বিশ্বমানের বন্দর হবে মোংলা, ভারতের সঙ্গে চুক্তি

মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ইজিস ইন্ডিয়া কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিডেটের সঙ্গে “আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্প” শীর্ষক ছয় হাজার ১৪ কোটি টাকা প্রকল্পের একটি চুক্তি সই হয়েছে।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও এজিস গ্রুপের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লরেন্ট জারমেইন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা। এছাড়া প্রকল্প পরিচালকসহ মন্ত্রণালয় ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জানান, প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ১ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা।

প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল এক বছর উল্লেখ করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ানো। আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কন্টেইনার হান্ডেলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কন্টেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, সিকিউরিটি সিস্টেমসহ সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভেসেল জেটি নির্মাণ, আটটি জলযান সংগ্রহ, বন্দর আবাসিক কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি  সুবিধা (১৩টি সুউচ্চ ভবন), বন্দর ভবনের সম্প্রসারণ, মেকানিকাল ওয়ার্কসপ, যন্ত্রপাতিসহ স্লিপওয়ে ও মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণ, দিগরাজে রেলক্রসিং ওভারপাস, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান রাস্তা ছয় লেন পর্যন্ত সম্প্রসারণ ও বহুতল কার ইয়ার্ড নির্মাণ করা।

প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দর বছরে এক হাজার ৮০০টি জাহাজ, এক কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো, চার লাখ টিইইউস কন্টেইনার, ১০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং করতে পারবে। মোংলা বন্দরের বার্ষিক আয় ১৫০ কোটি টাকা এবং কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার আয় ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে স্তিমিত মোংলা বন্দর সচল করার পদক্ষেপ নেন। ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেন। ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃতপ্রায় এ বন্দরটিকে কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। বন্দরটি লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, পশুর নদীর আউটারবারে ড্রেজিং করার ফলে হারবাড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। ইনারবারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে; যাতে বন্দর জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন কাজটি সম্পন্ন হলে এটি অনন্য উচ্চতায় চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠবে। এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়; প্রতিবেশী দেশগুলোও উপকৃত হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে মোংলা বন্দর এগিয়ে যাবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //