নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১১:১১ পিএম
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত
ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হঠাৎ মারা গেলে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। খবর আল-জাজিরার।
ইরানের রাজনৈতিক ক্রমানুসারে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি এবং প্রেসিডেন্টকে সরকারের প্রধান, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
যখন সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মারা যান, তখন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্বে থাকবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে দেশকে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার জন্য একটি নির্বাচনে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার আছড়ে পড়ে। ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ওয়াহিদি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে জোলফা এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এতে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যায়নি।
দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ জানান, আছড়ে পড়া হেলিকপ্টারটিতে রাইসি ছিলেন না। আবার অনেকে দাবি করেন, প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার থেকে হেডকোয়ার্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
তবে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইরানি প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারে না থাকা এবং হেলিকপ্টার থেকে যোগাযোগ করার যে তথ্য ছড়ানো হয়েছে- সেগুলোর কোনোটিই সত্যি নয়।
কিন্তু যেটি সত্য সেটি হলো রাইসি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাকে খুঁজে পেতে অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে পার্স টুডের খবরে বলা হয়, হেলিকপ্টারটিতে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রাহমাতিসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন।
জানা গেছে, সীমান্ত এলাকায় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথভাবে একটি বাঁধ উদ্বোধনের পর তিনি শহরে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। এসময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অবতরণে বাধ্য হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সেখানে এখনও উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি।
ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর সেটি থেকে জরুরি ফোনকল এসেছিল। হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোন করেছিলেন। ফলে এ দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে বলা হয়েছে, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি পার্বত্য অঞ্চল এবং বনজঙ্গলে ঘেরা। ইরানের জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র বাবাক ইয়েকতাপারাস্ত ইরনাকে বলেছেন, ঘটনাস্থলের উদ্দেশে একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে সেটি সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।
৪০টি উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক আলী হাশেম। উদ্ধারকারীদের সঙ্গে আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও একাধিক ড্রোন রয়েছে। এসব সত্ত্বেও হেলিকপ্টারটি না খুঁজে পাওয়ার কারণ সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফুয়াদ ইজাদি বলেছেন, ‘হয়তো দুর্ঘটনাটি খুবই মারাত্মক হয়েছে বা যেখানে দুর্ঘটনাটি হয়েছে, সেখানে যোগাযোগের নেটওয়ার্ক নেই। তাই হেলিকপ্টারটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।’
ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোনকল করেছিলেন। তবে কথা শেষ হওয়ার আগেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।