প্রতি পিস ছাগলের চামড়ার দাম ১০ টাকা! কিন্তু কেন

যে শহরে একটা কলা কিংবা ছোট মাপের পাউরুটি কিনতে খরচ হয় ১০ টাকা, সেই শহরেই একটা খাসির চামড়ার দামও ১০ টাকা। গল্প নয়, এটাই সত্যি, এবার কোরবানি করা ছাগল ও বকরির চামড়ার দাম মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সব ধরনের পণ্যের দাম যখন হু হু করে বাড়ছে, তখন কমছে কোরবানির গরু-ছাগলের চামড়ার দাম। গতবছরের তুলনায় এবার পাঁচ টাকা বাড়ানো হলেও পরিসংখ্যান বলছে, গেল এক দশকে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম কমেছে ৩০ টাকা। আর তারপরও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চামড়া পাওয়ার ব্যাপারের আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।

গত বছরের তুলনায় লবণযুক্ত খাসির চামড়ার দাম এবার দুই টাকা বাড়িয়ে সরকার বেঁধে দিয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। কয়েক বছর আগেও খাসির চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। তাহলে কেন এবার মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে? এমন প্রশ্ন ছিল পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে।

এক ব্যবসায়ী বলেন, এবার তাও ১০ টাকা করে নিচ্ছি, সামনে তাও নিবো না। একটা ছাগলের চামড়ার পিছনে ৪০-৫০ টাকা খরচ। কেউ যদি বিনামূল্যেও দেয় তবে আমার খরচ উঠবে না।   

বাংলাদেশ বাংলাদেশ হাইড ও স্কিন ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান আফতাব খান বলেন, ছাগলের চামড়া ফ্যাশন জগত থেকে চলে গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে কোনো চাহিদাই নেই। আগের ৪২টা ছাগলের চামড়া ট্যানারি ছিলো। এখন আছে মাত্র চারটা।

এবার লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দামও পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা বেঁধে দিয়েছে সরকার। একইসাথে প্রথমবারের মতো প্রতিটি চামড়ার দাম বেধে দেয় ১২০০ টাকা। সেই দাম কতটা কার্যকর হয়েছে এবার?

এক বিক্রেতা বলেন, সর্বোচ্চ আটশ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। তাও অনেক দরদাম করে। সরকার যে দাম বাঁড়িয়েছে তারতো কোনো প্রমাণ পাচ্ছি না আমরা।  

কাগজে পত্রে চামড়া দাম খানিকটা বাড়লে পরিসংখ্যান বলছে, গেল ১১ বছরে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম কমেছে ৩০ টাকা। ২০১৩ সালে লবণযুক্ত প্রতিবর্গ ফুট গরুর চামড়ার দাম ছিলো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। আর ২০২৪ সালে তা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।

২০১৩ সালে ছাগলের যে চামড়ার দাম ছিলো ৫০ টাকা, তা এখন হয়েছে মাত্র ১০ টাকা। পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ীদের দাবি, কৃত্রিম বা আর্টিফিশিয়াল চামড়ার কারণে বিশ্ববাজারে চাহিদা কমেছে চামড়ার। তারপরও এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কোরবানির চামড়া পাওয়ার ব্যপারের আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ হাইড ও স্কিন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি টিপু সুলতান বলেন, লাভ হয়। কিন্তু কম হলে অনেকে বলে, তাদের লাভ হয়নি। আমরা দাম দেইনি। তাদের লস হয়েছে।

পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্প নগরী গড়ে তুলতেই হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প নিয়ে যাওয়া হয়েছে সাভারের হেমায়েতপুরে ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে। এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সেই চামড়া শিল্প নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার ১৯ বছরে পরিপূর্ণভাবে চালু হয়নি।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //