‘১ জুলাইয়ের পর কলড্রপ হলেই অ্যাকশন’

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, কলড্রপ একটা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মোবাইল গ্রাহকেরা যেমন এ বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট। বিটিআরসি যে পরীক্ষাগুলো করেছে সে রিপোর্ট অনুসারে কোয়ালিটি অব সার্ভিস খুব একটা সন্তোষজনক নয়। আমরা জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে অ্যাকশনে যাব।

আজ রবিবার (৩০ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক সেবার মান বিশেষ করে কলড্রপ সংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এ সময় বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদসহ মোবাইল ফোন অপারেটরদের শীর্ষ কর্মকর্তারা  উপস্থিত ছিলেন। 

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোন এখন জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, আমাদের গ্রাহকেরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। আজকের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান নিশ্চিত করা, তারা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে সেই সেবা পাচ্ছে কিনা এবং সুলভ মূল্যে উচ্চ গতির ইন্টারনেট দেওয়ার যে উদ্দেশ্য সেটা গ্রাহক পাচ্ছে কিনা। আমরা যে সুবিধাগুলো দিচ্ছি সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার মোবাইল অপারেটরগুলো করছে কিনা।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কলড্রপ নিয়ে অপারেটরগুলো থেকে যে তথ্য দিক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না গ্রাহক এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে একটা উল্লেখযোগ্য চিত্র না পাব বা রিক্যাকশন না পাব ততক্ষণ পর্যন্ত শুধুমাত্র কাগজে-কলমে বা ডিজিটাল উপস্থাপনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট হব না। এটা আপনারা গ্রহণ করেন বা না করেন আমি আপনাদের পরিষ্কার বার্তাটি দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কারণ প্রথম ছয় মাস, আমরা জানুয়ারিতে শপথ নিয়েছি। আমরা একটা স্মার্ট টেলিকম ইকোসিস্টেম বাংলাদেশকে উপহার দিতে চাই।

পলক বলেন, কলড্রপের জন্য গ্রাহকের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা আমরা আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে যাব। যেহেতু আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাবে, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা যেন করা হয়। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণটাই আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব, যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো একটা চাপে থাকে যে, তারা যদি সেবা না দেয় তাহলে তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করব। বেঞ্চমার্ক যাই থাকুক, কলড্রপ রেট কাগজে-কলমে যাই থাকুক, আমাদের গ্রাহকের সন্তুষ্টির ওপর জোর দেব।

কল ড্রপ নিয়ে ঢাকার কয়েকটি এলাকার ড্রাইভ টেস্টের ফলাফল পর্যালোচনা করে পলক বলেন, আমরা জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে অ্যাকশনে যাব। শহর বা গ্রাম যেখানেই হোক আমরা মিডিয়ার যে রিপোর্ট, সেগুলো আমলে নেব এবং সেখানে আমরা ড্রাইভ দেব।

ফাইন্যান্সিয়াল অডিট এবং টেকনিক্যাল অডিটের ওপর জোর দেওয়া হবে জানিয়ে পলক বলেন, আসলে অপারেটররা যা বলছে তা সত্যি কিনা। আমরা সাংবাদিক বন্ধুদের রিপোর্টগুলো নিয়মিত আমলে নেব যে, কল ড্রপ কেন হচ্ছে। ইন্টারনেটের গতি কেন কম হচ্ছে, গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া কী সেগুলো আমলে নিয়ে ড্রাইভ দেব। আমরা কারিগরি পরিদর্শন দল গঠন করেছি, তারা সেগুলো টেস্ট করছে।

এক্ষেত্রে অপারটেরদের সহায়তাও দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা অপারেটরদের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে সাঁতার শেখাব না, আমরা সাঁতার শিখিয়ে সক্ষমতা দিয়ে দেক যাতে নদীটা পার হন। আমরা বলব, সাঁতরিয়ে নদীটা পার হন। কলড্রপ যাতে বিশ্বের অন্যতম একটা ভালো বেঞ্চমার্কে পৌঁছাতে পারি। সেটা আমাদের মূল লক্ষ্য। কলড্রপে সময় নষ্ট হয়, এনার্জি নষ্ট হয়, সে বিরক্ত হয়। পাশাপাশি আপনাদেরও কিন্তু টেকনিক্যাল এবং ফাইন্যান্সিয়াল লস হয়। এসব বিষয় খেয়াল করে সমাধোনে যেতে হবে। সমস্যা যত কঠিনই হোক না কেন সমাধান করতে হবে। 

পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল সেবা নিয়ে পলক বলেন, ফাইভজি রোল আউটেরও একটা নির্দিষ্ট টার্গেট বিটিআরসি এবং চারটি মোবাইল অপারেটরকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এয়ারপোর্ট, সি পোর্ট এবং কিছু বিজনেস ডিস্ট্রিক্টস, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক-শিল্পাঞ্চলে ফাইভজি রোল আউট করা। তারপর গ্রাজুয়েলি রোল আউট করা।

তিনি বলেন, আমাদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের থার্ড টার্মিনাল অক্টোবরে উদ্বোধন হতে পারে। অক্টোবরকে টার্গেট করে চারটি মোবাইল অপারেটরকে একটা চ্যালেঞ্জ দিতে চাই, যেন অক্টোবরের ৩০ তারিখের মধ্যে ফাইভজি ওখানে নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি গুলশান, বনানী, মতিঝিল, আগারগাঁও এলাকায় ফাইভজি এনাবল অনেক স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয় বেশি। আমার বিশ্বাস এখানেও মনোযোগ দেবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে পলক বলেন, তিনি খুব আগ্রহী যে চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় কীভাবে ফাইভজি ও আইওটি কীভাবে ব্যবহার করতে পারি। আমরা আশা করি সেখানেও দ্রুত আমরা ফাইভজি ব্যবহার করতে পারব।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //