মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে রেজ্যুলেশন জাল করে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে জাল রেজ্যুলেশনে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ভুয়া রেজ্যুলেশনে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির বেতন চালুর জন্য বোর্ডে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠালে বিষয়টি সামনে আসে।

অভিযোগের তীর শেখবাঁধা রেয়াজিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. সাইফুল ইসলামের দিকে। অভিযোগ উঠেছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তিনি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তথ্য গোপন করে আয়া পদে নিয়োগ দানে পাঁয়তারা করছেন।

তার এই জালয়াতির স্বপক্ষে একই দিনের দুইটি রেজ্যুলেশনের কপি ও পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

২০২০ সালে ১ সেপ্টেম্বর স্বদেশ প্রতিদিন ও ২ সেপ্টেম্বর দৈনিক জলকথা পত্রিকায় আয়া ও নিরাপত্তা কর্মীসহ দুইটি পদে নিয়োগে জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা কর্মী পদে নয়জন ও আয়া পদে সাতজন আবেদন করেন। পরবর্তীতে নিয়োগ কমিটি লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে শুধুমাত্র নিরাপত্তা কর্মী পদে মাহামুদুল ইসলামকে নিয়োগ প্রদান করলেও আয়া পদটি শূন্য থেকে যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আয়া পদে সাতজন আবেদনকারীর মধ্যে দুইজন আবেদনকারীকে নিয়োগ পরীক্ষায় ডাকা হয়নি। আর এতেই বাঁধ সাধেন নিয়োগ কমিটিতে থাকা শিক্ষক প্রতিনিধি কাজী সাইফুল ইসলাম। তার বিরোধিতায় আয়া পদটি শূন্য রেখেই নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।

নিয়োগ কমিটির সদস্য ও মাদ্রাসার কৃষি শিক্ষক কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, সেই সময় নিরাপত্তা কর্মী পদে শুধু মাহামুদুলের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছিল।

অভিযোগ উঠেছে সেই ঘটনার এত দিন পর মাদ্রাসা সুপার সাইফুল ইসলাম জালিয়াতি করে রেজ্যুলেশনে নিয়োগ কমিটির স্বাক্ষর ঠিক রেখে বাকি পাতাগুলো বদলে ফেলে আয়া পদে খাদিজা বানু নামে এক প্রার্থীর এমপিওভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বোর্ডে পাঠিয়েছেন।

এমন কি খাদিজা বানুকে গোপনে নিয়োগ প্রদানের পাঁয়তারা চললেও তাকে কখনই মাদ্রাসায় দেখা যায়নি বলে নিশ্চিত করেন সেখানে কর্মরত একাধিক শিক্ষক-কর্মচারী।

কথা হয় সে সময় আয়া পদে আবেদনকারী ময়না আক্তারের স্বামী শাহিনুর ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর চাকরি না হোক অন্তত পরীক্ষার জন্য ডাক পেলেও স্বস্তি পেতাম। তাকে পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়নি। উপরন্তু সাত লাখ টাকা নিয়েছিলেন সুপার। সেই টাকা এখনো ফেরত পাইনি।

তবে এত কিছুর পরও নিজের অবস্থানে অনড় সুপার। নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগ পাওয়া মাহামুদুল নিয়মিত বেতন উত্তোলন করলেও আয়া পদে কেন এখনো নিয়োগ প্রদান করা সম্ভব হয়নি এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি সুপার।

সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, এলাকার এবং মাদ্রাসার অনেকেই নিয়োগটির ব্যাপারে গণ্ডগোল করে আসছে। তাই এখনো এমপিওভুক্তি সম্ভব হয়নি।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //