সরকারকে জিম্মি করে বিদ্যুৎকেন্দ্র করাচ্ছে ভারত ও চীন: টিআইবি

ভারত ও চীন সরকারকে জিম্মি করে বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বাধ্য করছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে টিআইবি আয়োজিত ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’-এর সঙ্গে টিআইবির সংহতি প্রকাশ ও প্রতিবাদ র‌্যালিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগকারীদের কাছে দাবি জানাব— বৈশ্বিক কয়লাভিত্তিক গ্রুপদের চক্রান্ত থেকে সরে যেতে হবে, বিশেষ করে ভারত ও চীন থেকে। তারা নিজেদের দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে গিয়ে আমাদের দেশে এসে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নে সরকারকে জিম্মি করেছে।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি বৈশ্বিক শত্রুর কারণে। আমাদের ঘরের শত্রু কিন্তু আরো বেশি বিভীষণ। কারণ, ঘরের শত্রু এখন বাংলাদেশকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বৈশ্বিক হাবে রূপান্তর করছে। এখন পর্যন্ত যারা কার্বন নিঃসরণকারী জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে ও পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, তাদেরকে এই আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’

২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের আহ্বান জানানও তিনি।

টিআইবির তথ্য মতে, প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে পাঁচ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বন ও সংরক্ষিত এলাকায় যেমন- রামপাল, মাতারবাড়ি, পায়রা, ট্যাংরাগিরির মতো বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা চুক্তির সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দেশে বর্তমানে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মাত্র ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন হচ্ছে। ২০২০ সালের মধ্যে মোট চাহিদার ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য খাত থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

সংহতি প্রকাশ কর্মসূচিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার সীমিত করা ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার জন্য কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমাতে শিল্পোন্নত দেশগুলোকে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি প্রদান করা এবং শিল্পোন্নত দেশগুলোতে তেল, কয়লা এবং গ্যাসভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে বন্ধ করা উল্লেখযোগ্য।

সংহতি প্রকাশ ও প্রতিবাদ র‌্যালিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পরিবেশ আন্দোলনকারী ও পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //