আমরা আজ যে জায়গায় আছি সেটি বিশ্বে সমানতালের

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কিংবদন্তিতুল্য ব্যক্তিত্ব মোস্তাফা জব্বার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জন্য পরিচিত হলেও তার কর্মকাণ্ড কেবল এই জগতেই সীমিত নয়, দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার প্রসার ও শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের ব্যাপারেও তিনি অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার একাধারে সাংবাদিকতা, প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাধারণ বিষয়ের ওপর অনেক বইয়ের লেখক, কলামিস্ট ও সমাজকর্মী। এরই মাঝে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অন্তত ২৬টি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার উদ্ভাবিত বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা আন্তর্জাতিক উইটসা পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাম্প্রতিক দেশকালের সহকারী সম্পাদক মুহাম্মদ ওয়াশিকুর রহমান। 

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শুরু থেকেই আপনি এর সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শুরুটা জানতে চাই?

বাংলাদেশে কম্পিউটার প্রযুক্তির শুরু ১৯৬৪ সালে। তৎকালীন পাকিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে ১৯৬৪ সালে একটি আইবিএম মেইন ফ্রেম ১৬২০ কম্পিউটার পাঠায়। জাহাজে চড়ে বিশাল আকৃতির এক কম্পিউটার যুক্তরাষ্ট্র থেকে তৎকালীন পাকিস্তানে আসার কথা; কিন্তু এই যন্ত্র আগে পশ্চিম পাকিস্তানের কেউ চোখে দেখেনি। অবশেষে খোঁজাখুঁজি করে পূর্ব পাকিস্তানের একজনকে পাওয়া যায়। তার নাম মো. হানিফউদ্দিন মিয়া। তিনি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বিষয়ে বুলগেরিয়া থেকে ট্রেনিং করে এসেছিলেন। অগত্যা ডাক পড়ল তার। পাকিস্তানের লাহোরে গিয়ে এই কম্পিউটারের ব্যবহারের কথা বলা হলো তাঁকে। বলা হলো, সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রথম কম্পিউটারের সেই প্রোগ্রামার নাটোরের মো. হানিফউদ্দিন মিয়া বেঁকে বসলেন। নিজের দেশ ছেড়ে কোথাও যাবেন না তিনি। কি আর করা! অবশেষে ঢাউস সাইজের কম্পিউটারটি বসানো হলো ঢাকার আণবিক শক্তি কমিশনে। হানিফউদ্দিনের হাতেই শুরু হলো সেটার ব্যবহার। এই হলো দেশের প্রথম কম্পিউটার ও কম্পিউটার প্রোগ্রামের পেছনের গল্প। ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ টেলিভিশনে এক অনুষ্ঠানে আমি তার একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই ভিডিও রেকর্ডটি বিটিভি রাখতে পারেনি। আনবিক শক্তি কমিশনে কম্পিউটার আসার পর হাবিব ব্যাংক, ইউনাইটেড ব্যাংক, আদমজী জুট মিলে হিসাব-নিকাশের জন্য ব্যবহৃত এসব কম্পিউটার ছিল তৃতীয় প্রজন্মের মেইনফ্রেম ধরনের কম্পিউটার। 

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহারের শুরুর খুব বেশি তথ্য নেই। তবে ১৯৮১ সালের পর ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করেছে আমার পরিচিত দু’জন; সাফকাত হায়দার ও আবদুল্লাহ এইচ কাফি। আমি ১৯৮৭ সালের ২৮ এপ্রিল মেকিন্টোস কম্পিউটার প্রথম স্পর্শ করি এবং কম্পিউটার ব্যবসায়েও প্রবেশ করি। প্রকৃতপক্ষে সে সময় থেকেই বাংলাদেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রসারের যাত্রা শুরু হয়। সেই বছরই বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিরও জন্ম হয়। বলে রাখা ভালো, বাংলায় কম্পিউটার ব্যবহারের বিজয়গাথা কিন্তু অ্যাপল-মেকিন্টোস ব্যবহারের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। মেকিন্টোসের জন্ম ৮৪ সালের জানুয়ারিতে। সাইফুদ্দাহার শহীদ প্রথম মেকিন্টোস কম্পিউটারে বাংলা প্রচলন করেন। এরপর আমি বাংলা প্রচলন করি। মূলত বাংলাদেশে কম্পিউটারের বিপ্লবটা বাংলা প্রকাশনা থেকেই শুরু। 

দেশের সংবাদপত্র, প্রকাশনা ও মুদ্রণ শিল্পের ডিটিপি বিপ্লবের অগ্রনায়ক আপনি। কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরুর গল্পটা জানতে চাই 

১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে প্রথম আসে মেকিন্টোস কম্পিউটার। আমি সে সময় মাসিক নিপুণ নামে একটি পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। পত্রিকাটির মান উন্নয়নের জন্য মাঝে মাঝে ফটোটাইপ সেটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে পত্রিকা প্রকাশ করতাম। তখন ইনকিলাব, দৈনিক বাংলাসহ দু’একটি জাতীয় পত্রিকা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করত। এটি জটিল প্রক্রিয়ায় কাজ করত। বাংলায় কীভাবে আরও ভালো ছাপা যায় সে জন্য লন্ডনের ভেরিটাইপার নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে টাইপসেটার কেনার জন্য যোগাযোগ করলাম; কিন্তু ওই মুহূর্তে ম্যাকওয়ার্ল্ডেও একটি প্রতিবেদন দেখলাম; কম্পিউটার ব্যবহার করে পত্রিকা প্রকাশ করা সম্ভব। তাই দেশে ফিরে কাকরাইলের আসিফ ম্যানসনেবিইএসএল নামক একটি অ্যাপল ডিলারে গিয়ে বললাম আপনারা তো ইংরেজি পত্রিকা ঢাকা কুরিয়ার কম্পিউটারে কম্পোজ করাচ্ছেন; কিন্তু কম্পিউটার দিয়ে কি বাংলা পত্রিকা কম্পোজ করা যাবে? ওখানে মইনুল হাসান নামের এক ভদ্রলোক ছিলেন। তিনি বললেন, কম্পিউটারের কোনো ভাষা নেই, তাই আপনি যে ভাষা দেবেন তাতেই ছাপানো সম্ভব। আমি বললাম দেখান। তিনি ম্যাক ড্র সফটওয়্যার দিয়ে বাংলা হরফ এঁকে দেখালেন। আমি বললাম এটা তো দেখালেন কিন্তু পত্রিকা বের করব কীভাবে? তখন তিনি বললেন একটি ফন্ট লাগবে। আমি বললাম তাহলে বাংলা ফন্টের ব্যবস্থা করেন। এর কিছুদিন পর যেতে বললেন। গেলাম। উনি ভারতের কলকাতার রাহুল কমার্সের তৈরি একটি বাংলা ফন্ট দেখালেন; কিন্তু সেটার কিবোর্ড ভারতের বাংলা কিবোর্ড এর আদলে ছিল বলে আমাদের কেউ সেটি ব্যবহার করতে পারেনি। তখন মইনুল হাসান সাহেব বললেন, কিবোর্ড এর নকশা আমি বানাতে পারব না। আপনি দেখেন পারেন কিনা। এরপর আমি খেটে-খুটে মুনীর কীবোর্ড এর ভিত্তিতে দুই স্তরের বদলে চার স্তরের একটি কিবোর্ড লে-আউট তৈরি করলাম এবং নাম দিলাম আমার বাবার নামে ‘জব্বার কিবোর্ড’। মাইনুল সাহেব রাহুল কমার্সের ফন্টটাকে ‘জব্বার কিবোর্ড’ এর লেআউটে সাজালেন। ফন্টের নাম দিলেন মাইনুল লিপি। ইতিমধ্যে আমি একটি নতুন পত্রিকার ডিক্লারেশন পেলাম যার নাম আনন্দপত্র। ১৯৮৭ সালের ১৬ মে প্রথম মাইনুল লিপি দিয়ে বাংলা পত্রিকা আনন্দপত্র প্রকাশ করলাম। তখন আমি পত্রিকার মেক আপ করে মাইনুল সাহেবের বাংলা কম্পিউটার সার্ভিস থেকে লেজার প্রিন্ট নিতাম। সেটাই বাংলাদেশে কম্পিউটারের প্রসার এবং মুদ্রণ ও প্রকাশনায় বড় মাইলফলক। 

এই সময় এ্যাপল এর ডিলারবিইএসএল তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে চাইলে আমি তাদের কম্পিউটার লট কিনে নিলাম। সেপ্টেম্বর মাসে অ্যাপলের বাংলাদেশের ডিলারও হলাম। তখন আমার কাছে লেজার প্রিন্টারও আসে। তাই নিজে নিজে পত্রিকা প্রকাশের জন্য মইনুল সাহেবের কাছে ফন্টের কপি চাইলাম। এখানে বলে রাখি তখন মুদ্রণ মানের ছাপার জন্য দুটি ফন্ট লাগতো; একটি ডিসপ্লেতে দেখার জন্য অন্যটা প্রিন্টারে ব্যবহার করার জন্য। মইনুল সাহেব ডিসপ্লের ফন্টটা দিলেও প্রিন্টারের ফন্টটা দেননি। লেজার প্রিন্টার ছিল না বলে বিটম্যাপ ফন্ট দিয়েই কাজ চলছিল; কিন্তু লেজার প্রিন্টার পাবার পর আমি নিজের লেজার ফন্ট বানানোর কাজে হাত দিলাম। তখন মেকিন্টোসে ফন্টোগ্রাফার নামে একটি সফটওয়্যার ছিল। সেটা নাড়াচাড়া করে ফন্ট বানানোর কাজে লেগে গেলাম। দৈনিক আজাদের হামিদুল ইসলাম নামে আমার অতি প্রিয়ভাজন এক শিল্পীকে দিয়ে ফন্ট ডিজাইন করালাম। হামিদ সেলোফিনে হরফ একে দিয়েছিল। সেই সেলোফিন কম্পিউটারের পর্দায় এটে তাকে আমি আবার ডিজিটাল হরফে রূপান্তর করি। সেই ডিজাইন থেকে যে নতুন ফন্ট বানালাম নাম দিলাম ‘আনন্দ’। মেকিন্টোসে এমএস ওয়ার্ড আসায় কাজটি আরও সহজ হলো। তবে জব্বার কিবোর্ডে ৪ স্তরের জটিলতা ছিল বলে দুই স্তরের কিবোর্ড তৈরির কথা ভাবলাম। ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ করি বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও সফটওয়্যার। বিজয়-এর প্রথম প্রোগ্রামার ছিলেন ভারতের দেবেন্দ্র জোশী। প্রথমে মেকিন্টোস কম্পিউটারের জন্য বানানোর কারণে কম্পিউটারের সঙ্গে সফটওয়্যার বিনামূল্যে বিতরণ করতাম। পরে ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্যও বিজয় বাংলা কীবোর্ড ও সফটওয়্যার প্রকাশ করি। তখন এটা বিক্রি শুরু করি। এরপর লিনাক্সের ও অ্যান্ড্রয়েড এর সফটওয়্যার ফ্রি দিতে থাকি। 

কম্পিউটারের বাংলা নিয়ে নিরন্তরভাবে কেন কাজ করে গেলেন। আবার এখনো করছেন! 

প্রথমত, আমি পত্রিকা এবং কম্পিপউটার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। একটি ছিল প্রয়োজন অন্যটা প্যাশন। কম্পিউটার ব্যবসায়ে এগিয়ে থাকার জন্য আমি আমার ক্রেতাদের যত বেশি সুবিধা দেওয়া যায় সেটি নিশ্চিত করতে চাইতাম। দ্বিতীয়ত, আমার পত্রিকাটিকে আরও সুন্দর করে পাঠকের কাছে পৌছে দেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ছিল। কাজটা করতে গিয়ে যত বাধা পেয়েছি তত ভেতরে প্রবেশ করেছি। এরপর আর সেখান থেকে বের হতে পারিনি। এখনও চলছে। এখনও প্রতিদিনই সফটওয়্যার, ফন্ট এগুলোর সমস্যা সমাধান আর উন্নয়নে কাজ করি। এটি এখন আমার জীবনের ব্রত।

বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল বাংলা নিউজ সার্ভিস আনন্দপত্র বাংলা সংবাদ বা আবাসের প্রতিষ্ঠাতা আপনি। ডিজিটাল গণমাধ্যমের বিকাশ ও অগ্রযাত্রাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? 

তুমি ঠিকই বলেছ। আবাস প্রতিষ্ঠার পেছনে ছিল প্রয়োজন। বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও কম্পিউটার ব্যবসার প্রয়োজনে দেশের প্রায় সকল পত্রিকায় আমি কম্পিউটার দিয়েছিলাম; কিন্তু তখন মফস্বল পত্রিকায় জাতীয় খবর ছাপা হতো দুইদিন পর। মানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সংবাদ আদান প্রদানে বিশাল সময় গ্যাপ ছিল। সেটাকে কমাতে প্রথমে ফ্যাক্স মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে কাজটি শুরু করলাম। আমার সেগুনবাগিচার বাসা থেকে শুরু করেছিলাম। তখন আমরা নিউজ কম্পোজ করে মফস্বলের পত্রিকায় ফ্যাক্স করে দিতাম। এই কাজে সবচেয়ে বড় সহযোগিতা পেয়েছিলাম বগুড়ার দৈনিক করতোয়া থেকে। করতোয়া তখন কম্পিউটারে প্রকাশিত হয়। এ জন্য বহুদিন করতোয়ার অফিসে রাত কাটিয়েছি। করতোয়ার প্রকাশনাকে আরও সহজ করতে অ্যাপলের একটি প্রযুক্তি অ্যাপলটক লাগিয়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করি। এতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এলো। এই নেটওয়ার্কে কম্পোজ করা নিউজ, ছবি সবই সরাসরি আদান-প্রদান করতে পারতাম। করতোয়া পত্রিকা সরাসরি সেগুলো প্রকাশ করতে পারত। তখন সেটা ভাবা অসম্ভব ছিল। এরপর মফস্বলের সকল পত্রিকা এই নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়। গড়ে ওঠে আবাস। আমরা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আমাকে তখন নির্বাচনি টিমে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন ডিজিটাল বার্তা সংস্থা (আনন্দপত্র বাংলা সংবাদ বা আবাস) এর মাধ্যমে উনার বিভিন্ন স্থানের জনসভার খবর সর্বত্র পাঠানো শুরু করলাম। এর ফলে শেখ হাসিনার জনসভার সংবাদ পরের দিন ছাপা হয় আর খালেদা জিয়ার জনসভার খবর তারও একদিন পরে ছাপা হয়। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মাঝে শেখ হাসিনাই প্রথম কম্পিউটার ব্যবহার করেন। তিনি নিজে কম্পোজ করে দলের প্রেস রিলিজ পত্রিকা অফিসে পাঠাতেন। 

আপনার হাতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণীত হয়েছে। আইনটি অপব্যবহারের বেশ অভিযোগ রয়েছে। অনেকে মনে করেন আইনটি দেশে বাক-স্বাধীনতা তথা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্যও পরিপন্থী। আপনার অভিমত কী?

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আগে যে আইসিটি অ্যাক্ট ছিল সেটা কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তার আইন ছিল না। সেটা মূলত ছিল ডিজিটাল সিগনেচারবিষয়ক আইন। ১৩ সালে হেফাজতের ঘটনার পর কিছু ধারা পরিবর্তন করে এতে ডিজিটাল নিরাপত্তার কিছু বিধান যুক্ত করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই আইনটি খুবই দরকার ছিল। আইনটির উদ্দেশ্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে মিথ্যা কুৎসারটনা, ঘৃণা, জঙ্গিবাদ ছড়ানো হচ্ছে সেটি প্রতিরোধে এমন একটি আইন খুবই দরকার ছিল। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন যেভাবে কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা, আপত্তিকর ও মানহানিকর অপপ্রচার করা হয় এবং যেভাবে রাষ্ট্রবিরোধীতা, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার করা হয় কিংবা পর্নো, জুয়া, নারী ও শিশু হয়রানি হয় তাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন না থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয়। এই আইনটি তৈরির আগে সব অংশীজনদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অভিমতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের কথা অনুসারে যেসব ক্ষেত্রে পরিবর্তন দরকার, তার সবই করা হয়েছে। তবে সংসদে পাশ করার সময় একটি সংশোধনী আনা হয়েছে; সেটি হচ্ছে পুলিশ যদি কাউকে গ্রেফতার করতে চায় তখন ডিএসএ-র অনুমতি নেওয়ার ধারাটা বাদ দেওয়া হয়েছে। এই আইন নিয়ে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সমালোচনা করার সুযোগ নেই। 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হয়। এটা মানছি। অনেক আইনেরই অপপ্রয়োগ হয়েছে বা হয়; কিন্তু এর জন্য আইন নয় আইন অপব্যবহারকারী দায়ী। আমাদেরকে অপব্যবহার ঠেকাতে হবে। এক্ষেত্রে যেটা দেখতে হবে যে রাষ্ট্রীয়ভাবে এর অপ্রয়োগ করা হচ্ছে কিনা। সেটি কিন্তু হচ্ছেনা। ব্যক্তি এর অপপ্রয়োগ করছে। যারা এটি প্রয়োগের সঙ্গে যুক্ত, তারা সচেতন থাকলে অপব্যবহার হবে না। সরকার অপপ্রয়োগ প্রতিরোধে কাজ করছে। এটি কোনোভাবেই বাক স্বাধীনতা বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেনা বরং সহায়তা করছে। 

সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ সক্ষমতা কতটুকু আমাদের?

সাম্প্রতিককালে ডাটার ব্যবহার অনেক বেড়েছে। ফলে প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভালো মানুষের পাশাপাশি খারাপ মানুষও অধিক পরিমাণে যুক্ত হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা এত দ্রুত অগ্রসর হচ্ছি যে, ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে আগের প্রস্তুতি পর্বটা গড়তে তেমন সময় আমরা পাইনি। বস্তুত এই সক্ষমতা তৈরির জন্য যে পরিমাণ সময় পাওয়া দরকার ছিল তা অপ্রতুল ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সিটিডিআর নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করি ও তার মাধ্যমে অসংখ্য পর্নো ও জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। আমাদের নিত্যনতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ করতে হচ্ছে, শিখতে হচ্ছে। সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে আমরা সরাসরি যোগাযোগ করছি। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে ডিজিটাল অপরাধ দমন করতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ডিজিটাল দক্ষতা লাগবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। 

তরুণ প্রজন্ম সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছে। আপনি কি মনে করেন সামাজিক অবক্ষয় ও ডিজিটাল ক্রাইম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এটি? 

এই অভিযোগ আমি পুরোপুরি অস্বীকার করছি না। তবে ডিজিটাল অপরাধ বাড়ার এটাই একমাত্র কারণ নয়। নতুন প্রযুক্তি বা নতুন বিষয় এলে সেগুলোতে তরুণ-তরুণীরা আকৃষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ওদেরকে নিয়ে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে তাদের সচেতনতার অভাব। আগে দেখেছি ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ভাইরাল করার ঘটনা ঘটেছে। এখন কিন্তু সে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। আমার মনে হয় এক্ষেত্রে পরিবারকে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা দেখেছি পারিবারিক অসচেতনতার কারণে বাচ্চারা বিপথে চলে যায়। আমাদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সঠিক পথে চলতে যথাযথ দিক নির্দেশনা দিতে পারছেন না বলে মনে হচ্ছে। অভিভাবদের সন্তানদের সব বিষয়ে নজরদারি করতে হবেই। 

দেশে ফাইভজি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। অথচ স্বাভাবিক নেটওয়ার্ক নিয়েও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ফাইভজি প্রযুক্তির বাস্তবায়ন ও ব্যবহার কতটুকু বাস্তবসম্মত?

দুটি দুই বিষয়। প্রথমত, নেটওয়ার্ক সমস্যার বিষয়টির জন্য অপারেটররা দায়ী। কোনো অপারেটরের প্রয়োজন ১০০ মেগাহার্টজ কিন্তু তারা ৪০ মেগাহার্টজ দিয়ে সেবা দিচ্ছে। এতে গুণগত মান থাকছে না। এর বাইরেও যেসব কারণ আছে তা সারানোর জন্য আমরা কাজ করছি। সে জন্য প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকার কোনো যুক্তি নাই। 

