গারো পাহাড়ে আঙ্গুর ফলের হাসি

এবার গারো পাহাড়ে আঙ্গুর ফলের হাসি ফুটেছে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে থোকা থোকা বিদেশী সুমিষ্ট ফল আঙ্গুর। শেরপুরের প্রত্যন্ত গারো পাহাড় এলাকায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে আঙ্গুর ফল চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উদ্যোক্তা জালাল মিয়া। ভারত থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে লাগানোসহ সব মিলিয়ে তার খরচ হয় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে বাগান থেকে কাঙ্ক্ষিত সুমিষ্ট ফল বিক্রি করেছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। তার আশা, বাগান থেকে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো আঙ্গুর বিক্রি হবে। এদিকে আঙ্গুরের বাগান দেখে এলাকায় অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।

জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার মেঘাদল গ্রামের বাসিন্দা জালাল মিয়া এ আঙ্গুর চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন। বিদেশী আঙ্গুর ফলের মতোই রসালো ও মিষ্টতা থাকায় এলাকায় অনেকেই এ আঙ্গুর চাষে আগ্রহ হয়ে উঠেছে।

চাষি জালাল মিয়া জানান, ভারতে ঘুরতে গিয়ে শখের বসে প্রথমে দুই জাতের গড়ে ১২০০ টাকা দরে ১০টি আঙ্গুর ফলের চারা নিয়ে আসেন। এরপর আরো দুই ধাপে ৪০টি জাতের ৮০টি চারা নিয়ে নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। এতে সব কিছু মিলিয়ে তার খরচ হয় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এরপর বাগানে আসতে থাকে সুমিষ্ট ফল। তার বাগান থেকেই ইতিমধ্যে ৩ শত টাকা কেজি দরে ফল ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। বাগানে যে পরিমাণ আঙ্গুর ধরেছে তাতে প্রায় ৩ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে তিনি এ বাগান থেকেই কলমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে অন্যত্র এ চাষের আওতা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও রয়েছে তার।

এদিকে এ গারো পাহাড় এলাকায় আঙ্গুর ফল ছড়িয়ে পড়লে দেশের আমদানি নির্ভরতা অনেকটাই কমে আসবে বলে স্থানীয় অন্যান্য উদ্যোক্তারা জানায়।

সেইসাথে গারো পাহাড়ে আঙ্গুর চাষে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি জনপদে বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুর চাষে আরো সফলতা আনবে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।


জালাল মিয়ার আঙ্গুরের বাগান দেখে স্থানীয় অনেকেই আঙ্গুর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ আঙ্গুর চাষের পরিধি বাড়লে এলাকার বেকার সমস্যা দূরের পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়বে বলে স্থানীয় আগ্রহী চাষিরা মনে করছেন।

শেরপুরের গারো পাহাড়ের মাটি আঙ্গুর চাষে খুবই উপযোগী, তাই এই আঙ্গুরের মিষ্টতা বেশি। এ ধরণের চাষে কৃষকদের উৎসাহ ও সব ধরণের সহযোগিতার কথা জানান ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদী উপজেলা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার। সেইসাথে তিনি স্থানীয় আরো উদ্যোক্তাদের আঙ্গুর চাষে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে চারা লাগানোর ১০ মাস পর বাগানে আসে ফল। সফলতার হাতছানি পাওয়ায় নতুন করে বৃহৎ পরিসরে বাগান করার উদ্যোগ নিচ্ছেন জলিল মিয়া। সেই সাথে গারো পাহাড়ে এ আঙ্গুর চাষে স্থানীয় বেকার ও উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার আশার আলো জ্বালাবে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //