শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলেও দলীয় শাস্তি পাননি সেই অধ্যক্ষ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা হুমকিমূলক বক্তব্যের দায়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও হাজতবাস করলেও সাংগঠনিক শাস্তি পাননি বিতর্কিত সেই আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্ত) সাইদুল হাসান সাইদ। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান থাকলেও রহস্যজনক কারণে তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদকের পদকে ব্যবহার করে সাইদুল হাসান সুজাত আলী কলেজ, পিংনা উচ্চবিদ্যালয় ও গোপালগঞ্জ গরুর হাটসহ এলাকায় অন্যায় প্রভাব ও একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন।

নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের পরও তার সাংগঠনিক শাস্তি না হওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বরাবর লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে ২৩ এপ্রিল একটি পথসভায় সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান প্রতিপক্ষকে এজেন্ট দিতে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। একইসময় তিনিসহ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় প্রতিপক্ষের এজেন্টদের দাঁত ও চাপার হাড্ডিসহ হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপের হুমকি দেন।

এসংক্রান্ত ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ২৭ এপ্রিল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওইদিনই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। ২৭ এপ্রিল থেকেই সাইদুল হাসানকে কলেজের অধ্যক্ষের পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও ৯ মে জেলহাজত থেকে জামিনে এসে গভর্নিংবডির সভাপতির আদেশ অমান্য করে চেয়ার দখল করেন। একইসাথে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা হুমকিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ভঙ্গ হলেও অদ্যাবধি তাকে দলীয় শাস্তি দেওয়া হয়নি। উল্টো জামিনে এসে পূর্বের মতোই তিনি অধ্যক্ষের চেয়ার ও দলীয় পদের অপব্যবহার করে আসছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ সাইদুল হাসানের পক্ষে থাকায় তিনি দলীয় শাস্তির আওতাভুক্ত আছেন। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ডিবি ও এসপি অফিসে তদবির এবং জেলখানায় একাধিকবার ছুটে যান কয়েকজন নেতা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তহীনতায় এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি জেলা আওয়ামী লীগও।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ড. হারুন অর রশিদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যেহেতু এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বৈঠক হয়নি, সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সুযোগ আছে কিনা—তা সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার বিষয়।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ্ বলেন, সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়মানুযায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত দাপ্তরিকভাবে কোনো চিঠি পাইনি। তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপারিশমালা পাঠালে জেলা আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্ত) সাইদুল হাসান সাইদকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //