকার করে পালানোর চেষ্টা করছেন।

ছাই উগরাচ্ছে সেমেরু আগ্নেয়গিরি। ছবি : রয়টার্স

জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন এজেন্সি (বিএনপিবি) মুখপাত্র আবদুল মুহারি ফোনে এএফপিকে বলেন, এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকারীরা আরও মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছেন। মৃতদের মধ্যে দুইজনকে শনাক্ত করা গেছে।

তিনি বলেন, পূর্ব জাভা প্রদেশের লুমাজাঙ এ আগ্নেয়গিরির আশপাশের এলাকা থেকে আটকে পড়া ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বিএনপিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আগ্নেয়গিরির বিষ্ফোরণে কমপক্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৯৮ জন, তাদের মধ্যে দুইজন অন্তঃসত্ত্বা নারীও রয়েছেন। এদের মধ্যে ৪১ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। ৯০২ জনকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে লুমাজাঙয়ের সুম্বার ওয়ুলু গ্রাম। ছবি : রয়টার্স 

এতে বলা হয়, সংস্থাটি আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য, ত্রিপল, ফেসমাস্ক, বডিব্যাগ পাঠিয়েছে। ২০২০ সালে এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের পরে এবার সেমেরুর এই অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগের ওই অগ্ন্যুৎপাতে হাজার হাজার লোক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং তাদের গ্রামগুলো ছাইয়ে ঢেকে যায়।

আগ্নেয়গিরির উদগীরণের পর আজ সেখান থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার উত্তরপূর্বে হালমাহেরা এলাকার কাছে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

পোষা প্রাণী সরিয়ে নিচ্ছেন সুম্বার ওয়ুলু গ্রামের এক ব্যক্তি। ছবি : রয়টার্স 

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপপুঞ্জের নিচে রিং অব ফায়ার হিসেবে পরিচিত ভূগর্ভস্ত টেকনোটিক প্লেটের অবস্থান, এই মহাদেশীর প্লেটগুলোর সংযোগস্থলের কারণে প্রায়শই ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাত হয়ে থাকে। এই দ্বীপমালায় ১৩০ টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। -এএফপি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //