বিশ্ব আদালতে গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ইসরায়েলের

জাতিসংঘের শীর্ষ আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকার আনা গাজায় গণহত্যার অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও আমূল বিকৃত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।

নেদারল্যান্ডসের হেগের এই আদালতে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানির পর আজ শুক্রবারের (১২ জানুয়ারি) শুনানিতে ইসরায়েল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে।

গাজায় ইসরায়েলের হামলা অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদালতে বিচারকদের আহ্বান জানিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ হত্যার অভিযোগ করে তারা। আরও বলা হয়, ইসরায়েলের লক্ষ্য ছিল গাজাবাসীকে নিশ্চিহ্ন করা।

তবে ইসরায়েল এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা যুক্তি দেখিয়ে বলেছে, “ইসরায়েল নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য লড়ছে এবং ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে; ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে নয়। তাই এটি কোনও গণহত্যা নয়।”

ফলে গাজায় হামলা বন্ধের দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধও ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে।ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনি উপদেষ্টা তাল বেকার আদালতকে বলেছেন, “গণহত্যা যদি হয়েই থাকে, তবে সেটা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছে। হামাস ইসরায়েলে গণহত্যা চালানোর চেষ্টা নিয়েছে।”

অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক আইনকে শ্রদ্ধা করে এবং নিজেদের সুরক্ষার অধিকার তাদের আছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ তুলে হামলা বন্ধের দাবিতে গত ডিসেম্বরের শেষদিকে আইসিজে-তে মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

হলোকাস্টের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে জেনোসাইড কনভেনশন গৃহীত হয়। যে কনভেনশনে একটা জাতি/ নৃতাত্ত্বিক / গোত্র/ ধর্মীয় গোষ্ঠিকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে সংগঠিত কার্যক্রম 'জেনোসাইড' বলে বর্ণনা করা হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগ, ইসরায়েল গাজায় কনভেশনের শর্ত লঙ্ঘন করছে। আদালত এমাসের শেষের দিকে সম্ভাব্য জরুরি পদক্ষেপের বিষয়ে রায় দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে গণহত্যার অভিযোগের বিষয়ে রায় হতে কয়েকবছর লেগে যেতে পারে।

তাছাড়া, নেদারল্যান্ডসের হেগ- এ অবস্থিত আইসিজে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত হলেও কোনও রাষ্ট্রকে এর আদেশ মানতে বাধ্য করতে পারে না। যে কারণে আদালতটির আদেশ প্রায় সময়ই উপেক্ষিত হয়।  

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //