উপকূলে নিষিদ্ধ জালে চলছে অবাধে মাছ শিকার

বরগুনার পাথরঘাটার বলেশ্বর, বিষখালী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও তার তীরবর্তী চরগুলোতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে কিছু অসাধু জেলে। এতে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির লাখ লাখ সামুদ্রিক মাছের রেণু। ফলে দিন দিন নদী ও সাগরে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। শিগগিরই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হারিয়ে যাবে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা চরের বিরাট অংশ জুড়ে খুঁটি পুঁতে গড়া জাল বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়াও হরিণঘাটা-লালদিয়া বনের কোল ঘেঁষে চরাঞ্চল, বলেশ্বর তীরবর্তী পদ্মা, রুহিতা, ছোট টেংরা ও চরদুয়ানী এলাকায় জেলেরা ছোট ফাঁসের নিষিদ্ধ বেহুন্দী জাল, গড়া জাল, বাঁধা জাল, ঘোপ জাল দিয়ে ছোট মাছ ধরছেন। এসব জালের ফাঁস আধা ইঞ্চি থেকে পৌনে এক ইঞ্চি। 

কয়েকশ মিটার দৈর্ঘ্যরে একেকটি ঘোপ জাল জোয়ারের সময় পাতা হয়, ভাটায় পানি নেমে গেলে জালে আটকা পড়ে ছোট-বড় মাছের পাশাপাশি অসংখ্য রেণু। ঘোপ বা চরগড়া তৈরিতে শতাধিক গেওয়া ও কেওড়া গাছের খুঁটি ব্যবহার করা হয়। এসব গাছের সিংহভাগই প্রাকৃতিক বন হরিণঘাটা, লালদিয়া ও চরলাঠিমারা সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কেটে আনা হয়। কম বয়সী লাঠি আকৃতির গাছ খুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নতুন জন্ম নেওয়া গাছ কাটার ফলে সংরক্ষিত বনও উজাড় হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এক শ্রেণির দাদন ব্যবসায়ী জেলেদের বলেশ্বর, বিষখালী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও তার তীরবর্তী চরগুলোতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, তারা বন বিভাগের সঙ্গে যোগসাজশেই জাল পাতেন। গোপের খুঁটি হরিণঘাটা, লালদিয়াসহ চরের বিভিন্ন জঙ্গল থেকে কেটে নেন। 

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, কিছু অসাধু জেলে বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও তার আশেপাশে ঘোপ জালসহ নিষিদ্ধ জাল দিয়ে দখল করে রেখেছে। এ অবৈধ জাল নিয়ে আমরা একাধিকবার মানববন্ধন করেছি। বিক্ষোভ মিছিল করেছি, প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। তারপরও সমাধান হয়নি।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান করে থাকি। জেলেরা জাল পেতে চলে যায় যে কারণে অভিযানের সময় তাদের আটক করা যায় না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //