আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ৯মে দেশজুড়ে সংঘাত, সেনাসদরে হামলাসহ নানা অভিযোগের মদদদাতা হিসেবে প্রায় ডজনখানেক মামলার আসামী হিসেবে রাওয়ালপিন্ডি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। আর সে ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) ইসলামাবাদ জবাবদিহি আদালত ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে তোষাখানা মামলার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
চার্জশিটে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার শাসনামলের সময় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের দেয়া ১০৮টি উপহারের মধ্যে নিজে ৫৮ টি রেখে দেন। ইসলামাবাদের জবাবদিহি আদালত তোশাখানা মামলার প্রসঙ্গে অভিযোগ আমলে নিয়ে বলেন, ইমরান এসব উপহার ‘নামমাত্র মূল্যে’ নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর বুশরা বিবির বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, তিনি তোশাখানা বিধি উপেক্ষা করে সুন্দর ও ব্যয়বহুল গয়নাগুলো নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন।
এদিকে খানকে নতুন করে কমপক্ষে ১২টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খান বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) ইমরান খানের দুই দিনের রিমান্ড (শারীরিক) মঞ্জুর করেন। জানা গেছে, আদিয়ালা কারাগারেই ইমরান খানকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তোশাখানা মামলার কার্যক্রম ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছেন বিচারপতি। একই দিনে ১২ সাক্ষীকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
সাক্ষীদের তালিকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সাবেক সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার মুহাম্মদ আহমেদ, উপ সামরিক সচিব কর্নেল রেহান মেহমুদ, তোশাখানার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বেনায়মিন, নিদা রেহমান, ন্যাবের অতিরিক্ত পরিচালক কাইজার মেহমুদ, স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের যুগ্ম পরিচালক সাজিদ খানসহ আরও বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন। জানা যায়, ইমরানের ব্যক্তিগত উপদেষ্টা শোহাইব আব্বাসিও ইমরানের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবেন।
এদিকে জেলে বসে সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, ‘’ক্ষমতাবান পক্ষের লাগাম টেনে ধরেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসেবে একজন অফিস পিয়ন রয়েছে বলেও শুনেছি।‘’ এসময় শেখ রশিদের পক্ষে পিটিআইয়ের সমর্থনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেন, দল এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাবে।
এদিকে তোশাখানা ও আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার-পরবর্তী জামিন চেয়ে ইমরান খানের করা আবেদনটি গতকাল খারিজ হয়ে যায়। পাকিস্তানের জবাবদিহি আদালতের বিচারপতি মোহাম্মদ বশির এদিন জামিন নামঞ্জুর করে দেন। এসময় ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতিসংক্রান্ত আল কাদির ট্রাস্ট মামলাটির কার্যক্রম ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবির পাশপাশি ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে এ মামলায় অভিযুক্ত করেন আদালত।
অন্যদিকে একইদিন আদালত পাকিস্তানের আবাসন ব্যবসার টাইকুন মালিক রিয়াজ, তার ছেলে আহমেদ আলী রিয়াজ এবং অন্য আসামিদের সম্পত্তি জব্দেরও লিখিত আদেশ জারি করেন। একইসঙ্গে মালিক রিয়াজের রাওয়ালপিন্ডির রেভিনিউ এস্টেট কোঠা কালান ও বিমিয়া কানেটসহ ছয়টি সম্পত্তি এবং রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদে পরিচালিত ১১ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দেরও নির্দেশ দেন।
সূত্র: ডন