জনগণ থেকে দূরে সরলে আমি মারা যাবো: শেখ হাসিনা

স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সকে (এসএসএফ) উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণই আমার প্রাণের শক্তি। নিরাপত্তার নামে তাদের কাছ থেকে যেন আমাকে দূরে সরানো না হয়। জনগণের কাছ থেখে দূরে সরে গেলে আমি মারা যাবো। আজ বুধবার (২৬ জুন) স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই দৃশ্যমান ও টিকসই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যগোপযুগী হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই দৃশ্যমান ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযুগী হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

কাউকে আক্রমণ করবে না বাংলাদেশ তবে আক্রান্ত হলে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য যাতে জনবিচ্ছিন্ন না হতে হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে এসএসএফ-কে পরামর্শও দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রধান লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু সেটা করতে দেওয়া হয়নি।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ যাতে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন জাতির পিতা। প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছেন তিনি।

আমরা সরকার গঠন করে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করি। অথচ পূর্ববর্তীরা সেই যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। আমরা দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি, বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে বলেছেন, সরকার মাদক অপরাধী, চোরাকারবারি, পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগ করছে। এর বাইরেও দেশের শিক্ষাক্রমে মাদকসংক্রান্ত বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মাদকের অপব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পথশিশুসহ যারা মাদকাসক্ত হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে তাদের জন্য সরকারি-বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য, ‘প্রমাণ স্পষ্ট : প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং সঠিক হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সদ্য স্বাধীন দেশে ফিরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের পর ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি এক সরকারি আদেশের মাধ্যমে মদ, জুয়া, হাউজি, ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের বলেন, ‘ঘোড়দৌড় আর মদ্যপানে কোনো জাতি বা দেশের কল্যাণ সাধিত হতে পারে না। তাই বাংলাদেশে এসব সামাজিক অনাচারের স্থান হবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার মাদকের আগ্রাসন থেকে দেশের জনগণ তথা যুবসমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য নানা ধরনের বাস্তবমুখী এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে আধুনিকায়ন করে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সমাজের মূলধারায় আনা ও দেশের উন্নয়নমূলক কাজে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের জীবনমান পরিবর্তনে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। ঢাকার কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের আধুনিকীকরণ প্রকল্প চলমান আছে এবং পাশাপাশি ৭টি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, আমি আশা করি, আমাদের যুবসমাজ মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও মাদকাসক্তিমুক্ত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষম হবে।

এসময় তিনি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাদকাসক্তিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //