গরমের ক্লান্তি, জ্বর নাকি হিটস্ট্রোক? জেনে নিন লক্ষণ

ভয়াবহ গরমের এই সময়ে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই। গরমে ও রোদে বাইরে বের হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এই তাপমাত্রা বেড়ে ১০৪ ডিগ্রি বা এরও বেশি হয়ে গেলে মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। এই পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। বিবিসিতে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল জানাচ্ছে গরমের ক্লান্তি, জ্বর ও হিটস্ট্রোকের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। গরমে ক্লান্ত লাগা কিংবা সাধারণ জ্বর এর সাথে হিটস্ট্রোকের পার্থক্য বোঝা খুব জরুরি। কেননা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতিভেদে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

গরমের ক্লান্তি নাকি হিটস্ট্রোক?
গরমে ক্লান্ত লাগলে প্রচুর ঘাম হবে। কিন্তু হিটস্ট্রোকের ক্ষেত্রে ঘাম হবে না। ত্বক হয়ে পড়বে শুষ্ক ও লালচে। তবে দুই ক্ষেত্রেই বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে। গরমে মাংসপেশির আড়ষ্টতা দেখা দিতে পারে। তবে এটা হিটস্ট্রোকের লক্ষণ নয়। হিটস্ট্রোকের লক্ষণ হচ্ছে চোখে ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া, অবসাদ ও দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম করা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

জ্বর নাকি হিটস্ট্রোক?
হিটস্ট্রোকের আগাম লক্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম হল, জ্বরের মতো গা গরম হয়ে যাওয়া। তাই অনেকেই সাধারণ জ্বরের সঙ্গে পার্থক্য করতে পারেন না। ফলে চিকিৎসা বিভ্রাট হতে পারে। তবে সাধারন জ্বর এবং হিটস্ট্রোক এই দুটোর মধ্যে ফারাক রয়েছে।
টানা রোদে কাজ করলে, ঘরে বা কারখানায় গরমের মধ্যে একটানা কাজ করার পরে শরীর তেতেপুড়ে যাওয়ার মতো গরম হলে ধরে নিতে হবে সেটা হিটস্ট্রোকের আগাম সতর্কতা। অপরদিকে ব্যাক্টিরিয়া বা ভাইরাসজনিত জ্বর হলে আগে শীত করবে, কাঁপুনিও দিতে পারে। প্রথমটার ক্ষেত্রে দেরি না করে তাঁকে ছায়ার মধ্যে, পাখার তলায় বা এসি রুমে বসিয়ে যতটা সম্ভব তাঁর পোশাক খুলিয়ে পর্যাপ্ত জল দিয়ে গোটা শরীর মুছিয়ে দিতে হবে। রোগীর যদি জ্ঞান থাকে তা হলে জল, ওআরএস খাওয়ানো যেতে পারে। এতে শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা কমবে। কিন্তু আচ্ছন্ন বা অজ্ঞান অবস্থায় থাকলে ঠোঁট ফাঁক করিয়ে জল বা ওআরএস খাওয়ানো একদমই উচিত নয়। জল ফুসফুস বা শ্বাসনালিতে ঢুকে গেলে বিপদ বাড়বে। তাই তাড়াতাড়ি নিকটবর্তী স্বাস্থকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া দরকার।

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে করণীয়
কেউ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে বুঝলে সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। রোদ থেকে সরিয়ে ছায়ায় নিয়ে গিয়ে গায়ের ভারি কাপড় খুলে দিন। গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালুন কিংবা গা স্পঞ্জ করে দিন। শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে গেলে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান রোগীকে।

হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে কী করবেন?

  • প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানিজাতীয় খাবার খান। ডাবের পানি, স্যালাইন, পানিজাতীয় ফল ও সবজি রাখুন খাদ্যতালিকায়।
  • দুপুরের কড়া রোদে বের না হওয়ার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে এই সময়ে ব্যায়াম বা রোদে হাঁটাহাঁটি করবেন না।
  • বাইরে বের হলে সঙ্গে পানি রাখুন ও কিছুক্ষণ পরপর পানি পান করুন।
  • ছাতা নিয়ে বের হবেন।
  • হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //