ডিবির সঙ্গে বৈঠকে ভারতীয় পুলিশের দুই প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভারতীয় পুলিশের দুই প্রতিনিধি বাংলাদেশে এসেছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় তারা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।

আজ সন্ধ্যায় ডিবির এক কর্মকর্তা এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, এমপি আজীম খুনের বিষয়ে ভারতে ২ জন ও বাংলাদেশে তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য দুই দেশের কর্মকর্তারা শেয়ার করার জন্য বৈঠাকে বসছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের ঘটনা জানানো হবে। এ ছাড়া ভারতে কি ঘটেছে, সেই বিষয়ে তারা কি জানতে পেরেছে, তাও জানতে চাওয়া হবে। 

উল্লেখ্য, চিকিৎসার জন্য ১২ মে কলকাতায় গিয়েছিলেন আনোয়ারুল আজীম আনার। চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি কলকাতায় গিয়ে নিখোঁজ হন। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, আনার খুন হয়েছেন। তবে এখনো তার লাশ উদ্ধার হয়নি। 

কলকাতায় আনার যে বাড়িতে উঠেছিলেন, সেটির সিসিটিভি ফুটেজের বরাত দিয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৩ ও ১৫ মে সেই বাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি বড় বড় ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছেন। 

বুধবার বিধাননগর পুলিশ জানায়, গত ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউনের অ্যাকুইটিকা এলাকার একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়। ওই বাড়ির মালিক রাজ্য শুল্ক বিভাগের কর্মচারী সঞ্জীব ঘোষ। তিনি মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কাছ বাড়িটি ভাড়া দিয়েছেন। 

বুধবার সকালে বিধাননগর, ব্যারাকপুর পুলিশ ও স্পেশাল টাস্কফোর্সের সদস্যরা বাড়িটিতে যান এবং সেখানে তল্লাশি চালান। তারা সেখানে রক্তের দাগ পেলেও কোনো লাশ দেখতে পাননি। 

লাশ উদ্ধার না হলেও সুনির্দিষ্ট কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকার সঞ্জীভা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। হত্যার পর লাশ টুকরা টুকরা করে অজ্ঞাতনামা স্থানে গুম করে ফেলেছে খুনিরা। 

এ ঘটনায় পুলিশ ঢাকার মোহাম্মদপুর ও সাভার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে কলকাতায় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেছেন। পুরো কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন আমানউল্লাহ নামের একজন। তাঁকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

দুই দেশের পুলিশের সন্দেহ, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে সোনা কারবারের টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধ। ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীনের পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ড হয়। খুন করার আগে বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেশ থেকে ছয়জনের একটি কিলিং স্কোয়াড নিয়ে যান তিনি। পরে ব্যবসায়িক আলোচনা করতে ফ্ল্যাটে ডেকে এমপি আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়। টুকরা টুকরা করে কাটা হয় লাশ। এরপর উবার ভাড়া করে ট্রলিতে ভরে সেই লাশ গুম করেন কিলিং মিশনের সদস্যরা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //