‘জলবায়ু সম্মেলনগুলো প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের নিজস্ব উদ্যোগের কথা বলছে’

ইনামুল হক ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার এর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৮ সালে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি মহাপরিচালক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, মহাপরিচালক হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রধান প্রকৌশলী (ডিজাইন) পানি উন্নয়ন বোর্ড এর দায়িত্ব পালন করেন।

বর্তমানে তিনি জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান। জলবায়ু নিয়ে তিনি সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাসরিন আখতার।

উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে দায়ী হলেও, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গ্লাসগো সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের অর্জন কী বলে আপনি মনে করেন? 

বিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকে বিশ্বের ‘উন্নত’ দেশসমূহের নাগরিকরা নিজেদের ভোগের জন্য অতিমাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে ভূপৃষ্ঠের বায়ুর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে থাকে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তন হয়ে মেরু অঞ্চল ও পর্বতচূড়াসমূহের বরফ গলে ক্রমশ সংকুচিত হতে শুরু করে এবং গলিত পানি সমুদ্রে জমা হয়ে গড় সমুদ্রতল বেড়ে যেতে শুরু করে। ২০০৭ সালের একটি সমীক্ষার মতে ওই সব দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ২০.৪, কানাডা ২০, অস্ট্রেলিয়া ১৬.৩, রাশিয়া ১০.৫, জাপান ৯.৮, ব্রিটেন ৯.৮, জার্মানি ৯.৮, নেদারল্যান্ডস ৮.৭, ইতালি ৭.৭, ফ্রান্স ৬.২ টন/ব্যক্তি/বছর বায়ু উষ্ণতাকারী কার্বন নিঃসরণ করে, যেখানে ভারত ও বাংলাদেশের পরিমাণ ১.২ ও ০.২৫ টন/ব্যক্তি/বছর। একবিংশ শতাব্দীতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় সমুদ্র তটবর্তী দেশসমূহ এবং সমুদ্রতলের উচ্চতার কাছাকাছি দ্বীপসমূহ অচিরেই বর্ধিত সাগরতলের নিচে ডুবে যাবার হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। তখন বলা হয়, আগামী ২১০০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ২০ শতাংশ জমি সাগরে তলিয়ে যাবে, এবং ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূলবর্তী ১.৫ কোটি মানুষ জলবায়ুজনিত কারণে উদ্বাস্তু হয়ে যাবে।

বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ এই রকম হুমকিতে থাকলেও সারাবিশ্ব সামগ্রিকভাবে বিষয়টি দেখছে ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। তাই বিষয়টি অর্জনের নয়, বিষয়টি আশাবাদের। 

২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পরও তো জীবাশ্ম জ্বালানিতে এখন পর্যন্ত কোটি কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে বিভিন্ন ব্যাংকসহ বিশ্বব্যাংক। কোনো দেশ নিজেরা কয়লাভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদন বন্ধেরও ঘোষণা দেয়নি। বরং অনেকে উৎপাদন বাড়িয়েছে, যেমন চীন। এরপরও ২৬তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, তা বাস্তবায়নের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?

জলবায়ু সম্মেলনগুলো একটি রুটিন কাজ। ২০১৫ প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পর লক্ষ্য অর্জনের জন্য ২০২০ সালের মধ্যে রাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব উদ্যোগে জলবায়ু অ্যাকশন প্লান দেবার কথা ছিল। এই প্লানে প্রত্যেক রাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি গ্রিনহাউস গ্যাস নিসঃরণ কমানোর কৌশল (long-term low greenhouse gas emission development strategies) থাকবে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রগুলোর পরিচালকদের সদিচ্ছা ও জবাবদিহিতার ওপর নির্ভর করে। বিশ্ব ব্যাংক এই ধরনের উদ্যোগে দু’ভাবে বিপুল পরিমাণে লাভবান হয়। এক, তারা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ও লগ্নির মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের নামে ব্যয়বহুল সৌর ও রায়ূ শক্তির স্থাপনা নির্মাণ করে যেসব স্থাপনা কখোনোই লক্ষ্য অনুযায়ী উৎপাদন করে না; দুই, বিশ্ব ব্যাংক যেহেতু এই লগ্নিগুলো করে, সেহেতু রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক মহলে সহজেই অজুহাত খাড়া করতে পারে। এভাবে বিশ্ব ব্যাংক একচেটিয়া ব্যবসা করে যায়, যার ফলে রাষ্ট্রগুলোতে জনগণের ওপর বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। 

গ্লাসগো কপ২৬ সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ ৪৫% কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তবে এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে রাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব উদ্যোগে জলবায়ু অ্যাকশন প্লান এর কার্যকারিতা নির্ভর করছে। এই সম্মেলনে ভবিষ্যৎ জলবায়ু বিপর্যয়ে ভীত রাষ্ট্রগুলোর যে পরিমাণ আর্তনাদ প্রকাশ হয়েছে, তার বিপরীতে যত না কাজের কাজ হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে বড় বড় মানুষদের বড় বড় কথা। সমস্ত ঘটনাগুলো গভীরভাবে লক্ষ্য করলে বাংলাদেশের এর থেকে আশাবাদী হবার সুযোগ নেই বলা যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দূষণকারী গ্যাস মিথেন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৯০টির বেশি দেশকে সঙ্গে নিয়ে বৈশ্বিক নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এ চুক্তির অধীনে রাশিয়া, চীন এবং ভারত অন্তর্ভুক্ত নয়। অথচ এ মুহূর্তে চীন এক নম্বর কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। এই বাস্তবতায় বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ কতটুকু সম্ভব বলে মনে করেন আপনি?

আমি এ মুহূর্তে বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে সকলের তরফ থেকেই সম্ভাব্য কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করি। এই সময়ে আলাদাভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে ঘোষণা দিয়েছেন তা’ অনেকটা তুড়ি মেরে সমস্যা সমাধানের মতো, যা’র কোনো পরবর্তী ফল দেখার নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মাতব্বরী বজায় রাখতে সারা পৃথিবীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে সদা প্রস্তুত থাকে। তাই তারা কিছু লোক দেখানো উদ্যোগ নিতে পারে। বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রগুলো এই উদ্যোগের মধ্যে না থাকায় তা’ বেশিদূর আগানোর কোনই সম্ভাবনা নেই। 

পৃথিবীর বাতাসে যত কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশছে, তার অধিকাংশই আসছে - চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও রাশিয়া থেকে। সঙ্গে আছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। প্যারিসে ২০১৫ সালের সম্মেলনে এরা সবাই একমত হয়েছিল - বিশ্বের তাপমাত্রার বিপজ্জনক বৃদ্ধি ঠেকাতে কার্বন নিঃসরণ কমাবে; কিন্তু এখন পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নিয়েছে তারা?

পৃথিবীর বাতাসে যত কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশছে, তার অধিকাংশই যে সকল রাষ্ট্র থেকে আসছে সেই - চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সারাবিশ্বের মানুষের অভিযোগের মুখে আছে। তাই পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে বটে, কিন্তু এখন পর্যন্ত সব কিছুই কাগজে কলমে রয়েছে বলা যায়। 

এবারের জলবায়ু সম্মেলনে অনেক দেশ ২০৫০ থেকে ২০৭০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, অথচ পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জলবায়ুর উষ্ণতা থেকে পৃথিবীকে সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন। ফলে এই দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা কি আদৌ কোনো সমাধান দিবে? জরুরি কোনো পথ কী অবলম্বন করা যেত?

পৃথিবীতে যুদ্ধ জোটের মাধ্যমে যুদ্ধ করা ছাড়া কোন কাজ জরুরিভাবে করা যায় না। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ সার্বভৌম। জলবায়ু সম্মেলনগুলো এখন তাই প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের নিজস্ব উদ্যোগের কথা বলছে। পৃথিবীকে সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো কথা কোথাও নেই। 

অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্ব, ভয়াবহতা বুঝতে ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। ফলে, তাপামাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে আপনার কী মত? এর সমাধান কীভাবে হতে পারে?

জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্ব, ভয়াবহতা বুঝতে ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে কথাটি ঠিক নয়. অতীতেও এইরকম জলবায়ু বিপর্যয় হয়েছে। সেই বিপর্যয়গুলোতে পৃথিবীর প্রাণিকুল সময়ের সঙ্গে ক্রমশ সইয়ে নিয়ে টিকে থেকেছে। আমি মনে করি এবারও তাই হবে। আমাদের শহরগুলোর বিষাক্ত নদী ও দূষিত জলের উপর এবং চরম দূষিত বস্তিগুলোতে মানুষ যেভাবে থাকে ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম টিকে থাকে, সারা পৃথিবীর মানুষসহ অন্যান্য প্রাণিকুল সেভাবেই সময়ের সঙ্গে নিজেদেরকে সইয়ে নিয়ে টিকে থাকেবে। 

স্বাধীনতার পর ১৩০০ নদ-নদী থেকে এখন রয়েছে কেবল ৭শ’টির মতো নদ-নদী। এর মধ্যেও প্রবাহমান নদীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। তাই ঢাকার আশপাশ এলাকার মাত্রাতিরিক্ত দূষণরোধে জরুরি ভিত্তিতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া দরকার বলে নদী বাঁচাও আন্দোলন ১৬টি সুপারিশ করেছিল। এর কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে বলে আপনি মনে করেন।

বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা প্রায় ৩০০০। আমার লেখা ’বাংলাদেশের নদনদী’ বইতে ১২১৫টি নদীর নাম, অবস্থান ও দৈর্ঘ বিস্তৃতভাবে বলা আছে। বিশ্বের অনেক নদীই সারা বছর প্রবাহিত থাকে না। আমার দেশে বর্ষার সময় নদীগুলোর প্রবাহপথ ৩০ হাজার কিলোমিটারের বেশি হয়। সারা বছর প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার নদীপথ আছে, তবে সকল পথে লঞ্চ না চললেও নৌকা চলে। নদী বাঁচাও আন্দোলন এর আন্দোলনকারীরাই বলতে পারবেন তাঁরা কী বলেছিলেন, কী চেয়েছিলেন, তারপর কতদূর কী হয়েছে। 

বাংলাদেশে একের পর এক নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নদীকে বাঁচাতে কী ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে? 

কোনো নদীই হারিয়ে যায়নি। বাংলাদেশের সিএস ম্যাপে ও জেলা পর্যায়ের রাজস্ব দপ্তরগুলোতে এদের রেকর্ড আছে। তবে সরকারী দপ্তরে যেমন জরুরী নথিপত্র ফাইলচাপা হয়ে যায়, তেমনি নদীগুলো বালি চাপা, ময়লা চাপা, দখলচাপা হয়ে আছে। জবাবদিহিতার সরকার থাকলে তারা ওইসব চাপমুক্ত হয়ে প্রকাশিত হবে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে কৃষি ক্ষেত্রে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কৃষিকে মুক্ত রাখা বা ঝুঁকি কমানো যায় কীভাবে।

কৃষি ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো ঝুঁকি নেই। কৃষি ক্ষেত্র ঝুঁকিতে আছে অতি মাত্রায় সার ও কীটনাশক ব্যবহারে, বিজাতীয় গাছপালার আগ্রাসনে, জলাভূমিগুলোর অতি নিষ্কাশনে, এবং খাল ও জলাভূমিসমূহের ওপর কল কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলার ফলে মারাত্মক পরিবেশ দূষণে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষা করে। আমাদের দেশে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার এবং এর উৎস সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির কোনো উদ্যোগ আছে কি?

প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি তথা গাছপালা লতাপাতার জীবাশ্ম জ্বালানির সিংহভাগ নষ্ট হয়ে বায়ুতে উবে যায়। এই জ্বালানি গ্রামাঞ্চলে সকলের ধারে কাছেই আছে। এই জ্বালানির সদ্ব্যবহারের কথা না বলে সবাইকে সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবহারে অভ্যস্ত করা হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে এই জ্বালানির ব্যবহারের কথা না বলে নদীর জলপ্রবাহ, বায়ুপ্রবাহ, সৌরশক্তি, পরমাণু শক্তি ইত্যাদির কথা বলা হচ্ছে ও এসবের স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। নদীর জলপ্রবাহ ড্যাম দিয়ে থামিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, তার ফলে যে লাভ হয় তার বিপরীতে পরিবেশ, কৃষি ও স্থানীয় অর্থনীতিতে ক্ষতি হয় পাঁচগুন। বায়ুপ্রবাহ থেকে বায়ুকল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব, কিন্তু তাতে সারা বছর যথেষ্ট তীব্রবেগে বায়ুপ্রবাহ প্রয়োজন হয়। ইউরোপের একমাত্র উত্তর সাগর তীরবর্তী দেশগুলো যথা ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ডেনমার্ক ও ইংল্যান্ড বাদে বর্তমান বিশ্বের অন্যত্র যে সম্ভাবনার বায়ুকল স্থাপনাগুলো বসানো হয়েছে, সারা বছরব্যাপী তাদের কার্যকারিতা ১০% এর বেশি নয়। সৌর প্যানেলগুলো যে এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থেকে যে পরিমাণ শক্তি আহরণ করে, ঠিক ওই এলাকার তলায় সূর্যরশ্মির অভাবে ঠিক ওই পরিমাণ সবুজ খাদ্য উৎপাদন হয় না। পরমাণু শক্তির স্থাপনা ও পরিচালনা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর বর্জ্য অসম্ভব পরিবেশ দূষণকারী। তাছাড়া এই স্থাপনাগুলো নির্মাণ করতে বিপুল পরিমাণে পরিবেশ দূষণ করা হয়, পরিচালনায় দূষণ তেমন না থাকলেও স্থাপনাগুলো নষ্ট হয়ে গেলে স্থায়ী দূষণ সৃষ্টি করে। 

দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলজুড়ে লবণাক্ততা বাড়ছে। লবণাক্ততা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী হতে পারে?

দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলজুড়ে লবণাক্ততা বাড়ার কারণ উজান থেকে মিঠা জলের সরবরাহকারী নদীগুলোর প্রবাহ রোধ করে অন্যত্র সরিয়ে বা অন্য কাজে ব্যবহার করা। ফলে কেবল উপকূলজুড়েই নয়, বাংলাদেশের মোহনায় ও অগভীর সাগরে ২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ পর্যন্ত মহীসোপানের সাগর প্রতিবেশ নষ্ট হচ্ছে, ফলে আমাদের অজান্তেই বিপুল মৎস্যসম্পদ থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //