প্রতিটি চরিত্রের জন্য দুজন করে অভিনেতা তৈরি করেছি: রামেন্দু মজুমদার

দেশের পথিকৃৎ নাট্যদল ‘থিয়েটার’ মঞ্চে এনেছে নতুন নাটক ‘পোহালে শর্বরী’। গত ১ জুলাই জাতীয় নাট্যশালায় নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এবং পর দিন বিকেল সাড়ে ৫টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আরও তিনটি প্রদর্শনী হয়। এই নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন রামেন্দু মজুমদার। ‘পোহালে শর্বরী’ নাটকের প্রসঙ্গ নিয়ে রামেন্দু মজুমদারের সাথে আলাপ। লিখেছেন হেমন্ত প্রাচ্য। 

মঞ্চে এসেছে ‘পোহালে শর্বরী’। কেমন সাড়া পেয়েছেন?

চারটি প্রদর্শনী করেছি নাটকটির। আমরা বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। হিন্দি ভাষার সাহিত্যিক সুরেন্দ্র বর্মার ‘সুরয কি অন্তিম কিরণ সে সুরয কি পহেলি কিরণ তক’ রচনা থেকে ‘পোহালে শর্বরী’ অনুবাদ করেছেন অংশুমান ভৌমিক। কলকাতা থেকে এসে উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়েছিলেন অংশুমান ভৌমিক। ঢাকার নাট্যাঙ্গনের অনেক বোদ্ধা দর্শকের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকও উপস্থিত হয়েছিলেন। ফলে আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে নানা রকম প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।

এই সময়ে কেন নাটকটি মঞ্চে আনতে চেয়েছেন? 

বিষয়বস্তুর জন্যই আমরা এই নাটকটি মঞ্চে আনতে উৎসাহিত হয়েছি। কারণ নারীর অবস্থান আমরা আমাদের একাধিক নাটকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মহাভারতের ‘মাধবী’ থেকে আমাদের কালের ‘কোকিলারা’ কেবল পুরুষের প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হয়েছে। তেমনি দেড়-দুহাজার বছরের আশেপাশে এক কালখণ্ডে রাজবংশের উত্তরাধিকারের সংকটে নারীকে তার কামনা-বাসনার কোনো মূল্য না দিয়ে নিছক সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করার এক কাহিনি বিধৃত হয়েছে এ নাটকে। তার পাশাপাশি রয়েছে ধর্মের অনুশাসন ও রাজনীতির কূটকৌশল- যার শিকার হয়েছে একইভাবে পুরুষও।

মহড়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এ নাটকের কাজ শুরু করেছিলাম দুই বছরের বেশি সময় আগে; কিন্তু করোনা মহামারির কারণে মাঝে প্রস্তুতি থেমে যায়। অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমরা নাটকটি করেছি। করোনাকালে নাটকটি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো নাটকটি মঞ্চে আর আনা সম্ভব হবে না। কিন্তু পরে পরিস্থিতির উন্নতি হলে আবার আমরা মহড়া শুরু করি এবং নাটকটি মঞ্চে আনতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত।  

নাটকে অভিনয়ের জন্য দুটি টিম তৈরি করেছেন। এর পেছনে উদ্দেশ্য কী?

নাটকটির প্রতিটি চরিত্রের জন্য আমরা দুজন করে অভিনেতা তৈরি করেছি। ফলে একদিকে যেমন দলের বেশি কর্মী কাজের সুযোগ পেয়েছেন, অন্যদিকে তেমনি কারো সমস্যার কারণে যেন প্রদর্শনী থেমে না যায়, সেটিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। উদ্বোধনী দিন বিকেলে একটি টিম অভিনয় করেছে, আবার সন্ধ্যায় আরেকটি টিম অভিনয় করেছে। ফলে নাটকটি নিয়মিত প্রদর্শনী করতে সহজ হবে। 

নাটকের কুশীলবদের সম্পর্কে যদি বলেন...

আমি নাটকটি নির্দেশনা দিলেও সংযুক্ত নির্দেশনায় আছেন ত্রপা মজুমদার। পোশাক পরিকল্পনা করেছেন ফেরদৌসী মজুমদার। এছাড়া মঞ্চ, আলো ও সামগ্রিক পরিকল্পনা করেছেন পলাশ হেন্ড্রি সেন, আবহ সংগীত পরিকল্পনা করেছেন তানভীর আলম সজীব, কোরিওগ্রাফি পরিকল্পনায় ছিলেন স্নাতা শাহরীন, রূপসজ্জায় ছিলেন শুভাশীষ দত্ত তন্ময়। অভিনয় করছেন গুলশান আরা, মাহমুদা আক্তার লিটা, নাজমুন নাহার নাজু, সামিয়া মহসীন, আপন আহসান, নূর-এ- খোদা মাশুক সিদ্দীকি, শেকানুল ইসলাম শাহী, মুশফিকুর রহমান, সামিরুল আহসান, তানভীর হোসেন সামদানী, তানভীন সুইটি, তানজুম আরা পল্লী, রাশেদুর রহমান, রবিন বসাক, ত্রপা মজুমদার, জোয়ারদার সাইফ প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //