জবিতে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংবাদিক হেনস্তার অভিযোগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম ইকবাল মাহমুদ রানা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম অমৃত রয়। তিনি দৈনিক আমার বার্তা ও এশিয়ান টিভির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

গতকাল বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় এই হেনস্তার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সাংবাদিক অমৃত রায় বুধবার দুপুর ২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ও অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ রানা অমৃত রায়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা ক্যান্টিনে সিরিয়াল টোকেন ছাড়াই খাবার নিতে গিয়ে সিরিয়ালে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের টোকেন ফেলে দেয়। এসময় ওই শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ক্যাফেটেরিয়ায় হুলস্থূল দেখে ভুক্তভোগী অমৃত রায় সেখানে গিয়ে কারণ জানতে চাইলে শাখা  ছাত্রলীগ কর্মী ও সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সাজেদুল ইসলাম সৈকত এবং অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ রানা তাকে হুমকি-ধমকি দেন। 

পরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক অমৃত রায় ক্যাফেটেরিয়ার একটি টেবিলে খেতে বসলে অভিযুক্ত ইকবাল মাহমুদ রানা ও তার সহযোগীরা দলবল নিয়ে অমৃত রায়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। একপর্যায়ে অমৃত রায়কে লাথি দেওয়া শুরু করে অভিযুক্ত ইকবাল মাহমুদ রানা। এতে তিনি আহত হন। 

এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের থামান এবং বিচারের আশ্বাস দিয়ে বিষয়টি আপাতত স্থবির করতে বলেন।

পরে ঘটনাটি পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিবরণ শুনে সুপারিশ করে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী সাংবাদিক অমৃত রায় বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার সময় লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে দেখে আমি সেখানে এগিয়ে যাই৷ এগিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে এর কারণ জানতে চাই। এতে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি-ধমকি দেন। পরে আমি খাবার খেতে বসলে ইকবাল মাহমুদ রানা ও তার সহযোগীরা এসে আমার ওপর আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে আমাকে লাথি দেন।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল মাহমুদ রানার সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, সাংবাদিকের গায়ে হাত দেওয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। শুধু সাংগঠনিক ব্যবস্থা নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে একাডেমিক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বলেন, ‘আমি ভুক্তভোগী সাংবাদিককে ডেকে কথা বলেছি। ঘটনার মীমাংসা হয়ে গেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে ডেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //