ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৫ এএম
ডান্ডাবেড়ি পরে বাবার জানাজায় ছাত্রদল নেতা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জেল কোডের ১৯ নম্বর অধ্যায়ের ৭০৮ নং বিধান অনুযায়ী কারাগারের অভ্যন্তরে ‘কারা অপরাধের’ জন্য গুরুতর শাস্তি হিসেবে ৩০ দিনের জন্য ডান্ডাবেড়ি পরানোর আদেশ দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে এই শাস্তি আদালতে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বিচারাধীন মামলার আসামি বা রাজবন্দীদের এ ধরনের দণ্ড দেয়ার কোনও বিধান নেই।
জেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ খেয়াল খুশিমতো বিচারাধীন বন্দি এবং আসামিদের ডান্ডাবেড়ি পরালে তা বিদ্যমান আইন ও সংবিধানের সরাসরি লঙ্ঘন হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল বলেন, ‘যে ফৌজদারি আইন আছে, সেটা হয়েছিলো সিপাহী বিদ্রোহের পরে। লক্ষ্য ছিলো সিপাহীদের দমন করা, এবং ভারতীয়দের সোজা রাস্তায় রাখা। এত বছর পরও যে সেই আইন এখনো প্রচলিত আছে এবং এখানে যারা আইন প্রণেতা হয়েছেন, তারা যে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে সচেতন নন এবং এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেন নাই এটা দু:খজনক।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা দিয়ে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আইনসম্মত নিরপেক্ষ আদালত কর্তৃক প্রকাশ্য বিচার ব্যতীত কাউকে কোনো ধরনের শাস্তি দেয়া যাবে না।
আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, ‘যে সমস্ত আসামিদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা শৃঙ্খলা জড়িত এবং যাদের মুভমেন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর 'রিস্ক ফ্যাক্টর' আছে এবং যারা 'হ্যাবিচুয়াল অফেন্ডার', অর্থাৎ সুযোগ পেলে পালিয়ে যেতে পারে সে ক্ষেত্রেই কেবল ডান্ডাবেড়ি পরাতে হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলায় ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় এক যুবকের বাবার জানাজায় অংশ নেওয়ার একটি ছবি দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই যুবক বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের একটি উপজেলার যুগ্ম আহবায়ক।
এই ছাত্রদল নেতার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, পটুয়াখালীর এই ঘটনাটা মানবাধিকারের দৃষ্টিতেও ঘৃণিত এবং তাকে সামাজিকভাবে এবং পারিবারিকভাবেও চরম হেনস্থা করা হচ্ছে।
আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘খুব যদি ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী থাকে। তাদের জন্য ডান্ডাবেড়ি ছাড়া উপায় থাকে না। যাদের বিরুদ্ধে অনেক ধরনের এলিগেশন থাকে তাদেরকে ডান্ডাবেড়ি পড়ানো হয়। তবে এর পাশাপাশি মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। বিবিসি