দ্বিতীয়ত, ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহার কিংবা প্রায়োগিক বিষয়টি ভিন্ন। ৫জি শুধু উচ্চগতির ডিজিটাল সংযোগই নয়, এটি ডিজিটাল যুগের আধুনিক প্রযুক্তির মহাসড়ক। ২০২১ সালে ৫জি যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ৫জি জীবনের সব ক্ষেত্রে, কৃষি ও শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করে একটি নতুন যুগ তৈরি করবে। সেটি হবে কৃষি, শিল্প ও তথ্যযুগের পরের ডিজিটাল যুগ। কৃষি যুগের বাংলাদেশকে তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করার পরও ডিজিটাল যুগে নেতৃত্ব দেবার উপযোগী করে গড়ে তুলছি আমরা। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। এটা তো সাধারণ ব্যবহারের বিষয় নয়। নেটওয়ার্ক বা ফ্রিকোয়েন্সিও আলাদা। সুতরাং দুটি একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হচ্ছে না। আমরা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বের চাইতে পিছিয়ে থাকতে চাই না। আমরা প্রচলিত মোবাইল নেটওয়ার্কও উন্নত করছি। 

রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের কাছে মানুষের অনেক আশা ছিল; কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সেক্ষেত্রে অনেকাংশেই ব্যর্থ এমন অভিযোগ রয়েছে। আপনি কী বলেন?

টেলিটক দেশের অনেক জায়গায় একমাত্র অপারেটর। বিশেষ করে দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকাতে। অথচ অতীতে বাণিজ্যিকভাবে টেলিটককে দাঁড় করানোর জন্য তেমন বিনিয়োগ করা হয় নাই। অন্যদের ১০ভাগের ১ ভাগ বিনিয়োগ দিয়ে কি প্রতিযোগিতায় দাঁড়ানো সম্ভব? তবে এটুকু জানাতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি, আগামী ২ বছরের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাওয়া যাবে। মনে রাখতে হবে অন্য অপারেটরগুলো অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে, টেলিটক কিন্তু পায় নাই। 

বাংলাদেশ স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছে। ২০২৩ সালে আরও একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কাজ চলছে। কেন আরও একটি স্যাটেলাইট আমাদের প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সর্বোচ্চ ব্যবহার কি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী? বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট এর ক্ষেত্রে কতটা সফল হবে?

দেশ হিসেবে আমরা বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইটের মালিক। বিশ্বের অনেক দেশের শতাধিক স্যাটেলাইট আছে। এটি কিন্তু বিভিন্ন ধরনের। আমাদের বর্তমানটি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট। আমাদের পরেরটি হবে আবহাওয়া বা সমুদ্রসীমার পাহারা দেওয়ার মতো কাজগুলো করার জন্য। আমরা প্রযুক্তিগত সুবিধাগুলো প্রসারিত করার জন্য নতুন নতুন স্যাটেলাইট করব। আর বর্তমান স্যাটেলাইটের সি ব্র্যান্ডের সব ট্রান্সপন্ডার কিন্তু বিক্রি হয়ে গেছে। সুতরাং কোম্পানিটি প্রফিটেবল জায়গায় পৌঁছে যাবে খুব শিগগিরই। এটা কিন্তু থেমে থাকার বিষয় নয়। এটা চলমান বিষয়। 

আপনি বারবার বলেন ডিজিটাল প্রযুক্তিই হবে আগামী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার মূল শক্তি? চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে আমরা নেতৃত্ব দিব। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে আমাদের সক্ষমতা কতটুকু রয়েছে? 

আগামী দিনের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মহাসড়ক গড়ে তুলছি আমরা। বাস্তবতার দিক থেকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ছাড়া প্রায় সবাই ৩য় শিল্প বিপ্লবের কাজ শেষ করছি। আশার কথা আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন উপাদানগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আমি বলবো আমরা প্রস্তুতি পর্বে এগিয়ে আছি। প্রস্তুতিও খুব একটি পিছিয়ে নেই। অবশ্যই আমরা নেতৃত্ব দেব। 

বিশ্বের অনেক ভাষায় ওসিআর প্রযুক্তি রয়েছে। বাংলায় ওসিআর প্রযুক্তি পিছিয়ে থাকার কারণ কি? আপনি প্রযুক্তিতে বাংলা ব্যবহারে পথিকৃত। আপনার বিষয়টি কেমন লাগে? আপনি কি কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন? 

