শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের কষ্টার্জিত জয়

শ্রীলঙ্কার দেয়া ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পরে বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ উইকেটে বড় জুটি গড়ে শঙ্কার মেঘ কাটিয়ে দেন তাওহীদ হৃদয় এবং লিটন দাস। দ্রুত সময়ে এই দুই ব্যাটার আউট হলে আবারও চাপে পড়ে টাইগাররা। তবে সেই চাপ কাটিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

আজ শনিবার (৮ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার দেয়া ১২৫ রান তাড়া করতে নেমে ১ ওভার হাতে রেখে জিতেছে টাইগাররা। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলতে পেরেছেন পাথুম নিশানকা।   

জবাব দিতে নেমে ৬ বল হাতে রেখে ১২৫ রান করে জয়ের নাগাল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। যদিও, ব্যাটিংয়ের শুরুতে বরাবরের মতো ব্যর্থতা ভর করে বাংলাদেশের ওপর। শুরুতেই বিদায় নেন সৌম্য সরকার। ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সাদামাটা বলে বাজে শট খেলে শূন্যতে বিদায় নেন বাঁহাতি ওপেনার। 

এরপর হতাশ করেন তানজিদ তামিম। নুয়ান থুশারার ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হন তানজিদ (৩)। চারে নেমে টিকলেন না অধিনায়ক শান্তও। ১৩ বল মোকাবিলা করে অধিনায়কের ইনিংস থামল ৭ রানে। ২৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তখন উইকেটে থেকে আশার পালে সাহস যোগান তাওহিদ ও লিটন দাস। এই জুটিতে জয়ের পথটা সহজ করে ফেলে বাংলাদেশ। মাঝপথে ২০ বলে ৪০ রান করে তাওহিদ ফিরলে লিটনও বিদায় নেন। ৩৬ রান করে হাসারাঙ্গার এলবির ফাঁদে পড়েন ডানহাতি ব্যাটার। দুই সেট ব্যাটার ফেরার পর হারতেই বসেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্রিজে থেকে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। জয়ের পথে মাহমুদউল্লাহ করেন ১৬ রান। 

এর আগে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টস জিতে যথারীতি বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। নতুন বলে বাংলাদেশের ইনিংস শুরুটা করেছেন তানজিম হাসান সাকিব। এক বাউন্ডারি হজম করলেও প্রথম ওভারে ৫ রানের বেশি দেননি তিনি। সাকিব আল হাসান দ্বিতীয় ওভারে এসেই রান দেদারসে। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিনের ওভারের প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান কুশল মেন্ডিস। তৃতীয় বলেই বোল্ড। ডানহাতি পেসারের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে নিয়ে বোল্ড হন মেন্ডিস (১০)।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম বলেই পেয়ে যান সাফল্য। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি উড়িয়ে মারার চেষ্টায় মিড অফে ক্যাচ হয়ে ফেরেন কামিন্দু মেন্ডিস। 

দুই উইকেট হারানোর পরও পাওয়ার প্লেতে ৫৩ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। তার মধ্যে উইকেটে থিতু হয়ে ভয় জাগান পাথুম নিশানকা। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই নিশানকার প্রতিরোধ ভাঙেন মুস্তাফিজ। কাটার মাস্টারের ফুল লেংথ ডেললিভারিতে কাভারের শান্তর ক্যাচ হয়ে ফেরেন নিশানকা। ফেরার আগে ২৮ বলে সাত চার ও এক ছক্কায় ৪৭ রান করেন লঙ্কান ওপেনার। 

তিন টপ অর্ডারের বিদায়ের পর চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ার আভাস দেন ডি সিলভা ও চারিথ আসালাঙ্কা। নবম ওভারে এসে জোড়া উইকেট নিয়ে ৩০ রানের এই জুটি ভাঙেন রিশাদ। প্রথমে তুলে নেন ১৯ রান করা আসালাঙ্কাকে। এরপর ছয়ে নামা হাসারাঙ্গাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি রিশাদ। 

নিজের শেষ ওভারে এসে ডি সিলভাকেও বিদায় করেন রিশাদ। ১৯ রান করা সিলভা বাংলাদেশি লেগ স্পিনারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দ্রুত উইকেট হারানোর মিছিলে বড় পুঁজি গড়তে পারেনি শ্রীলঙ্কা। একের পর এক উইকেট হারিয়ে অল্পতে থামে হাসারাঙ্গার দল।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ২২ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন রিশাদ। ১৭ রান খরচায় মুস্তাফিজুর রহমান নেন তিনটি। ২৫ রানে দুইটি নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //