মসলা হিসেবে তেজপাতার বহুল ব্যবহার রয়েছে। তবে শুধু রান্নায় ব্যবহার নয় স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই পাতার জুড়ি মেলা ভার। এই পাতা শরীরের ছোটখাটো কিছু সমস্যা সহজেই সারিয়ে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেজপাতায় থাকে ভিটামিন, মিনারেল এবং বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ উপাদান, যা ব্যাকটেরিয়া নিধন করা, জ্বালাপোড়া কমানোসহ আরও অনেক উপকার করে।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
- তেজপাতা শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য এটি খুবই কার্যকর।
- শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দিতেও তেজপাতার যথেষ্ট ভূমিকা আছে। এজন্য চায়ের সঙ্গে তেজপাতা মিশিয়ে খেতে পারেন।
- অনেকের ত্বকেই ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ দেখা দেয়। এ সমস্যার সমাধানে একটি করে তেজপাতা চার কাপ পানিতে ফুটিয়ে খেতে পারেন। দিনে ৪-৫ বার এই পানি খেলে সুফল পাবেন।
- শরীরের কোথাও ফোঁড়ার সমস্যা হলে তেজপাতা বেটে তার উপরে প্রলেপ দিন। ব্যথা কমবে আবার ফোঁড়াও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
- অতিরিক্ত কাশি হলে বা গলা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা সমাধানে তেজপাতা ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি চায়ের মতো পান করলে দ্রুত স্বস্তি মিলবে।
- তেজপাতা শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে এটি কিডনির সমস্যা করে ও অন্যান্য গ্যাসের সমস্যা তৈরি করে।
- অনেক সময় প্রস্রাবের রং হলুদ হয়। সেক্ষেত্রে গরম পানিতে তেজপাতা দু’ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ছেঁকে নিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পারপর ওই পানি পান করুন। দেখবেন প্রস্রাবের রং সাদা হয়ে আসবে। পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে হবে।
- ব্রণের সমস্যায় চন্দন ও তেজপাতা একসঙ্গে বেটে মুখে লাগালে দ্রুত দাগ, ছোপ থেকে রেহাই পাবেন। এতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও সতেজ। এ ছাড়াও গায়ের দুর্গন্ধ কমাতেও তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন।
- যারা বেশি ঘামেন তারা প্রতিদিন একবার করে তেজপাতা বাটা মেখে আধাঘণ্টা থাকার পর গোসল করে নিতে পারেন। এতে ঘামের মাত্রাটা কমে যাবে। আবার ঘামাচিরও উপশম হবে।
- চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। জানেন কি, এ সমস্যারও সমাধান আছে তেজপাতায়। এর নির্যাস ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যা অনেকটাই কমে। পাশাপাশি খুশকি ও চুলের রুক্ষতাও কমে।
- তেজপাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও মাইক্রোব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। এটি ক্ষত সারাতে দারুণভাবে কাজ করে।
- যদি দিনের শেষে আপনার মনমেজাজ ভালো না লাগে তাহলে এক কাপ তেজপাতার চা খেয়ে দেখতে পারেন। এটি আপনার স্নায়ু শান্ত করে ও উদ্বিগ্নতা কমায় এমনকি ভালো ঘুমের জন্যেও উপকারী।
সতর্কতা
তেজপাতা গর্ভবতী মা ও সদ্য মায়েদের প্রস্রাবের ইনফেকশন ঘটাতে পারে। এছাড়া সার্জারি রোগীদের দুই সপ্তাহ তেজপাতা খেতে নিষেধ করা হয় কারণ এটি স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।