কেবল ওসিআর নয় বাংলায় অনেক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করার আছে। ২০১৫ সালে আমি তখন একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি প্রকল্প গ্রহণ করাতে পেরেছিলাম। সেখানে ১৬টি টুলস ডেভেলপ করার কথা। সেটার বর্তমান খবর ঠিক জানি না। সম্ভবত কাজ চলছে। তবে এধরনের প্রকল্প বাণিজ্যিক বা ব্যক্তিগতভাবে উন্নয়ন সম্ভব না। তাই আশা করি খুব শিগগিরই সরকারিভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বাংলা লেখার প্রযুক্তি ইউনিকোড এবং দেশীয় ডোমেইন ডটবিডির সমস্যার সমাধান কতদূর?

১৯৮৭ সালে ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম শুরু হওয়ার পর ৯৭ সাল পর্যন্ত এই কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগই করা হয়নি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। ফলে বাংলা ইউনিকোড সংক্রান্ত যা যা তৈরি হয়েছে তা ভারতের দেবনাগরির অনুকরণে করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও এ ব্যাপারে কোনো কাজ করা হয়নি। ফলে প্রচণ্ড সমস্যা ছিল। ওই সময় ইউনিকোড চার্টে অনেকগুলো বাংলা অক্ষরও ছিলনা। অ্যাপলের নেতৃত্বে ইউনিকোড-এর প্রথম সংস্করণ বের হওয়ার পর আমি এ্যাপলের ডিলার হিসেবে যোগাযোগ করে অনেক চেষ্টার পর কিছু শব্দ যোগ করি। এরপর ২০১০ সালে আমরা ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম এর সদস্য হই। বর্তমানে ইউনিকোডের প্রায় সকল সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। তবে এখন আমাদের ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে এবং আপডেট থাকতে হবে। 

আর ডটবিডি ডোমেইন জনপ্রিয় করতে দাম কমানোসহ বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই ডটকম ডোমেইন কেনার মতোই কেনা যাবে এটি। 

বাংলাদেশের ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে সীমাবদ্ধতাগুলো কী? করণীয় জানতে চাই 

প্রযুক্তি মানবসভ্যতাকে সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার ও প্রায়োগিক দিক থেকে বেশ পিছিয়ে ছিলাম; কিন্তু এখন আমরা কারও থেকে খুব একটি পিছিয়ে নেই। আমি মনে করি সমস্যার সমাধান আগাম করা যায় না। চলতে চলতে সমস্যা আসলে সমাধানও হয়ে যাবে। আমরা লড়াকু জাতি। সব সমস্যার সমাধানই আমরা করতে পারি। এটা আমার অভিজ্ঞতা। 

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রায় সূচনালগ্ন থেকে জড়িত ছিলেন। তাই এই খাতের মন্ত্রী হিসেবে আপনার মূলায়ন জানতে চাই 

আমার সফলতা বা ব্যর্থতার মূল্যায়ন আমি জনগণ ও ভবিষ্যতের ওপর ছেড়ে দিব। আমি সবসবময় কাজ করার ক্ষেত্রে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিষয়টি ভাবনায় রাখি। তবে আমি বলব দুটি জায়গায় আমাদের বড় সমস্যা। এক. শিক্ষা ব্যবস্থা ২. আমলাতন্ত্র। এই দুটি জায়গায় ওভার হোলিং করা দরকার। এই দুটি জায়গাকে ইডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। কাজটা আমরা করছি; কিন্তু গতিটা আরও বাড়াতে হবে। ২০১৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ পর্যন্ত আমি আমার নিজের চৌহদ্দিতে আমূল পরিবর্তন করতে না পারলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের পরিবর্তনের সূচনা করতে পেরেছি। আমি একটি গতি তুলে দিতে চেয়েছি। এই গতি অব্যাহত থাকুক এটাই চাই। 

ভবিষ্যৎ ডিজিটাল বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চান? 

ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নই ছিল পশ্চাৎপদতা পেছনে ফেলে উন্নতবিশ্বের কাতারে দাঁড়ানোর। আমি ২১ শতকে দাঁড়িয়ে বলব, আমরা আজ যে জায়গায় আছি সেটি বিশ্বের সমানতালের। এতটুকুও পিছিয়ে নেই আমরা। হয়তো উন্নত দেশের তুলনায় অগ্রগতির অনেক সূচকে পিছিয়ে আছি; কিন্তু জীবনধারা বা ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ার সকল ক্ষেত্রে আমরা আধুনিক বিশ্বের কাতারে আছি। কোথাও কোথাও এগিয়েও আছি। আমরা শেখ হাসিনার পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চাই। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //